তুরাগ তীরে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের মহাসম্মেলন

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইতিমধ্যে কানায় কানায় ভরে উঠেছে ইজতেমা মাঠ। শুক্রবার সকাল থেকেই মুসল্লিদের ভিড় বাড়ছে। দুপুরে অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তর জুমার জামাত।

ইজতেমায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের স্রোত এখন টঙ্গী মুখো। ট্রেন, বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, ট্যাক্সি, নৌকা ও পায়ে হেঁটে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে যোগ দিচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও মুসল্লিদের আগমন অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক রাষ্ট্রের মুসল্লি এসে পৌঁছেছেন।

রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠের চারদিকে পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে কয়েক স্তরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যুহও গড়ে তোলা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের জন্য মাঠের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিভিন্ন সংস্থার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও সিসি টিভি স্থাপন করা হয়েছে।

ইজতেমা শুরুর দিন থেকেই ইজতেমা মাঠ ও আশে-পাশের এলাকায় হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে। তুরাগ নদীতে  নৌ টহল দল কাজ শুরু করেছে। মাঠে প্রবেশ পথে দেহ তল্লাশি, মাঠের বিভিনণ পয়েন্টে টাওয়ার থেকে র‌্যাব সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়াও মাঠের ভেতরে খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোশাকে বিশেষ টুপি পড়ে মুসল্লিদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীরা অবস্থান করছে।
সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ইজতেমা কর্তৃপক্ষ ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। মাঠে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ এবং মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে পর্যাপ্ত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপনসহ টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে বিছানা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে রোগী স্থানান্তরে থাকবে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স এবং অগ্নিনির্বাপনে থাকছে দমকল বাহনী।

এদিকে ইজতেমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেছেন, “মুসলিম বিশ্বের শান্তি, ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ়করণে বিশ্ব ইজতেমার গুরুত্ব অপরিসীম।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেছেন, “এই মহান ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখবে।”

বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া তার বাণীতে বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের অগণিত ধর্মভীরু মানুষের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন। আগামী রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফা। পরে ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় দফা। ২২ জানুয়ারি দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।