শিক্ষকের বেত্রঘাতে ঝালকাঠি ও নলছিটির দুই ছাত্রী হাসপাতালে

ঝালকাঠি সংবাদদাতা ॥ ঝালকাঠির রাজাপুর ও নলছিটিতে বৃহস্পতিবার দুটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ৪র্থ ও ৮ম শ্রেনীর দুই শিশু ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। ছাত্রীদ্বয়ের স্বজনরা আহত দুজনকেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছে। গতকাল শুক্রবার হাসপাতালে পরিদর্শনকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় কাঁতরাতে দেখা গেছে।

আহত ছাত্রীর বাবা বেলায়েত হোসেন অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সুমি আক্তার (১৩)কে পড়া মুখস্ত না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক বিমল কৃষ্ণ মন্ডল বেত দিয়ে সুমিকে বেধরক পিটানোর এক পর্যায়ে মাথায় আঘাত লাগলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়।

নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আহত ছাত্রী সুমি আক্তার জানান, পড়া মুখস্ত বলতে না পারায় শিক্ষক বিমল কৃষ্ণ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদেরও বেত্রাঘাত করেছে।

নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আওসাফুল ইসলাম রাসেল বলেন, শিক্ষকের লাঠির পিটানে আঘত পেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন জানান, শিক্ষক বেত দিয়ে মাথায় আঘাতে ছাত্রীটি অচেতন হয়ে পড়ে খবর পেয়ে তিনি সুমিকে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলে, উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অপরদিকে ঝালকাঠির রাজাপুরের গালুয়া গ্রামের হেমায়েত হাওলাদারের মেয়ে ও গালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী আহত হোসনে আরা (১০) জানান, ক্লাশে কোন শিক্ষক না থাকার ফাকে সে টয়লেটে যায়। এ সময় শিক্ষিকা নাজনিন মিলি ইংরেজি ক্লাশ নিতে ক্লাসে আসলে ছাত্রীটিও ক্লাসে প্রবেশ করে। এ সময় শিক্ষিকা বাহিরে যাওয়ার কারন জানতে চাইলে সে টয়লেটের কথা বললেও তিনি বেত দিয়ে বেধরক মারধর করেন।

ছাত্রীটির মা শাহিদা বেগম জানান, শিক্ষিকার বেত্রাঘাতে তার সমস্ত শরীর ফুলে গেছে এবং বুধবার রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার স্বামী ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে বলে বাড়িতে অভিভাবক না থাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে তিনিই তার মেয়েকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আবুল খায়ের রাসেল জানান, ছাত্রীটির সমস্ত শরীরে বেতের আঘাতে ফুলে গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীমা আখতার ঘটনাটি শুনেছেন জানিয়ে বলেন, উক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।