নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে দেশ মাতৃকার টানে ২৩ বছর বয়সে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিল্লগ্রামের বাসিন্দা মোঃ হারুন মৃধা।
নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সে রণাঙ্গনে বীরত্বের ভূমিকা পালন করেন। ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ সময়ে পাক সেনাদের হাতে আটক হতে হয় তাকে। পাকিদের অমানুষিক নির্যাতনের পরেও ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান হারুন। তার সহকর্মী যোদ্ধাদের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হলেও দীর্ঘদিনে রহস্যজনক কারনে তার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়নি। অসংখ্যবার তিনি নাম অর্ন্তভূক্ত করার জন্য জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নেতৃবৃন্দদের কাছে ধর্ণা দিয়েও হয়েছেন ব্যর্থ। ফলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই শনিবার দুপুরে দাফন করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন মৃধাকে (৬৫)। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কালিয়া দমন গুহ জানান, তিনি ও হারুন মৃধা একই সাথে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। মাহিলাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের বাসায় বসে হারুন মৃধা (৬৫) ইন্তেকাল করেন। তিনি স্ত্রী, ১ পুত্র, ২ কন্যা রেখে গেছেন। শনিবার সকালে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদার জানাজার আসায় পরিবারের লোকজন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নেতৃবৃন্দদের কাছে ধর্ণা দেন। তারা জানিয়েছেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্বেও তালিকাভুক্ত না হওয়ার কারনে হারুন মৃধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। পরবর্তীতে ওইদিন দুপুরে মরহুমের জানাজা শেষে দক্ষিণ বিল্লগ্রামের পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়। তিনি (চেয়ারম্যান পিকলু) ক্ষোভের সাথে বলেন, কতিপয় স্বাধীনতা বিরোধীরা মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তি হয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়ালেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এখনো রয়েছেন অবহেলিত। তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকা ভুক্তির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।