আগৈলঝাড়ায় প্রশিকার গাছ বিক্রি এখন সদস্যদের গলার কাটা ॥ ত্রি-মুখি লড়াই

গৌরনদী সংবাদদাতা ॥ নিজ হাতে গাছের চারা রোপন করে দীর্ঘ দিনের পরিচর্যায় বড় করে তুলে বিক্রি করতে পারছেনা বরিশালের আগৈলঝাড়ার বে-সরকারী সংস্থা প্রশিকার আওতাধীন সমবায় সমিতির সদস্যরা। কয়েক দফা চুক্তি নামা পরিবর্তন, সরকারী কর্মকর্তাদের গাভিলতি, সরকার দলীয় নেতাদের খবরদারী ও প্রশিকার বেহাল দশার কারনে গাছ বিক্রি ঝুলে আছে দীর্ঘদিন যাবত।

স্থানীয় ভুক্তভোগীদের সুত্রে জানাগেছে, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র আগৈলঝাড়ায় সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার পয়সারহাট-রামশিল সড়ক এবং সাতলা-বাগধা প্রকল্প পোল্ডার নং-২ এর বিভিন্ন সড়কের ১১০কিঃমিঃ জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করে। ওই সময় সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদের সাথে প্রশিকার একটি যৌথ চুক্তি নামা সম্পাদিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী শতকরা ১০টাকা সরকার, ১০টাকা প্রশিকা ও ৮০টাকা সুফলভোগী সদস্যরা ভোগ করবেন। রোপনের পর থেকে সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত নিজ অর্থ ও শ্রমদিয়ে পরিচর্যা করে আসলেও বর্তমানে খবরদারী করছে বিভিন্ন মহল। অতি সম্প্রতি প্রশিকার অভ্যান্তরিন কোন্দলে কার্যাক্রম ভাটা পড়লে মাঠ পর্যায়ে এর প্রভাব দেখা দেয়। প্রশিকার সদস্যরা গাছ বিক্রির সিন্ধান্ত নিলে ২০০৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড বনায়নকৃত সড়কের গাছ তাদের দাবী করে নুতন চুক্তি সম্পাদনের পায়তারা চালায়। সম্প্রতি বন বিভাগ ওই রাস্তায় কিছু গাছের চারা রোপন করে তাদের কর্তৃত্ব জাহির করতে চাইছে। এতো খবরদারীর কারনে কয়েক হাজার সুফলভোগী সদস্যরা যারা নিজ অর্থ ও শ্রমের বিনিময়ে গাছ বড় করে তুলেন তারা এখন দিশেহারা অসহায় হয়ে পড়েছেন।

অপরদিকে কিছু অসহায় ব্যাক্তি নিজ স্বার্থ হাশিলের জন্য সদস্যদের নাম ভাঙ্গিয়ে গাছ বিক্রির পায়তারা শুরু করেছে। ইতো পুর্বে কয়েকটি রাস্তার গাছ বিক্রি হলেও সুফল ভোগী সদস্যরা তাদের ন্যায্যপ্রাপ্ত মুলধন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যে কারনে সমিতির নেতৃবৃন্দ থেকে সাধারন সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভের স্মৃষ্ঠি হচ্ছে। গত ১১ মে শুক্রবার বিকেলে জোবারপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে রোপিত গাছের জোবাড়পাড়, নাঘিরপাড়, সোমাইরপাড়, বড়মাগরা এলাকার সমন্নয়কারী শশী ভুষন বৈষ্ণব এর সভাপতিত্বে ৬টি সমিতির সভানেত্রীসহ প্রায় দু’শতাধিক সদস্যদের উপস্থিতিতে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন, রুপালী সমিতির সভানেত্রি অঞ্জলি পান্ডে, চন্দ্র শিখা সমিতির সভানেত্রী উর্মিলা হালদার, ঝিনুকমালা সভানেত্রী গৌরী কির্তুনীয়া, ঝুমুর মহিলা সমিতির সভানেত্রী মমতা বৈষ্ণব, সৈনিক পুরুষ সমিতির সভাপতি বাসুদেব পান্ডে, অগ্রতি পুরুষ সমিতির সভাপতি শশধর হালদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন সুধির মিস্ত্রি, গিতা বৈষ্ণব, রঞ্জিত পান্ডে, অনিল রায়, শুশিল বৈষ্ণব, কিরন হালদার প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, আমরা বিধি মোতাবেক চুক্তি করে গাছের চারা রোপন করে দীর্ঘদিনে বড় করেছি। আমাদের নেয্য প্রাপ্তি ও অধিকার আদায়ে যে কোন সরযন্ত্র মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছি। তারা অবিলম্বে এ বিষয়ে সমাধানের জন্য প্রশাষনের উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।