শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ জুয়েলারী ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। আবারো এক ধাপ বেড়েছে স্বর্ণের দাম। সাধারণ ক্রেতারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে অলংকার ক্রয়ে। বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে জুয়েলারী ব্যবসায়ীদের। জানা গেছে, দফায় দফায় সোনার দাম বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়ছে সোনা ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতারা। গত ২৪ জানুয়ারি থেকে আরেক ধাপ বেড়েছে সোনার দাম। বাংলাদেশ জুয়েলারী সমিতির এক সভায় সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়। আর সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে ভরি প্রতি গতকাল থেকে সোনার বর্তমান বাজার দর দাঁড়িয়েছে ২২ ক্যারেট মূল্য ৫৭ হাজার ৭ শত ৩৭ টাকা, ২১ ক্যারেট ৫৫ হাজার ১ শত ৭১ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৪৭ হাজার ২ শত ৯৮ টাকা এবং সনাতনী হিসেবে পরিচিত দেশী সোনা ৩৬ হাজার ১ শত ৫৮ টাকা। তবে রূপার দর এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সোনার দাম বাড়ার সাথে সাথে গহনার মজুরিও বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে প্রতি ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাকে এখন গড়ে মজুরি হিসেবে ৪ হাজার টাকা ও মূল্য সংযোজন কর ২ শতাংশ হারে দিতে হবে। সেই হিসেবে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের গহনা কিনতে হলে ক্রেতাকে ভরি প্রতি ৬২ হাজারেরও বেশি টাকা গুণতে হবে। এদিকে জুয়েলারি ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, জুয়েলারীর মূল ক্রেতারাই হল মহিলা এবং অলংকার ভাঙা গড়ায় জুয়েলারীগুলোতে তাদের পদচারণাই বেশি; আর তাদের পদচারণাই জমজমাট করে তোলে স্বর্ণের দোকানগুলো। বাঙ্গালী নারী এখনও মনে করেন, অলংকার নারীর সোভা বর্ধনে এক মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সেই অলংকারের দাম যদি থাকে আকাশ চুম্বী সেখানে তো নারীরা সোনার অলংকার ব্যবহারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। এটাই তো স্বাভাবিক। এদিকে অলংকারপ্রিয় কতিপয় গৃহবধূর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, আগে যখন সোনার দাম কম ছিল তখন তারা প্রতিনিয়ত গহনা বানাতো এবং ব্যবহার করতো। তারা আরো জানায় যে, ইদানিং বিভিন্ন ভাবে ছিনতাই হয়; যার ফলে তারা সোনার গহনা ব্যবহার করতে ভয় পায়। ফলে একদিকে মূল্য বৃদ্ধি অপরদিকে ছিনতাইয়ের ভয় সব মিলেয়ে সোনার অলংকার ব্যবহারে নানাভাবে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে নারীরা। এদিকে বরিশাল জুয়েলারী সমিতির সদস্য ও নগরীর এক জুয়েলার্সের মালিক ইঞ্জিনিয়ার চান বদন পাল এর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সোনর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জুয়েলারী ব্যবসায়ে মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে এবং গৃহবধূরা সোনার গহনার পরিবর্তে সিটি গোল্ডের গহনা ব্যবহার করছে। সে আরো জানায় যে, চারিদিকে বিভিন্ন ছিনতাই, চুরি, ডাকাতির ফলে মহিলারা সোনার গহনা ব্যবহার করতে ভয় পায় এবং তারা সিটি গোল্ডের অলংকার ব্যবহারেই বেশি উৎসাহ বোধ করছে। এর ফরে বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে জুয়েলারী ব্যবসায়ীদের। একই মত প্রকাশ করেন কাটপট্টির শিশির কর্মকার, সবুজ কর্মকার, দিপক কর্মকারসহ একাধিক স্বর্ণকাররা। স্বর্ণের এই মূল্যবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকবে বলে জুয়েলারী ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে।