ছাত্রলীগ ও শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটির আচরন রহস্যজনক

ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রধানের দায়িত্ব নিতে নারাজ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের সিনিয়র শিক্ষকরা। তবে কি তদন্তে ছাত্রলীগের অপকর্মের ঝুলি বেরিয়ে আসার শঙ্কা করছেন মেডিকেল কলেজ শিক্ষকরা। নাকি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রলীগ ক্যাডারদের ভয়ে শঙ্কিত শিক্ষকরা? ও দিকে ছাত্র শিবিরের দাবী কলেজ শিক্ষকদেরকে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা হুমকি দেয়ায় তারা এ ঘটনা তদন্ত করতে নারাজ। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা তদন্তে স্বাপেক্ষে সত্য ঘটনা প্রকাশ করবে এটা বুঝতে পেরে ছাত্রলীগ ক্যডাররা শিক্ষকদেরকে তদন্ত কমিটি থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। ফলশ্র“তিতে তদন্ত কমিটির প্রধান নির্বাচিত করা নিয়ে বিপাকে পরেছেন কলেজ অধ্যক্ষ। ঘটনার তদন্তকারি শিক্ষকদের মধ্যে ডাঃ সাব্বির আহম্মেদ তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠি পাওয়ার ১দিন পর তার পারিবারিক সমস্যার অজুহাত তুলে দ্বায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন।

একইভাবে কমিটির অপর দুই সদস্য নেতা ডাঃ এ ডি আই মুজাহিদ উদ্দিন ও ভাস্কর সাহাও বিভিন্ন অজুহাত তুলে এ দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন মৌখিকভাবে। এ ছাড়া শিবিরের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে শনিবার থেকে কলেজে ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। যার সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ নেতা সাঈক আহম্মেদ জ্যাকি। বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা কামাল, আনিছুর রহামান, রবিন্দ্র নার্থ দাস রবি, সুচক প্রমুখ। বক্তারা কালেজ ছাত্রলীগের নের্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রশিবিরের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার দাবী জানিয়ে বলেন, ছাত্রশিবির পরিচয়ধারী কোন ছাত্রকে কলেজে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। তারা বলেন, ১৯৭১ সালের এ দেশের স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত ছিল ছাত্রশিবিরের নের্তা-কর্মী ও সমার্থকরা। এ দিকে ছাত্রলীগ নেতাদের এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদও করছেন ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মিরা। কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জনিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ বছর পর ১৯৭৭ সালে ছাত্র শিবির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। অতএব স্বাধীনতার ইতিহাস না জেনে কোন মন্তব্য করা ঠিকনা।

জানা গেছে, গত সোমবারের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বায়োকেমিস্ট বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সাব্বির আহাম্মেদ খানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেছিল। ডাঃ সাব্বির আহম্মেদ তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠি পাওয়ার সাথে সাথে তার পারিবারিক সমস্যার অজুহাত তুলে দ্বায়িত্বে অপারগতার কথা স্বীকার করেন। একইভাবে কমিটির অপর দুই সদস্য নেতা ডাঃ এ ডি আই মুজাহিদ উদ্দিন ও ভাস্কর সাহাও বিভিন্ন অজুহাত তুলে এ দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন মৌখিকভাবে। তাই কলেজ অধ্যাক্ষ ডাঃ আবু তাহের শনিবার জরুরী ভাবে একাডেমি কাউন্সেলের সভার আহবান জানান।

শনিবার বেলা ১২ টায় অনুষ্ঠিত একাডেমি কাউন্সেলের সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। এ সময় তদন্ত কমিটির জন্য নতুন সভাপতির প্রস্তাব রাখতে বলা হয় উপস্থিত সকল শিক্ষকদের। কিন্তু কোন সিনিয়র শিক্ষকই রহস্যজনক কারনে এ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নিতে নারাজ। একাডেমি কাউন্সেলের সভায় দীর্ঘক্ষণ এ নিয়ে আলাপ আলোচনা হলেও কোন সুরাহা বা নতুন কোন কমিটি গঠন করতে পারেননি অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, যেহেতু ডাঃ সাব্বির আহম্মেদ এখন পর্যন্ত লিখিতভাবে কোন আবেদন করেন নি, সেহেতু তিনিই এখনো কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তিনি আবেদনের মাধ্যমে অপারগতা প্রকাশ করলে নিয়ম অনুযায়ী কাউকে না কাউকে তদন্ত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হবে।  সব মিলিয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান নির্বাচিত করা নিয়ে বিপাকে পরেছেন কলেজ অধ্যক্ষ ডাঃ আবু তাহের।