বরিশালে গুলিবিদ্ধ ইউপি চেয়ারম্যান সহ আওয়ামী লীগের ৮৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ॥ গোলাগুলির ৫দিন পর বিএনপি’র মামলা

বরিশাল সংবাদদাতা ॥ গুলিবিদ্ধ সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুজ্জামান মুন্নাসহ ৮৪ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৫দিন পর মামলা দায়ের করেছে বিএনপি নেতা আব্দুল হাই। রবিবার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আব্দুল হাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে আদালতের বিচারক মোঃ জাহিদুল কবির অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ডিবি’র ওসিকে নির্দেশ দেন। গতকাল সোমবার আদালতের কাগজপত্র হাতে পেলেও তা আদালতে ফেরত পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডিবি’র ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানান আদালত থেকে যে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাতে ডিবি’র ওসি সদরকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশে ডিবি’র ওসি সদর বলতে কোনো পদ না থাকায় তা ফেরত পাঠানো হয়েছে। ডিবি মামলাটি তদন্ত করলে এসি ডিবি বরাবর অথবা সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিলে সেই থানার ওসিকে তদন্তের আদেশ দেয়া হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। ডিবি পুলিশ আদালতের সাথে যোগাযোগ করার পর আদেশ রদবদল করে দেয়ার কথা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। অপরদিকে মামলা দায়ের করে আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার পর বাদি আব্দুল হাইকে অপহরন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী এডভোকেট এনায়েত হোসেন বাচ্চু।

বিএনপি নেতা আব্দুল হাই আদালতে অভিযোগ করেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা গত ২৫ জানুয়ারি রামকাঠী স্কুল মাঠে বনভোজনের আয়োজন করেন। সে লক্ষ্যে স্কুল মাঠে প্যান্ডেল, মঞ্চ ও আলোকসজ্জার কাজ চলছিলো। এরইমধ্যে ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আসামিরা সেখানে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আসামিরা তাদের মারধর করে প্রায় এক লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বিএনপি নেতা আব্দুল হাই’র দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না, তার বড় ভাই মনিরুজ্জামান মনির, শাহে আলমসহ ৩৪ জনকে। এ মামলায় আরো ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী রয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গতঃ বনভোজন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গত ২৪ জানুয়ারী রাতে শায়েস্তাবাদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দু’গ্র“পের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্নাসহ চারজন গুলিবিদ্ধ ও কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়। রাতেই গোলাগুলির ঘটনায় জড়িত সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শামীম সহ ৫৪ জনকে কাউনিয়া থানা পুলিশ অস্ত্র ও গুলি সহ গ্রেফতার করে। পরদিন আহত চেয়ারম্যান মুন্নার ভাই মনিরুজ্জামান মনির বাদী হয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শামীম সহ বিএনপি’র ৬৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। বিএনপি’র পক্ষ থেকে ৫ দিন পর আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়।