শেবাচিমে একদিনে হতাহতের কাহন

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশাল শেবাচিম এক আজব জায়গা। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি এখানে কোন সুস্থ ব্যক্তি দাড়িয়ে থাকলে হতাহত রোগীদের দৃশ্য দেখতে দেখতে এক সময় ব্যক্তি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা শতকরা ৯০ ভাগ। রবিবার একদিনে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বরিশালের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা এবং কৃষি ডিপ্লোমা কলেজে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত সহ গুরুতর আহত হয় ২ জন। আতরা শেবাচিমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

গতকাল রহমতপুর কৃষি ডিপ্লোমা কলেজ ক্যাম্পাসে দুপুর ১২টায় পিকনিকের টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মারামারিতে ৭ম সেমিস্টারের ছাত্র ইমরান (১৮) আহত হয়। এ সময় একই বর্ষের নয়ন, মাহবুব ও ইমরানকেও মারধর করে বলে জানা যায়। আহত ইমরানের পিতা গিয়াস মল্লিক, বরিশাল সাগরদী এলকার মল্লিক বাড়ি তাদের বাসস্থান।

এদিকে পিরোজপুর কাউখালীর জোলাকাঠী গ্রামে তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে গলার পিছনের অর্ধেকাংশ কেটে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মিন্টু মুন্সী (৩৫) চিকিৎসাধীন। আহত সূত্রে, মিন্টুর কাছে সেন্টু জমাদ্দার ইলেকট্রনিক কাজের প্লাস ধার চায়। মিন্টু না দিয়ে বাড়ি চলে গেলে পরের দিন সকালে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে সেন্টু তার গলায় ছুরিকাঘাত করে। আহত মিন্টু মুন্সী মুদি দোকানী, তার পিতা জলিল মুন্সী।

টিনের ঘরের দোতলা থেকে পড়ে আহতাবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে আনকে মৃত্যু ঘটে রাজিব (৯)। গতকার সকাল আনুমানিক ১০টার সময় মাদ্রাসা থেকে এসে খেলতে গিয়ে দোতলা থেকে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। এরপর কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শেবাচিমে পাঠায় এবং ওই দিন বিকাল ৪টায় কর্তব্যরত ইএমও শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে। মৃতের পিতা লাল মিয়া, পেশা মৎস্যজীবী, গ্রাম- বিপিনপুর, লতিফ পিয়নের বাড়ি, মহিপুর, কলাপাড়া। নিহত রাজিব মহিপুর নূরানি মাদ্রাসার ২য় শ্রেণীর ছাত্র বলে জানা যায়।

ওষুধ মনে করে ভুলে কীটনাশক পানে নিহত হয়েছে রহিমা খাতুন (৫৪)। স্বজন সূত্রে জানা যায়, রহিমা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে এ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন। ডাক্তার তাকে সিরাপ দিয়েছে। কিন্তু একই টেবিলে কীটনাশকের বোতল এবং সিরাপ থাকায় বৃদ্ধা ভুলে কীটনাশক পান করে। এরপর দ্রুত তাকে শেবাচিম হাসপাতালে ২৬ তারিখ সন্ধ্যায় ভর্তি করলে ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। নিহতের স্বামী আব্দুস সালাম, আমরাগাছিয়া গ্রাম, মঠবাড়িয়া পিরোজপুর।

অপরদিকে টেম্পু উল্টে মাথায় মারাত্মক জখম হয়ে মৃত হয়েছে মোঃ মনির হোসেন (১৪)। শম্ভুপুর গ্রামের কোরালমারা এলকায় শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন তাকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে আসলে শনিবার রাত ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার পিতার নাম কাঞ্চন আলী। এর বাইরে আরো অনেক হতাহতের বেদনাদায়ক ঘটনা রয়েছে শেবাচিমে।