সুস্থ্য থাকতে কে না চায় ? সুস্থ্য থাকার জন্য নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেয়াটা একান্ত জরুরী। আর এ জন্য মাঝে মাঝেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত মেডিকেল চেক আপের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় রোগ না হলে বেশির ভাগ মানুষই ডাক্তারের কাছে যান না, নিছক অর্থ নষ্ট হবে মনে করে। আবার অনেকে আলসেমী করেও চেক আপ করান না, আর অনেকেতো সময়ই পান না ব্যস্ততার জন্য। তবে যে কারণেই চেক আপ করা বিরত থাকুন না কেন, যারা চেক আপ করাতে পারছেন না, হোক সেটা সময়ের অভাবে বা অন্য কোনো কারণে, তারা খুব সহজেই কোনো কোনো রোগের ব্যাপারে নিজের নিজের চেক আপ নিজেই করতে পারেন। এ কাজটি করা যায় আপনার নখ দেখে। কি, অবাক হচ্ছেন ? বন্ধুরা, অবাক হওয়ার কিছু নেই। মানুষের শরীরের বিভিন্ন রোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার হাত বা পায়ের নখের আচরণ বিভিন্ন রকম আচরন করে থাকে, অর্থাৎ, বিভিন্ন রোগের প্রভাব নখেও পড়ে যা দেখে আপনি ঐ রোগ সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন।
ফ্যাকাশে নখঃ কারো কারো নখের অগ্রভাগ মাত্রাতিরিক্ত ফ্যাকাশে হয়ে থাকে।
এ ধরনের নখ শরীরের নিম্নলিখিত সমস্যাগুলোর লক্ষনগুলো প্রকাশ করে থাকে।
* রক্তাল্পতা
* কনজাস্টিভ হার্ট ফেইল্যুর
* যকৃত বা লিভারের রোগ
* পুষ্টিহীনতা
সাদা রঙের নখঃ কোনো কোনো ক্ষেত্রে নখ সাদা রঙ ধারণ করতে পারে।
এ ধরনের নখ লিভারের সমস্যা যেমন, হেপাটাইটিস বা জন্ডিস এর ইঙ্গিত করে থাকে।
হলুদ নখঃ হলুদ নখ বিশেষ কিছু সমস্যার ইংগিত করে থাকে।
এ ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে ছত্রাকের আক্রমন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ ক্ষত্রে নখ হ্লুদ হওয়ার পাশাপাশি নখের পুরুত্ব হ্রাস পায়। তবে কদাচিত ক্ষেত্রে হলুদ নখ আরো বিশেষ সমস্যা যেমন থাইরয়েড বা ফুসফুসের রোগ, ডায়াবেটিস বা সোরিয়াসিস এর লক্ষ হিসেবে প্রকাশ পায়।
নীল নখঃ কোনো কোনো ক্ষেত্রে নখে নীল রংয়ের ছোপ দেখা যায়।
এর মাধ্যমে বুঝতে হবে আপনার শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছে না। আর অক্সিজের স্বল্পতা হয়ে থাকে ফুসফুসের রোগ, নিউমোনিয়া, অথবা হার্টের কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
খাদ যুক্ত নখঃ কোনো কোনো সময় আপনার নখে খাদ দেখে থাকতে পারেন।
এটা হল সোরিয়াসিস বা জ্বালাময়ী বাতের পূর্ব লক্ষণ। এক্ষেত্রে নখের নিচের চামড়া লালচে বাদামী রঙ ধারণ করে। মাঝে মাঝে নখ বিবর্ণও হয়।
ভংগুর বা ফাটল ধরা নখঃ মাঝে নখে ফাটল ধরে বা ভংগুর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যার কারণের এমন হতে পারে। ফাটল ধরা, ভাঙ্গা হলুদাভ নখ ছত্রাকের আক্রম্রনের ইংগিত করে।
স্ফীত কিনারা বিশিষ্ট নখঃ কোনো কোনো নখের কিনারা মাঝে মাঝে স্ফীত ও লালচে হতে পারে।
টিস্যুগত সমস্যার জন্য এটি হয়। এক্ষেত্রে উক্ত স্থানে জ্বালাপোড়াও হতে পারে।
নখের নিচে গাঢ় রেখাঃ এ ধরনের অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক অবস্থার প্রকাশ করে থাকে। তাই এ ক্ষেত্রে জরুরী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
এ ধরনের নখ মেলানোমা নামের মারাত্বক স্কিন ক্যান্সারের লক্ষন প্রকাশ করে।
চিবানো-বিধ্বস্ত নখঃ নখ কামড়ানো অনেকের একটি সাধারণ পুরোনো স্বভাব।
তবে মাঝে মাঝে এটি স্থায়ী দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে।
নখের হঠার আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেক লক্ষন প্রকাশ অনেক ক্ষেত্রে এটি আট-দশটা সাধারণ ঘটনার মত একটি ঘটনাও হতে পারে। তবে কোনো কারণে সন্দেহ হলে সেক্ষেত্রে, চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত। ধন্যবাদ সবাইকে।