পবিত্র কোরআন নিয়ে ওয়েবপোর্টাল উদ্বোধন

এইচ.এম সুমন ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে দেশে জঙ্গিদের লালন-পালন ও ব্যবহার করেছে। তিনি বলেন, ধর্মের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ইসলামের বদনাম করা হয়েছে। সে সময় ইসলামের নামে প্রতিদিন সর্বত্র বোমা হামলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে জঙ্গিবাদ কঠোরহস্তে দমন করেছে বলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। এখন ধর্মীয় নেতারা জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। যারা জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী তাদের কোন ধর্ম নেই, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডই তাদের ধর্ম। গত ১০ আগস্ট ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়ে একটি বিশেষ ওয়েব পোর্টাল ও কোরআনের ডিজিটাল অনুলিপির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখিত কথাগুলো বলেছেন। ওয়েবসাইটটিতে উচ্চারণ, অনুবাদ ও অডিও সুবিধাসহ বাংলা, আরবি ও ইংরেজি ভাষায় কোরআন শরিফ সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে একটি ল্যাপটপে ‘আল কোরআন: ডিজিটাল’ নামের ওয়েব পোর্টালটি এবং আইপ্যাডে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনের উদ্বোধন করেন।

www.quran.gov.bd ঠিকানায় এই পোর্টালে গিয়ে আরবির পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজিতে কোরআনের সব আয়াত পড়া ও শোনা যাবে। এছাড়া ই-বুক আকারেও ডাউনলোড করা যাবে। ‘আল কোরআন: ডিজিটাল’ পাওয়া যাবে ডিভিডিতেও। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সকলে ইসলাম সম্পর্কে জানুক। অন্যরা যাতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে আকৃষ্ট হন সে প্রচেষ্টা আমাদের সকলের থাকা উচিত। নবী (সাঃ) দেখানো পথে জীবন গড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগের মাধ্যমে ইসলামের ‘শান্তির বাণী’ সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছানো সহজ হবে। আমরা ইসলামের শান্তির বাণী মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই। শেখ হাসিনা বলেন, ইসলামের মর্মবাণী উপলব্ধি করে মানুষের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে হবে। আমি নবী করিম (সাঃ) এর দেখানো পথে মানব কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস মাহে রমজানে এ ওয়েবসাইট উদ্বোধন করতে পেরে আমি মহান আল্লাহর কাছে হাজার শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে পবিত্র কোরআন ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী প্রবাসী ও অন্য ধর্মাবলম্বীরা-যারা কোরআন সম্পর্কে জানতে চান-তাদের সুযোগ করে দেয়া হলো। তিনি আরো বলেন, কোরআনের অন্তর্নিহিত অর্থ জানতে এ ওয়েবসাইট কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তিনি এই কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্তদের অভিনন্দন জানান। রাসূল (সাঃ) দু’টি বাণী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাসূল তার বিদায় হজ্বের ভাষণে মুসলমানদের প্রতি কোরআন-সুন্নার পাঠ ও সে অনুযায়ী চলার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, মুসলমানরা যতদিন এ দু’টি বিষয় অনুসরণ করবে ততদিন তারা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হবে না। তিনি বলেন, সুতরাং একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের কোরআন পাঠ এবং এর মর্মার্থ উপলব্ধি করতে হবে। অনুষ্ঠানে কোরআনের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং মাদ্রাসা বোর্ড প্রতিষ্ঠাসহ ইসলামের প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, তার সরকার মানব সম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমে ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। হজ্ব ব্যবস্থাপনায় সকল অনিয়ম দূর করে একটি হজ্ববান্ধব নীতি প্রণয়ন করে এই সেক্টরে শৃংখলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়া এবার রোজার মাসে এক কোটি লোকের মধ্যে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। অনুষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আহমেদ।