গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা চালিয়ে ভাংচুর ॥ অবরুদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালের গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি ও রোগীদের সাথে দূর্ব্যবহারের অভিযোগে জরুরি ভিত্তিতে তার অপসারনের দাবিতে শুক্রবার সকালে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদকে গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা চালিয়ে ভাংচুর ॥ অবরুদ্ধএক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী পৌরসভার পশ্চিম শাওড়া মহল্লার সাইদুল ইসলামের অন্তঃসত্বা স্ত্রী সুপ্তি বেগমকে নিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে আসেন। তারা রোগীকে নিয়ে কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদের শরনাপন্ন হন। এ সময় ডাঃ সামাদ রোগীকে কেন্দ্রে সেবা না দিয়ে পাশ্ববর্তী আনোয়ারা প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠায়। সেখানে ওই রোগীর সিজার করা হয়। সুপ্তির স্বামী সাইদুল রহমান অভিযোগ করেন, শুক্রবার সকাল ১০টায় রোগীকে আনার জন্য ডাঃ সামাদের কাছে গেলে তিনি ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে রোগীকে রিলিজ নিতে চাইলে সামাদ তার সাথে দূর্ব্যবহার করেন। পরে সাইদুল তার নিকট আত্মীয় পৌর ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক মামুন মিয়াকে বিষয়টি  জানায়। সকাল দশটার দিকে মামুন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করেন। এতে ডাঃ সামাদ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও (মামুন মিয়াকে) গালিগালাজ করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। মুহুর্তের মধ্যে এ খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ প্রায় ৫/৬’শ এলাকাবাসী জড়ো হয়ে জুতা, ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধরা ডাঃ সামাদের অপসারনের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে তাকে ধাওয়া করে। এসময় সামাদ আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে তার বাসভবনে ঢুকে কলাপসিকল গেট আটকিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাকে বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে বাসভবনের জানালা, দরজা ব্যাপক ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে সাড়ে ১১টায় গৌরনদী থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

উত্তর বিজয়পুর গ্রামের নান্নু ভূইয়া (৬০), মফসের বেপারী (৫৮), খোকন সরদার (৫০)সহ অনেকেই অভিযোগ করেন, ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে আগত রোগীদের সেবা না দিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠান এবং রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। জাহাঙ্গীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডাঃ সামাদ রোগীদের কেন্দ্রে চিকিৎসা না দিয়ে দিনের অধিকাংশ সময় বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন।

অভিযোগের ব্যাপারে ডাঃ সামাদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোন সদূত্তর দিতে পারেননি। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম হামলা ও ভাংচুরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ ডাঃ সামাদকে অবরুদ্ধর হাত থেকে মুক্ত করেছে।