বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক – কীর্তনখোলার মুক্ত বাতাসে সিগ্ধ পরিবেশ, মুগ্ধ হন ভ্রমন পিপাসুরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল নগরীর কোলাহল ও যানজট থেকে কিছু সময়ের জন্য হলেও একটু স্বত্তি পেতে ভ্রমন পিপাসু এবং নগরবাসীর মধ্যে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী ছায়াঘেরা সিগ্ধ পরিবেশের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক। অন্তত একবারের জন্য হলেও স্ব-বান্ধবে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী মুক্ত বাতাসের সিগ্ধ পরিবেশের এ পার্কে। এখানে ঘুরতে আসলে কীর্তনখোলা নদীর রূপ আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে। ইচ্ছে করলে স্পীড বোট অথবা পালতোলা নৌকা কিংবা ট্রলার ভাড়া করে কীর্তনখোলা নদী ভ্রমন করতেও পারবেন। মুক্ত বাতাস, ফুলের বাগান এবং মনোমুগ্ধকর সবুজের সমারোহ মুগ্ধ করে পার্কে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের। এমনিতেই প্রতিদিন সকাল গড়িয়ে দুপুর শেষে বিকেল হতে না হতেই বরিশাল নগরবাসী ও ভ্রমন পিপাসুদের ঢল নামে এ বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক - কীর্তনখোলার মুক্ত বাতাসে সিগ্ধ পরিবেশ, মুগ্ধ হন ভ্রমন পিপাসুরাপার্কে। এ ঢল থাকে রাত অবধি।

বরিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরনীয় করে রাখতে নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী মেরিন ওয়ার্কশপ এলাকায় মনোরম পরিবেশের নবনির্মিত পার্কটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি ‘মুক্তিযোদ্ধা পার্ক’র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ পার্কে ঘুরে বেড়াতে আপনাকে একটি টাকাও কাউকে দিতে হবে না। বরিশাল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের দাবির মুখে সিটি করর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ও মেয়র শওকত হোসেন হিরনের ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরে মেরিন ওয়ার্কশপ এলাকায় ২০১০ সনে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক নির্মানের কাজ শুরু করা হয়। সম্পূর্ণ পরিপাটি করে সাজানো গোছানো এ মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি প্রাথমিক ভাবে নির্মান করতে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের ২১ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে পার্কটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম ঝন্টু বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে দীর্ঘ ৪০ বছর আমাদের দাবি ছিলো এ মুক্তিযোদ্ধা পার্ক নির্মানের জন্য। সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের প্রচেষ্টায় নির্মিত পার্কটি বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্কটি উদ্বোধন করার মধ্যদিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের দাবি পুরন হয়েছে। বরিশাল অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের শক্তি ও সাধারন জনগনের কাছে মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি বিনোদনের নতুন মাত্রা হিসেবে যোগ হয়েছে। নগরীর কাউনিয়া এলাকার আলমগীর কবির সোহাগ বলেন, নগরীর কোলাহল থেকে একটু স্বত্তি পেতে খোলা আকাশের নিচে কীর্তনখোলা নদীর মুক্ত বাতাসে প্রানের উচ্ছাস নেয়ার জন্য আমি স্ব-পরিবারে প্রায়ই এ পার্কে ছুটে আসি। বরিশাল নগরীর আগরপুর রোডস্থ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শুভব্রত দত্ত বলেন, পার্কটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে কীর্তনখোলা নদীর মুক্ত বাতাস। তাই বিকেল বেলা পার্কে ছুটে আসি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।

সূত্রমতে, ৪ হাজার ২’শ বর্গমিটার আয়তনের পার্কটিতে বসার আসন রয়েছে ৬২টি। নগরবাসীর বিনোদনের জন্য সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সব শ্রেনীর মানুষের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে এ পার্কটি। নগরীর মধ্যে বিনামূল্যে বিনোদনের নতুন এ পার্কটি পেয়ে দর্শনার্থীরা আনন্দিত ও উচ্ছাসিত। তাই প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ পার্কে ভ্রমন পিপাসুদের ঢল নামে। বরিশাল সিটি করর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপ-সচিব নিখিল চন্দ্র দাস জানান, নগরীতে বিনোদনের তেমন কোন সুবিধা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে ও সিটি মেয়রের ঐক্লান্তিক প্রচেষ্ঠায় মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি নির্মান করেছে সিটি কর্পোরেশন। পার্কটি নির্মানের মাধ্যমে বরিশালবাসীর বিনোদনের অভাব কিছুটা হলেও দূর হয়েছে। তাছাড়া বিনোদনের জন্য এ অঞ্চলে নতুন একটি স্থায়ী ঠিকানা যোগ হয়েছে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শওকত হোসেন হিরন বলেন, নগরবাসীর বাড়তি বিনোদনের কথা চিন্তা করেই মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে মুক্তিযোদ্ধা পার্কটি নির্মান করা হয়েছে। এখানে সর্বস্তরের মানুষ অবাধে ভ্রমন করতে পারেন। এ পার্ক তৈরির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তুলে ধরা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরনীয় করে রাখার এক নতুন মাত্রা উন্মচিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত এ পার্কটিকে পর্যায়ক্রমে বরিশালের মধ্যে একমাত্র আধুনিক পার্ক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।