ভূখানাঙ্গা মানুষের পাশে থেকে কাজ করে কিবরিয়া এখন গণমানুষের প্রিয়মূখ

ঝালকাঠি সংবাদদাতা ॥ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিঞা আহমেদ কিবরিয়া এখন গনমানুষের কিবরিয়া। রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি কোন মানুষের শ্রেণী ভেদাভেদ না করে ভূখানাঙ্গা মানুষসহ সমাজের প্রতিটি মানুষের মাঝে আলোকবর্তিকা হয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এ নেতা। সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর সময়ে ঝালকাঠি জেলা মিঞা আহমেদ কিবরিয়াবিএনপি ও অংগ সংগঠনের সুবিধাবঞ্চিত ত্যাগি নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী সহিংসতা থেকে রক্ষা করা, হামলা-মামলা, জুলুম-অত্যাচার আর নীপিড়ন থেকে রক্ষায় অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন এ নেতা। দেশ রক্ষা ও দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বিএনপির কেন্দ্রিয়ভাবে গৃহিত সকল আন্দোলন সংগ্রাম একযোগে ঝালকাঠিতেও পালন করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে ভারতের তাঁবেদারী, ট্রানজিট, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ প্রতিহত, বর্ডারে বাংলাদেশীদের হত্যা, বিদ্যুৎসহ দ্রব্য মুল্যের উর্ধ্বগতি, শেয়ার ও ব্যাংক কেলেংকারী, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, সীমাহীন দূর্নীতি, দলীয়করণ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবীসহ দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবী আদায়ের কর্মসূচী কেন্দ্রিয় নির্দেশ মোতাবেক কিবরিয়ার নেতৃত্বে ঝালকাঠি জেলা বিএনপি পালন করে আসছে।

জাতীয় দিবস, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ৭ই নভেম্বরের জাতীয় বিল্পব ও সংহতি দিবস, খালেদা জিয়ার কারা মুক্তি দিবস, জিয়াউর রহমানের জন্ম ও শাহাদৎ বার্ষিকীসহ বিভিন্ন কর্মসূচী প্রতিবছর ঝালকাঠি জেলা বিএনপি পালন করে কিবরিয়ার আর্থিক ও নৈতিক সমর্থনে। কিবরিয়ার নেতৃত্বে দলের সুবিধাবঞ্চিত ত্যাগি নেতা-কর্মীদের প্রাণপন চেষ্টায় দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ঝালকাঠি-নলছিটিসহ জেলা বিএনপির দূর্দিনের কান্ডারী জননন্দিত নেতা মিঞা আহমেদ কিবরিয়া। দীর্ঘ চার বছর ধরে নিজ ব্যবসায়ীক ও পারিবারিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি দলীয় নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের খবরদারীও করছেন নিয়মিত। দলীয় কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও ভূখানাঙ্গাদের মাঝে। দলীয় কর্মকান্ড ও সাধারণ মানুষের সেবা দিতে ইতিমধ্যে নিজগ্রাম নলছিটির মোল্লারহাটের হদুয়ায় একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। প্রতি মাসে ২/৪ বার এলাকায় এসে তাদের সাথে মিলিত হয়ে তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তাই তিনি এলাকার সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের মনের মাঝে নিজেকে স্থান করে নিয়েছেন।

সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে জানা যায়, বিএনপি সরকার আমলে দলের স্থানীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে মধ্যস্তর ও তৃনমূলের যারা সুবিধা ভোগ করেছে দুহাত ভরে, ক্ষমতা হারানোর পরে তারা কেউ খবর রাখেনি স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের। স্বল্প সময়ের রাজনৈতিক জীবনে কিবরিয়ার রাজনৈতিক চিন্তা চেতনা ও কলাকৌশলে দক্ষিণাঞ্চলের দলীয় শীর্ষ নেতা ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ও নীতি নির্ধারনী রাজনীতিকদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে দলের আদর্শ ও অনুপ্রেরনায় ঝালকাঠি-নলছিটিসহ জেলা বিএনপির রাজনৈতিক মাঠ সরব রেখে চলছেন। জেল-জুলুম, হামলা-মামলার ভয় না করে তার প্রিয় নেত্রী দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করতে কেন্দ্রের সকল কর্মসূচী, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচী পালনে মোটেই পিঁছু হটেননি তিনি।

বিএনপি দলীয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে ঝালকাঠি জেলার অসংখ্য রাজনীতিক রয়েছেন অথচ তারা ঝালকাঠিতে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ধার ধারেন না এবং খবর পর্যন্ত রাখেন না তৃনমুল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের। কিন্তু কেন্দ্রে বসে কলকাঠি নাড়েন।

ঝালকাঠি জেলা বিএনপির একটি সূত্রে জানা যায়, বিএনপি সরকারের ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভূটো ক্ষমতা হারানোর পর আর নিজ এলাকার কোন খোঁজ খবর রাখেন নাই। খোঁজ খবর নেননি দলীয় নেতা কর্মীদেরও। ফলে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ইলেন ভূট্টো। ওয়ান ইলেভেনের সময়ও নেতা কর্মীদের খোঁজ খবরতো রাখেনই নাই বরং ক্ষমতার লোভে সংস্কারপন্থি সারিতে গিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষা ও ক্ষমতাবান হওয়ার স্বপ্নে মগ্ন ছিলেন।

সূত্রটি আরো জানান, ওয়ান ইলেভেনের পূর্বে এলাকা ছাড়া এবং নেতা কর্মীদের খোঁজ-খবর না রাখায় সম্পূর্ণই মাইনাস হয়ে পড়েন সাবেক এমপি ইলেন। ওয়ান ইনেভেনের সময় চ্যালেঞ্জের মুখে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ঝালকাঠি-২ আসন ধরে রাখতে দলের হাইকমান্ড ইলেন ভূটোকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনীত করেন। ফলে সৌভাগ্যক্রমে মনোনয়ন নামের টিকেটটি পেয়ে যায় ইলেন। দলীয় ক্ষুব্দ নেতা কর্মীরা মুখ ফিরিয়ে নেন ইলেনের দিক থেকে। দলের ও স্থানীয় বিএনপির তালিকায় আসনটি বিএনপির হলেও বিশাল ভোটের ব্যবধানে তৎকালীন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আলহাজ আমির হোসেন আমুর কাছে পরাজয় বরণ করেন ইলেন ভূট্টো। আসনটি চলে যায় আওয়ামীলীগের হাতে।

স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ, ক্ষমতায় থাকাকালে পার্সেন্টিজ নিয়ে ঠিকাদারী ও প্রকল্পের কাজ দিয়েছেন অন্যমহলে। কোন পৃষ্ঠাপোষকতা করেন নাই দলীয় নেতা কর্মীদের। তার দায়িত্বহীনতার কারনেই আসনটি হাত ছাড়া হয়ে যায়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে গিয়ে রাতের আঁধারে এলাকা ছাড়েন ইলেন। এরপর কোন খবর রাখেননি দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ফলে দলবিমূখ ও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এ নেত্রী। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন, দলের টিকেট আবার কুড়িয়ে পাওয়ার লোভে দলীয় হাই কমান্ডের চোখে পড়ার জন্য সম্প্রতি এলাকায় গিয়েছিলেন ইলেন। কিন্তু দলীয় তীব্র রোষানলের মূখে নলছিটির নিজ এলাকার দপদপিয়ায় ক্ষুব্দ নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন তিনি। গাড়ী ভাংচুরসহ জনরোষের মুখে পরে এলাকা ত্যাগ করেন ইলেন। চার বছরের মধ্যে মাত্র একবার এলাকায় যান ইলেন, তাও আবার নামধারী জাতীয় পার্টির কতিপয় নেতা-কর্মী সাথে নিয়ে। এতে ক্ষুব্দ হয়ে এ ঘটনা ঘটায় নেতাকর্মীরা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি রাজনৈতিক সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। ক্ষমতায় থাকাকালীন মাঠ পর্যায়ে চষে বেরানো তৃনমূল নেতা কর্মীরা ক্ষমতা হারালে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এলাকা ছেড়ে দেশ বিদেশে পালিয়ে বেড়ায়। বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকার প্রশ্নে ওয়ান ইলেভেন ইস্যু তৈরি হয়। নির্বাচনে হেরে যাওয়া ঝালকাঠি জেলা বিএনপির রাজনীতিতে এক শূন্যতা দেখা দেয়। ঠিক তখনই জেলা বিএনপির কান্ডারী হন কিবরিয়া। কিন্তু আস্তে আস্তে জেলা বিএনপির মধ্যে দেখা দেয় বিভিন্ন গ্রুপিং ও কোন্দল। তাতেও নিরাশ হননি কিবরিয়া। বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা বিএনপি ও অংগ সংগঠনগুলোর ঝালকাঠি ও নলছিটি উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সবকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে তার নেতৃত্বে।

স্থানীয় বিএনপি সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির নেতৃত্বদানকারী নেতারা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তৃনমুল নেতা কর্মীদের বিপদে ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় এবং কোন খোঁজ খবর পর্যন্ত না নেয়ায় ক্ষোভের হতাশায় বিভক্ত হয়ে যাওয়া বিএনপি নেতা কর্মীদের ঐক্য করতে সভা সমাবেশ ও জনসংযোগ করে যাচ্ছেন কিবরিয়া। ঝালকাঠি জেলা বিএনপি তার নেতৃত্বে বিভিন্ন কর্মসূচী সম্মিলিতভাবে পালন করা হচ্ছে। আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দূর্গখ্যাত ঝালকাঠির সংসদীয় আসন দু’টি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রাণপন মাঠে কাজ করে যাচ্ছে মিঞা আহমেদ কিবরিয়া। কিবরিয়া তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে ঝালকাঠি-নলছিটিসহ জেলার গ্রামগুলোর বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ, কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা-মাতাদের আর্থিক সহায়তা, মেধাবী অথচ গরীব শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি, বিধবাদের আর্থিক সহায়তা ও বয়ষ্কদের বয়ষ্কভাতা দেয়ার মাধ্যমে তাদের জীবন চলার পথ সুগম করেছেন। ফলে এলাকাবাসির কাছে কিবরিয়া এখন একজন নন্দিত মানুষে পরিনত হয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অভিজ্ঞ মহলের ধারনা রাজনীতিকরাই যে রাজনীতি বা রাজনৈতিক কলাকৌশল বোঝেন তা নয়, সাধারণ মানুষরাও রাজনৈতিক কলাকৌশল বোঝেন। এক্ষেত্রে ভূখানাঙ্গারাও পিঁছিয়ে নেই মোটেও।

ঝালকাঠি জেলা বিএনপির তৃনমূল নেতা কর্মীরা ও সুশীল সমাজ চাচ্ছেন আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান করে এমন একজন জনপ্রিয় ত্যাগী মানুষকে ঝালকাঠি-নলছিটি নিয়ে গঠিত ঝালকাঠি-২ আসনে মনোনয়ন নামের টিকেটটি দিবেন যিনি ভূখানাঙ্গা মানুষের হয়ে কাজ করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে কিবরিয়া বলেন, সাধারন মানুষের পাশে থেকে কাজ করার মাঝে আনন্দ আছে। আমি দলের মনোনয়ন পাবার আশায় কাজ করিনা। দলের চেয়ারপার্সনের নির্দেশে আমি এখানকার মানুষের পক্ষে কাজ করি। তিনি সমাবেশকে সফল করার জন্য ঝালকাঠি-নলছিটির দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

এ সর্ম্পকিত আরো খবর : ভূখানাঙ্গা মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন কিবরিয়া