বরিশাল সংবাদদাতা ॥ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাড়ে ৩ কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিতে তোরজোড় শুরু করেছে যুবলীগের সেই বহুল আলোচিত-সমালোচিত টেন্ডারবাজ বহিস্কৃত নেতা। অপর এক ব্যক্তির লাইসেন্সের অনুকূলে সে এই দরপত্র জমা দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে আগের মতোই আধুনিক নৌ-বন্দর টার্মিনাল সহ কীর্তনখোলার তীরবর্তী সকল ঘাট তার দখলে রাখার পাঁয়তারা শুরু করেছেন।
বাকেরগঞ্জের এক সময়ে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও বর্তমান শাসক দলের ব্যানারে টেন্ডারবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে বহি®কৃত ঐ যুবলীগ নেতা রবিবার বিআইডব্লিউটিএ’র আহবানকৃত দরপত্রের লটারী চলাকালে ঠিকাদারদের উপর হামলা চালিয়ে পে-অর্ডার সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সাধারণ ঠিকাদাররা বহি®কৃত যুবলীগ নেতার তান্ডবে বিআইডব্লিউটিএ’র দপ্তর থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন। ঠিকাদাররা ঐ টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করার দাবী জানিয়েছেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, গত ২৩ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত টেন্ডারে ২১টি দরপত্র বিক্রি হলেও শেষ পর্যন্ত জমা পড়ে ১১টি। এর মধ্যে পে-অর্ডার জমা না দেয়ায় টেন্ডারবক্স খোলার দিনই ৫টি দরপত্র বাতিল হয়ে যায়।
বাকী ৬টির মধ্যে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির লাইসেন্স ব্যবহার করে ১০ ভাগ কম দরে দরপত্র জমা দেন যুবলীগ থেকে বহি®কৃত সেই আলোচিত টেন্ডারবাজ। কিন্তু টেন্ডারের শর্তাবলীতে আড়াই কোটি টাকার একক এবং ৫ বছরে সাড়ে ১২ কোটি টাকার কাজের অভিজ্ঞতা সনদ, মেশিনারীজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফের তালিকাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঐ নেতা শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট এবং আয়কর সনদ ছাড়া কোন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেননি বলে বিআইডব্লিউটিএ’র দরপত্র কমিটির কর্মকর্তারা জানান। বাকী থাকা ৫টি দরপত্রের মধ্যে মাহফুজ খান সাড়ে ১১ ভাগ কম দরে দরপত্র জমা দিলেও দরপত্রের বিভিন্ন জায়গায় রেট কোড পূরন করেননি। বিজলী কনস্ট্রাকশন সাড়ে ৬ ভাগ কম দরে এবং মোদাচ্ছের আলী মল্লিক ও শ্রাবনী এন্টার প্রাইজ একই দরে দরপত্র জমা দেন।
টেন্ডারে অংশগ্রহকারী ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, নগরীর প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা টেন্ডার কমিটির সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করে অবৈধ ভাবে পূর্বের ন্যায় ঘাট দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাহী প্রকৌশলীও ঠিকাদারদের এ কাজটি ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন তার উপর নানান মহলের চাপ রয়েছে। যদিও কোন চাপ নেই এবং তিনি কাউকে টেন্ডার ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেননি দাবী করে বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক এজেডএম শাহনেওয়াজ কবির। তিনি জানান, দরপত্র মূল্যায়নের জন্য তাকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি বসে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর অবশিষ্ট থাকা দরপত্র গুলো চুলছেড়া বিশ্লেষন করবে। কোনো অনিয়ম হবে না।