বরিশাল সংবাদদাতা ॥ বনভোজন নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্নাসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শামীম হাওলাদারসহ ৫৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের রামকাঠী এলাকায় ২৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। উপজেলা চেয়ারম্যান মুন্নার মাথায় গুলি লেগেছে। হামলায় অপর আহতরা হলেন- শহীদুল জমাদ্দার, নাসির মৃধা ও বশির মৃধা। তাদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের সবার অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রামকাঠী প্রামে গত ১২ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান মুন্না স্থানীয় আ’লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে বনভোজন করেন। এর কিছুদিন পর স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরাও ২৫ জানুয়ারি শুক্রবার বনভোজনের আয়োজন করেন। কিন্তু বিএনপি’র বনভোজনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম হাওলাদারকে নিমন্ত্রণ না করতে কঠোর নির্দেশ দেয় আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মুন্না। তবে ইউপি চেয়ারম্যানের কথা না শুনে ভাইস চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বনভোজনের আয়োজন করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সে অনুযায়ী সকল প্রস্তুতিও নেয়া হয়। বনভোজন স্থল রামকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্যান্ডেলও স্থাপন করা হয়। কিন্তু নির্দেশ না মানায় চেয়ারম্যান মুন্নার নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা ২৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে প্যান্ডেল ভেঙে ফেলেন। বনভোজনের প্যান্ডেল ভাংচুর ও হামলার খবর পেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান শামীম হাওলাদার তাঁর লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে ইউপি চেয়ারম্যান মুন্নাসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া সংঘর্ষে দুইপক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান মুন্না গুলিবিদ্ধ হলে স্থানীয় আ’লীগ নেতাকর্মীরা রামকাঠী গ্রামের খালেক হাওলাদার ও রহমান হাওলাদারসহ বিএনপির চার নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালান। শায়েস্তাবাদ ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ইব্রাহিম জানান, সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ২৫/৩০ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে। দুইপক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশত আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে রাত দেড়টা পর্যন্ত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম শামিম হাওলাদারসহ ৫৩ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম । তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।