ফের বেপরোয়া দক্ষিণাঞ্চলের নৌরুটে পাচারকারী সিন্ডিকেট

আহমেদ জালাল, বরিশাল ॥ বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নৌরুটে পাচারকারী সিন্ডিকেট চক্র ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাঝখানে কিছুদিন নিরব থাকার পর সংঘবদ্ধ চক্রটি বিভিন্ন পন্য পাচারে মরিয়া। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একের পর এক পাচারকৃত মালামালসহ ধরা পড়ছে চক্রের সদস্যরা। শুক্রবার রাতে নৌপথের বিশাল একটি চালান আটক করেছে কোস্টগার্ড। একই সঙ্গে আটক করা হয় চক্রের ১১ সদস্য। এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানায় মামলাও দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বলছে,আটককৃতরা শনিবার থানার গারদে রয়েছে। এদেরকে রোববার আদালতে প্রেরন করা হবে। অপরদিকে,এই সিন্ডিকেটের হোতারা থাকছে সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পাড় পেয়ে যাচ্ছে অদৃশ্য শক্তিতে। এরা প্রতাপশালী। নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ে। আটক হচ্ছে সহযোগীরা। আবার কখনো ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় হোতারা পাড় পেয়ে যায়।

বরগুনা জেলার পাথরঘাটার চরদুয়ানীর অদূরে বঙ্গোপসাগরে টেকদিয়া নিদ্রা সকিনার কাছে শুক্রবার রাতে ভারতীয় পন্যবোঝাই আল মদিনা নামের একটি ট্রলারসহ চোরা কারবারিদের আটক করে কোস্টগার্ড। আটককৃত চোরাকারবারিদের বাড়ী বরিশাল,পিরোজপুর,লক্ষ্মিপুর ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। মালামালের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমান শাড়ি. থ্রী পিস ও শাল।  পন্যোর মূল্য প্রায় আট কোটি টাকা। পাথরঘাটা কোস্টগার্ড স্টেশনের লেফটেন্যান্ট কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. ইশতিয়াক আহম্মেদ টাইমস ওয়ার্ল্ড কে জানিয়েছেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে ভারতীয় পন্য বোঝাই ট্রলারটিকে আটক করে কোষ্টগার্ড। এ ঘটনায় পাথরঘাটা থানায় মামলা হয়েছে। সূত্র জানায়,আসামীদের মধ্যে রয়েছে মঠবাড়িয়ার মধ্য তুষখালী এলাকার নুরুল হক, জানখালীর ইউনুছ খান, একই এলাকার এমাদুল মোল্লা, দক্ষিন তুষখালীর শামসুল হক হাওলাদার, লক্ষিপুরের রামঘতি থানার চরআবদাল গ্রামের শেখ ফরিদ, একই গ্রামের কাদির চকিদার, চট্্রগ্রামের কর্নফুলি থানার বদরপুরা গ্রামের আলাউদ্দিন, চট্রগ্রামের রাউজান থানার মাবুদ, নোয়াখালীর সুবর্নচর থানার উত্তর চর গ্রামের জামাল, লক্ষিপুরের রামঘতি থানার চরআবজাল গ্রামের মো: সোলায়মান পাটোয়ারী,ভোলার চরফ্যাশনের চর নুরুল আমিন এলাকার আব্দুল করিম। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার জানখালী গ্রামের মাঝি হারুন, পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নজরুল ইসলাম,বাকেরগঞ্জ মধ্য নলুয়া গ্রামের জয়দেব দাস,ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের মধ্য রসুলপুরের হাজী আনোয়ার, পাথারঘাটার তাফাল বাড়িয়ার জামাল গোলদার পালিয়ে গেছে।

এদিকে, পাচার সিন্ডিকেট বলেশ্বর ও বিষখালী নদী পথে সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় থ্রিপিস,প্যান্ট পিস, বোরকার কাপড়,শাড়ি,মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পন্য চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। পাচার করার রুট হিসাবে চক্রটি সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরেরর আলোর কোল,ভান্ডারদিয়া ও বিষখালী নদী ব্যবহার করছে। চক্রটির সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা তৈরি করেছে পাথরঘাটা পুলিশ। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর গোপন খবরের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড বলেশ্বর নদীতে অভিযান চালিয়ে এফবি জয় নামক ট্রলার আটক করে। সেখান থেকে জব্দ করা হয় ভারতীয় প্রায় ৮ কোটি টাকার পন্য। অভিযান পরিচালনাকালে ট্রলারের লোকজন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় একই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারায়  অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।