বরিশাল সংবাদদাতা ॥ পর পর দু’বার সময় বাড়ানোর পরও প্রচার প্রচারনা ও বিনোদনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এবার বরিশাল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা জমে ওঠেনি। মেলায় পণ্যের মূল্য হ্রাস ও বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেয়া হলেও ক্রেতা-দর্শনার্থীরা আকৃষ্ট হচ্ছেন না। এটি এখন নামসর্বস্ব আন্তর্জাতিক মেলায় পরিণত হয়েছে। কারণ প্রচার প্রচারনা নাথাকা, বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকাসহ দেশের বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেয়নি। গত ১০ ডিসেম্বর বিআইডাব্লিউটিআইয়ের মেরিন ওয়ার্কসপ (মুক্তিযোদ্ধা পার্ক) চত্বরে মেলার উদ্বোধন করা হয়। ১০ জানুয়ারি মাসব্যাপী এ মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অংশগ্রহণকারীদের লোকসানের কথা বিবেচনা করে প্রথমে আগামী ৮ ফেব্র“য়ারি ও সর্বষেশ আগামী ২২ ফেব্র“য়ারী পর্যন্ত মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলার বেশির ভাগ স্টলই ফাঁকা। বড় কোনো প্রতিষ্ঠান অংশ না নেয়ায় প্যাভিলিয়নও স্থাপিত হয়নি। ক্রেতা আকর্ষণের জন্য অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টলে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু স্টলে পণ্য ক্রয়ে ২৫-৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য হ্রাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু স্টলে একটি পণ্য কিনলে আরেকটি ফ্রি অফার দেয়া হচ্ছে। এত কিছুর পরও মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, মেলার প্রায় দেড় মাস পার হয়েছে। এরপরও ক্রেতা-দর্শীনার্থীর আনাগোনা খুবই কম। হাতেগোনা কিছুসংখ্যক দর্শনার্থী এলেও তারা ঘুরে চলে যান, পণ্য কেনেন না। তিনি জানান, প্রতিদিন যে পরিমাণ টাকার পণ্য বিক্রি হয় তা দিয়ে স্টল ভাড়া পরিশোধ করাও সম্ভব হয় না। মেলা নিয়ে তেমন একটা প্রচার-প্রচারণা না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।মেলায় আসা দর্শনার্থী কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘মেলায় যেসব পণ্য উঠেছে, দামের তুলনায় সেগুলোর মান ভালো নয়। এছাড়া এখানে যে দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে, বাজারেও একই দামে সে পণ্য কেনা যায়। তাই মেলা থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের মাঝে তেমন একটা আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে না। এছাড়া মেলায় গতানুগতিক পণ্য নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন তেমন কিছুই ওঠেনি। নামে আন্তর্জাতিক মেলা হলেও এখানে দেশের বাইরের কোনো পণ্য পাওয়া যায় না। এসব কারণে মেলা ক্রেতা-দর্শনার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে।
মেলার আয়োজক কমিটির সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের চেয়ে এ বছর মেলায় স্টল বেশি রাখা হয়েছে। পুরো মেলার মাঠে ১৮০টি স্টল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণে বিনোদনের জন্য মোটরসাইকেল রেস, শিশুদের জন্য নাগরদোলা, কৃত্রিম রেলগাড়ি, টাটটুঘোড়া স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এত আয়োজনের পরও এ মেলা ক্রেতা আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। এবিষয়ে আলাপকালে বরিশাল চেম্বার অব কমার্সেও সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, প্রচার প্রচারনা প্রথম দিকে হয়েছে নগরীতে মাইকিং এর মাধ্যমে তার পরও এবার দর্শনার্থী একটু কম। প্রতি বছর মেলায় সার্কাস, যাত্রাপালা, নাচ গানের আয়োজন থাকে কিন্তু এবারের মেলা একেবারেই বেতিক্রম করা হয়েছিল । কারন হিসেবে তিনি বলেন প্রতিবার মেলায় সংঘর্ষসহ উসৃংখল যুবকদের হামলায় ক্ষয়ক্ষতি হয় । এর থেকে এড়াতেই এবার ঐসব বাত দেয়া হয়েছে।