কর্মচারী নিয়োগ বন্ধ সাত বছর – বরিশালের চারটি হাসপাতালের তিন’শ পদ শূন্য – চিকিৎসা সেবা ব্যহৃত

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত্ চিকিৎসা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, যক্ষ্মা হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালে গত সাত বছর পর্যন্ত কর্মচারী নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে এসব হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর নয়’শ পদের মধ্যে ৩’শ পদ শূন্য থাকায় মারাত্মক ভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যহৃত হচ্ছে। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে ড্যাব নেতা ও তৎকালীন কলেজ অধ্যক্ষ ডাঃ আজিজ রহিমের সাথে ওইসময়ের সিটি মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ারের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এরপর সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে যায়। পরবর্তীতে কয়েক দফা কর্মচারী নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও তা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও রাজনৈতিক চাপে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।

বিশেষ অনুসন্ধানে জানা গেছে, উল্লেখিত চারটি হাসপাতালে অফিস সহকারী ৯০ জনের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ৬০ জন, আয়া ১৮০ জনের স্থানে রয়েছে ১১৮ জন। ওয়ার্ড বয় ১৮০ জনের বিপরীতে রয়েছে ৯৮ জন, ঝাড়ুদার পদ শূন্য রয়েছে ৬০টি, এমএলএসএস পদ শূন্য রয়েছে ৭০টি, লিফট চালকের পদ শূন্য রয়েছে ১০টি, বার্বুচির পদ শূন্য ৬টি, ইলেকট্রিশিয়ান পদ শূন্য ১০টি, মালির পদ শূন্য ৮টি, গাড়ি চালকের পদ শূন্য রয়েছে ৮টি, কম্পিউটার অপারেটরের শূন্য ৮টি পদসহ সর্বমোট তিন’শটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য রয়েছে। পর্যাপ্ত কর্মচারী না থাকায় শেবাচিম হাসপাতালসহ চারটি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। কর্মচারী সংকটের কারনে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অব্যবস্থাপনা চলছে ও রোগীদের সেবার মান ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। প্রয়োজনের দুই তৃতীয়াংশ কর্মচারী নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এ চারটি হাসপাতাল।
জনবল সংকটের কারণে শুধু রোগী, চিকিৎসক ও হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরই দুর্ভোগ পোহাতে হয় না, কর্মচারীরাও চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। তারা নিয়মিত ছুটি পাওয়া তো দূরের কথা একজন কর্মচারীকে তিন জনের কাজ করতে হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে কর্মচারীর সংখ্যা হ্রাস পেলেও বেড়েছে রোগীর চাপ। ৫’শ শয্যা বিশিষ্ট শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে দৈনিক গড়ে রোগী থাকছে ১২’শ জনের উপরে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বর্তমান জনবল কাঠামো অনুযায়ী শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যে পরিমাণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে তাতে আরো অতিরিক্ত ৩’শ কর্মচারীর পদ তৈরি করা দরকার।