বঙ্গভবন বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দখলের জন্য মহাসমাবেশ নয় -সাদেক হোসেন খোকা

খোন্দকার কাওছার হোসেন ॥ বঙ্গভবন দখল বা নাখালপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কালকেই খালেদা জিয়াকে বসিয়ে দেয়ার জন্য আমরা মহাসমাবেশ করছি না। আমাদের মহাসমাবেশ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের ভোটাধিকার রক্ষা করার জন্য। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

১২ মার্চ ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঢাকা মহানগরের প্রস্তুতি সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যম ও জনগণকে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাসার, শামসুল হুদা, আব্দুল মজিদ, আনোয়ার হোসেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম  এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সাদেক হোসেন খোকা বলেন, কালকেই এ সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসাবো, সে রকম কোনো চিন্তা আমাদের মধ্যে নেই। আমরা চাই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে জনগণ আমাদের দায়িত্ব দিলে আমরা দেশ চালাবো।

নয়াপল্টনেই মহাসমাবেশ
পল্টন ময়দান বা মানিক মিয়া এভিনিউ ব্যবহারের অনুমতি না পাওয়ায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কেই ১২ মার্চ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এ কথা জানিয়ে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, মহাসমাবেশ করার জন্য আমরা পল্টন ময়দান ও মানিক মিয়া এভিনিউ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, অনুমতি দেবে না। এ জন্য আমরা নয়া পল্টনেই মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

মতিঝিল থেকে শাহবাগ মোড়
নবাবপুর থেকে মালিবাগ মোড়
খোকা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ১২ মার্চ মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমা হল থেকে শাহবাগ মোড়, নবাবপুর থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যাবে। মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সুন্দর ও সুচারুরূপে এগিয়ে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ১২ মার্চের মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের সব চেয়ে বড় মহসমাবেশ। সারাদেশ থেকে ওই দিন বিএনপির নেতাকর্মী, সমর্থক, জোটের শরিক, সমমনাদের ঐতিহাসিক সমাবেশ ঘটবে।

সরকার নিয়মিত বাধা দিচ্ছে
সরকার নিয়মিত বাধা দিচ্ছে এ অভিযোগ করে খোকা বলেন, পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় তালিকা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা যাতে কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিতে না পারে সে জন্য ভীতির সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রচার প্রচারণায় ও মাইকিংয়ের অনুমতি এখনো আমরা পাইনি। সরকারের মন্ত্রীরাও উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন, যাতে মহাসমাবেশে লোকজন কম হয়। নেতা কর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশি করে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো আমরা আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাইনি, এটিই বড় বাধা। বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া পাচ্ছি না এটিও একটি বড় বাধা। সুতরাং সরকার শুরু থেকেই নিয়মিত বাধা দিয়ে আসছে। এই মহাসমাবেশে বাধা দেয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রীদের ঘরে থাকার পরামর্শ
যে সব মন্ত্রী এরই মধ্যে জনবিরোধী বক্তৃতা দিয়ে জনগণের বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন, তাদের ১২ মার্চ বাসায় থাকার পরামর্শ দিয়ে খোকা বলেন, একজন শুভাকাক্সক্ষী হিসেবে বলছি, ওইদিন রাস্তায় নামবেন না। রাস্তায় নামলে ক্ষুব্ধ জনগণের রোষের শিকার হতে পারেন। তাই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য ওই দিনটিতে বাসায় থাকুন। এ ধরনের মন্ত্রীদের নামের তালিকা তৈরি করে পুলিশ হেফাজতে নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

সরকারের প্রতি আহ্বান
তিনি এই মহাসমাবেশ নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের প্রতি এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ ও মাইকের মাধ্যমে প্রচার চালানোর অনুমতি দিতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।