রাক্ষুসী সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু হুমকির মুখে

খোকন আহম্মেদ হীরা, বাবুগঞ্জ থেকে ফিরে ॥ রাক্ষুসী সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে চরম হুমকির মুখে পড়েছে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু। ইতোমধ্যে সেতু রক্ষা বাঁধের একটি অংশ (রিভার সেফটি ব্যারেজ) সন্ধ্যা নদী গ্রাস করে নিয়েছে। এ্যাপ্রোচ সড়কের ব্লকের ঢালাই দেবে গেছে। দ্রুত এ বাঁধ রক্ষা করা না হলে সেতুটি ধ্বসে পড়ার আশংকা করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে শিকারপুর ও দোয়ারিকা এলাকার নদীর ওপর আড়াই’শ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি সেতু নির্মানের কাজ শুরু করা হয়। কুয়েত সরকারের অর্থায়নের এ সেতু দুটি নির্মান করা হয়েছে। ২০০৩ সনের ৮ এপ্রিল সন্ধ্যা নদীর শিকারপুরের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু ও দোয়ারিকায় মেজর জলিল সেতু দুটি উদ্বোধন করা হয়। সেতু উদ্বোধনের কিছুদিন যেতে না যেতেই ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর উত্তরপ্রান্তে চর জেগে ওঠে। কিন্তু দক্ষিনপ্রান্তে শুরু হয় রাক্ষুসী সন্ধ্যা নদীর আক্রমন। নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে সেতু রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ২০ মিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে।

জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ শামস মোকাদ্দেস বলেন, সেতু রক্ষা বাঁধ রক্ষার জন্য একাধিকবার ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ চেয়ে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে। ওই বরাদ্ধ না আসা পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার নেই। তিনি আরো বলেন, শীঘ্রই বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করা না হলে যেকোন মুহুর্তে সেতুটি ভেঙ্গে কিংবা দেবে যেতে পারে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সড়ক পথের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ জানান, সেতু রক্ষায় তাদের কোন বরাদ্ধ নেই। তবে রিভার সেইফটি ব্যারেজ রক্ষা প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে অর্থ চাওয়া হয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল জলিল জানান, শূন্য থেকে ৩৩৫ মিটার রিভার সেইফটি ব্যারেজ প্রকল্পের জন্য অর্থ চেয়ে সওজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পের জন্য তাদের কোন অর্থ বরাদ্ধ না থাকায় তারা কিছুই করতে পারছেন না।

সন্ধ্যা নদীর রাক্ষুসী থাবায় সেতুর রক্ষা বাঁধের ব্লক প্রবল স্রোতের টানে নদীতে চলে গেছে। এছাড়াও সংযোগ সড়কের দু’পাশের কমপক্ষে ২০টি স্থানের ব্লক ঢালাই দেবে গেছে। যে কারনে সড়কের বালি বের হয়ে যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে যেকোন সময় সেতু ও সংযোগ সড়ক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে। স্থানীয়রা জরুরি ভিত্তিতে সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ করে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু রক্ষার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

রাক্ষুসী সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু হুমকির মুখে