স্কুল মাঠে খেলা করে মাছ!

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ ইচ্ছা থাকলেও টিফিনে কিংবা ক্লাসের ফাঁকে একটু হাঁটাহাঁটি কিংবা বান্ধবীদের সাথে খেলাধুলা করতে পারি না। বর্ষা মৌসুমে আমাদের স্কুলে শরীরচর্চা হয়না। কারন এসময় আমাদের স্কুল মাঠে থাকে হাঁটু পানি। কথাগুলো বলছিল বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার মেয়রের নিজ ওয়ার্ড (৮নং) গেরাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী ঈশিতা আক্তার।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে এ স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুল মাঠে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে না পারলেও অসংখ্য মাছ খেলা করছে। মাঠের মাঝখানে দেখা গেছে স্থানীয়রা মাছ ধরার জন্য জাল পেতে রেখেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাছিমা বেগম জানান, স্কুল মাঠটি নিচু স্থান হওয়ায় প্রতিবর্ষা মৌসুমে এ মাঠে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। আর এ পানিতে খেলা করে পাশ্ববর্তী ডোবা ও পুকুর থেকে আসা অসংখ্য মাছ। ওই মাছ ধরার জন্য স্থানীয়রা মাঠের মধ্যে জাল পেতে রেখেছে।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন কর জানান, শুধু মাঠের সমস্যাই নয়, এ বিদ্যালয়ের মুল ভবনে দেখা দিয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় ফাঁটল। ইতিপূর্বে স্কুলের ছাদের ক্ষয়িষ্ণু ভেঙ্গে পরে পাঠদানরত শিক্ষকসহ দশজন শিক্ষার্থীরা গুরুতর আহত হয়েছিলো। তিনি আরো বলেন, এখানে একটি সাইক্লোন সেন্টার নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে একাধিকবার মাপঝোপ করা হলেও দীর্ঘদিনেও এ সেন্টারের নির্মান কাজ শুরু হয়নি। ফলে ক্লাশ রুম সংকটের কারনে একটি কক্ষে দু’টি শ্রেনীরও পাঠদান করানো হচ্ছে। মাঠ ভরাটের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন সুফল মেলেনি। তিনি আরো জানান, বর্তমানে এ স্কুলে প্রায় সাড়ে চার’শ শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের ন্যূনতম খেলাধুলার কোন সুযোগ নেই। পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়ে স্কুলের খেলার মাঠে পানি জমে থাকে। এ পানি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত রোগে। ফলে এ মৌসুমে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায়না।

খেলার মাঠ পানিতে ডুবে থাকায় স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য গোলাম হেলাল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ স্কুলের খেলার মাঠে কমপক্ষে দু’লাখ টাকার মাটি ভরাট করলেই মাঠ পানিমুক্ত করা সম্ভব হবে। এ জন্য তিনি জরুরি ভিত্তিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্কুল মাঠে খেলা করে মাছ!