স্বীকৃতি পেতে ৩৫ শিশু শিক্ষার্থীর রাজপথে মানববন্ধন – দাবী না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ এবার সদর গার্লস স্কুলের ৩য় শ্রেনীর ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে ভূল থাকার দরুনতায় গত ৩দিন ধরে বরিশাল নগরীজুড়ে তুলকালাম কান্ড ঘটে চলেছে। গত ১জানুয়ারি কম্পিউটারে ডাটা এন্ট্রির ভূলের কারনে বরিশাল সদর গার্লস স্কুলের প্রভাতি শাখার ঘোষনাকৃত ফলাফলে পাশ স্বিকৃতি দেয়া ৩৫ শিক্ষার্থীকে সংশোধিত ফলাফলে ফেল বলে ঘোষনা দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে সঠিক কৃতকার্য ৩৫ শিশু শিক্ষার্থীদের তালিকা। পরীক্ষা কমিটির এ ভূলের কারনে বর্তমানে কাঁদছে ৩৫ শিশু বিপরীতে হাসছে উত্তীর্ন হওয়ায় ৩৫ শিশু শিক্ষার্থী।
ও দিকে ভূলের স্বীকার ক্ষুব্দ ৩৫ শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের নানামুখি কর্মসূচিতে রীতিমত কিংকর্তব্যবিমুঢ় খোদ জেলা প্রশাষক সহ পরীক্ষা কমিটি ৫ সদস্য। অভিভাবক সহ সর্বস্তরের মানুষ বলছেন, প্রশাষনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে দূর্নীতে হয়েছে ৩য় শ্রেনীর ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে। দাবী না মানায় পরে ৩ জানুয়ারি এসব শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা মানববন্ধন করে পুনরায় স্নারক লিপি প্রদান করে গতকাল। ইতিবাচক কোন ফল না পাওয়ায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষনা দেয়া হয়েছে ৩৫ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে।

৩৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ায় পুলিশ পত্রিকা এজেন্সিগুলোতে দিনভর দাড়িয়ে থাকে কাউকে পত্রিকা ক্রয় করতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পত্রিকা ক্রয় করতে যাওয়া পাঠকরা। এর আগে বছরের প্রথম দিনই ভূল স্বীকার করে অনুতপ্ততার সুরে ১জানুয়ারি সন্ধা ৭টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক জরুরী সভা করা হয়। সে সময় দুঃখ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক এস এম আরিফ বলেন, ডাটা এন্ট্রি প্রসেসিং এর ভূলের কারনে এমনটি হয়েছে। ভূলের বিষয়টি বারবার তুলে ধরে প্রত্যেক অভিভাবকদের তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে অনুরোধ জানিয়ে ঘোষনা দিয়েছেন যে কোন অভিভাবক চাইলেই তার সন্তানের পরীক্ষার খাতা দেখতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে তাকে আগামি ৭দিনের মধ্যে ১শ টাকা জমা দিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন করতে হবে। ২জানুয়ারি সংশোধিত ফলাফল ঘোষনা দেয়ার পর কান্নায় ভেঙ্গে পরে অভিভাবকসহ ৩৫ শিশু শিক্ষার্থী। এমনকি তারা অভিভাবকদের সাথে দূর্নীতি বন্ধ কর মর্মে শ্লোগান দিয়ে রাজপথে মিছিল করে বেলা ১২টার দিকে। দূর্নীতি বুঝতে পারা এসব কোমলমতি শিশুদের মিছিলে অংশগ্রহন সর্বস্তরের মানুষের বিবেককে যেন অচমকা থমকে দিয়েছে ক্ষনিকের জন্য। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর ভর্তি পরীক্ষায় বাস্তব দূর্নীতি শীর্ষক স্বারকলিপি জমা দেন অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ফজলুল বাড়ি রনি ও তানজি সহ ৪জন। সে সময় জিলা স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া এক শিশু জেলা প্রশাষককে জানান, তার পাশে ২ শিক্ষিকা ২জন ছাত্রীকে প্রশ্নের সব উত্তর বলে দিয়েছে, অভিভাবকরা জানান, যেহেতু প্রথম ৩৫জনের রেজাল্টে ভূল হয়েছে তবে অন্য সবগুলোতে যে ভূল নেই তার কি গ্যরান্টি আছে। আমরা পুনরায় পরীক্ষা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি।

সংশোধিত ফলাফলে উত্তীর্ন হওয়া এক ছাত্রীর অভিভাবক বগুড়া রোড মিডিয়া জোনের সুমি জানান, একটাতেই যখন ৩৫টা ভূল, আল্লাই জানে বাকীগুলোতে কতগুলো ভূল। কলেজ এভেনিউ এলাকার সংশোধিত ফলাফলে উত্তীর্ন আরেক ছাত্রীর অভিভাবক রাজিব বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাষ ছিল মায়িশা সিদ্দিকা ভাল রেজাল্ট করবে। প্রথমবারের রেজাল্টে তার নাম আসেনি। পরে অনেক উপর লেভেলের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের দ্বারা বারবার ফোন করিয়ে পুনরায় খাতা দেখাতে বাধ্য করানো হয়েছে। আমার মনে হয় একটিতে যেহেতু ৩৫টি ভূল বাকীগুলোতেও ভূল আছে অবশ্যই।