মৌসুম শেষ হলেও বরিশালে ক্রিকেট আসরের দেখা নেই

বিশ্বকাপের আমেজে গোটা দেশ মেতে থাকলেও মাঠে অলস সময় কাটাচ্ছে এখানকার সহস্রাধিক ঝানু ক্রিকেটার। দেখতে দেখতে প্রিমিয়ার ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন এমন কি সেকেন্ড ডিভিশন লীগের সময়ও পেড়িয়ে গেছে। তবু কোন আসরের আয়োজন করেনি ক্রিড়া সংস্থা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাহিদার  তুলনায় বড় বাজেট অনুমোদন না দেয়ায় লীগ পর্যায়ের কোন খেলা শুরু করতে পারছে না। জেলা ক্রিড়া সংস্থা এক্ষেত্রে বিশ্বকাপের দোহাই দিলেও  ক্রিকেটাররা দাবি করেছে, এ বছর কোন ক্রিকেট আসর না হওয়ায় তারা দক্ষতা ও আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। শীত আসলেই দেশে ক্রিকেট খেলার ধুম পড়ে যায়। বরিশালে প্রতি বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগ থেকে শুরু করে  ক্রিকেটের সব ধরনের আসর অক্টোবর/নভেম্বরে শুরু হয়। অধিকাংশ লীগ পর্যায়ের বড় আসর ফেব্র“য়ারীর শেষে সমাপ্ত হয়ে যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ ৪ মাস ক্রিকেটারদের মাঝে যেন উৎসব নেমে আসে। স্টেডিয়াম পাড়া সরব হয়ে ওঠে। অথচ চলতি মৌসুমের কোন ক্রিকেট আসর এখন পর্যন্ত শুরু না করায় হতাশ হয়ে পড়েছে ক্রিকেটাররা। অধিকাংশ  ক্রিকেটারের মতে, শীত মৌসুম শেষে হলেও খেলা শুরু না করায় তারা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

জেলা ক্রিড়া সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বর্ষে (২০১০/১১) প্রিমিয়ার ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের খেলা পরিচালনার জন্য ক্রিকেট উপ-পরিষদ প্রায় ২ লাখ টাকার একটি খসড়া বাজেট তৈরি করে জেলা ক্রিড়া সংস্থার সভাপতি (জেলা প্রশাসক) কে অবহিত করে। কিন্তু এতো বড় বাজেট অনুমোদন না দেয়ায় ঝুলে যায় সব খেলা। কারন হিসেবে জানা গেছে, এর পূর্বের বছর (২০০৯/১০) বাজেট বরাদ্ধ দেয়া হয় মাত্র দেড় লাখ। ক্রিড়া সংস্থার অফিস সহকারী মোঃ মামুন জানান, প্রতি বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগের স্পন্সার এবি ব্যাংক হলেও এবছর তারা অনিহা প্রকাশ করেছে। অপর দিকে গত মৌসুমের বিভিন্ন ক্রিকেট আসরের খেলা পরিচালনা করার জন্য আম্পেয়ারদের পারিশ্রমিক বাবদ প্রায় ৮২ লাখ টাকা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। এসব কারনে এবছর আর ক্রিকেটের কোন লীগ পর্যায়ের খেলা শুরু করার বিষয় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর এর মাশুল গুনতে হচ্ছে এ অঞ্চলের ক্রিকেটারদের। জানা গেছে, প্রতিবছর প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে ১০ টি টিম করা হয়। প্রতি টিমে ১৬ জন করে ক্রিকেটার অংশগ্রহন করলে মোট খেলোয়াড় হচ্ছে ১৬০ জন। ফার্স্ট ডিভিশন লীগে ১০ টি টিমের প্রতি টিমে ১৬ জন করে খেলোয়ার হলে মোট খেলোয়ার ১৬০ জন। সেকেন্ড ডিভিশন লীগের ৪০ টি টিমের প্রতিটিতে ১৬ জন করে হলে মোট খেলোয়ার হয় ৬৪০ জন। সে হিসেবে বরিশাল জেলার মোট ৯৬০ নামীদামী খেলোয়াড় এবছর কেবল অনুশীলন করেই যাচ্ছে। খেলা না থাকায় আরও শতাধিক ক্রিকেটার অলস সময় কাটাচ্ছে।

সরেজমিনে বরিশাল আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেছে, খেলোয়াড়রা গল্প গুজোব করে সময় কাটাচ্ছে। ফার্স্ট ডিভিশন লীগের ক্রিকেটার সাজ্জাদ হোনে চৌধুরী সচি বলেন, খেলা না হওয়ায় আমরা  দক্ষতা ও আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তিনি বলেন, বিশ্বকাপ দেশে চলছে অথচ বরিশালে খেলা নেই এমনটা ভাবতেই পাড়ছি না। বরিশাল আম্পেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদ মোর্শেদ শামিম বলেন, শীত মৌসুম শেষ হলেও কেন খেলার আয়োজন করা হয়নি তা ক্রিকেট উপ-পরিষদ ভাল বলতে পারবে। তিনি বলেন গরম এসে গেছে। বর্ষাও শুরু হতে পারে। এমন অবস্থায় ক্রিকেটের কোন বড় আসড় শুরু করা যাবে কিনা সেক্ষেত্রে আমি সন্দিহান। এব্যাপারে বরিশাল জেলা ক্রিকেট উপ-পরিষদের সাধারন সম্পাদক গোলাম সরোয়ার রাজিব বলেন, বিশ্বকাপের কারনে খেলা শুরু করা হয়নি। তবে শিঘ্রই সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।