নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে গতকাল শনিবার দুপুরে এক প্রসুতির মায়ের মৃত্যু হয়েছে। প্রসুতি সোনিয়া আক্তার (২৬) চিকিৎসকের অবহেলায় মৃৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতাল ক্যাস্পাসে বিক্ষোভ করে নিহতর স্বজনরা। এ সময় গোটা হাসপাতাল এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
নিহতের পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মাগুড়া-মাদারীপুর গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়িতে স্বাভাবিক ভাবে কন্যা সন্তান প্রসব করেন। সোনিয়া আক্তারের ভাই মিজানুর রহমান তালুকদার জানান, শুক্রবার গভীর রাতে তার বোন অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রাত ১২টার সময় গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির সময় জুরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক কাজী আবুল ফজল ফেরদাউস সোনিয়াকে ভর্তি করে বাসায় চলে যান। রাতে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বার বার চিকিৎসক কাজী আবুল ফজল ফেরদাউসকে খবর দেয়া হয়। তিনি সারা রাতেও রোগীর কাছে আসেননি। কোন উপায় অন্ত না দেখে মিজান গতকাল সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসক নিহার রঞ্জন বৈদ্যর কাছে বহুবার ধর্না দেয়। পরবর্তীতে ডা. নিহার রঞ্জন রোগেীকে না দেখেই ইসিজি করার জন্য লিখে দেয়। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুনীল চন্দ্র দাস মুমুর্ষ অবস্থায় রোগীকে দেখে দু’টি ইঞ্জেকশন লিখে দেন। সোনিয়ার স্বজনরা ইঞ্জেকশন ক্রয়ের জন্য ওষধের দোকানে যান। এর মধ্যে সোনিয়া মারা যায়। এ খবর মুহর্তের মধ্যে নিহতের আত্বীয়-স্বজনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ভিড় করেন। ডা.আবুল ফজল ফেরদাউসের বিচার ও অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুনীল চন্দ্র দাসকে তার কক্ষে অবরুব্ধ করে রাখেন। এ সময় গোটা হাসপাতাল এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ২টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। নিহতের স্বামী সুমন মিয়া জানান, অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। চিকিৎসক কাজী আবুল ফজল ফেরদাউস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রোগী ভর্তি করে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছ্ রোগীর হার্টে সমস্যা থাকায় তার মৃত্যু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, গুরুতর অসুস্থ্য সোনিয়াকে এ খানে ভর্তি না করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে প্রেরন করা উচিত ছিল। তদন্তপূর্বক অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।