কেন্দ্র ফি’র নামে ২২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

দেলোয়ার সেরনিয়াবাত ॥ এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ফি আদয়ের নামে বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার ১১টি কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সাড়ে চার হাজার পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ২২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অভিভাবকসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জেনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাহ মোঃ আলমগীর। তারমতে শিক্ষার্থী ও তাদের  বাবা-মাকে জিম্মি করে শিক্ষকেরা যা করেছেন তা স্রেফ চাঁদাবাজি। ভবিষ্যতে প্রবেশপত্রের জন্য পরীক্ষার্থীদের যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে না হয়, সে জন্য পরীক্ষার রেজাল্টের ন্যায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রবেশপত্র প্রদানের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা জানান, গত ৩ মাস আগে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরনের সময় শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই সময় তারা কেন্দ্র ফি ও কর্তন করে নেয়। তারপরেও কলেজগুলো নতুন করে প্রবেশপত্র প্রদানকালে কেন্দ্র্র ফি’র নামে সকল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে ৫ থেকে ৭’শ টাকা করে আদায় করে নিয়েছে। সূত্রমতে, আগৈলঝাড়ার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজ, বাগধা স্কুল এন্ড কলেজ, ছয়গ্রাম স্কুল এন্ড কলেজ, মোহনকাঠী স্কুল এন্ড কলেজ ও বাহাদুরপুর নিশিকান্ত গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের সর্বমোট ১ হাজার ৩১৯জন পরীক্ষার্থী চলতি এইচএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। গৌরনদীর মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ, নিজাম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ, বাটাজোর রাবেয়া ফজলে করিম মহিলা কলেজ, বাথী ডিগ্রি কলেজ, গৌরনদী গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজ, আল-আমিন টেকনিক্যাল কলেজে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ১২৪ জন। সূত্রে আরো জানা গেছে, কেন্দ্র ফি’র নাম করে প্রবেশপত্র প্রদানের সময় গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার ৪ হাজার ৪৪৩ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রায় ২২ লক্ষাধিক টাকা আদায় করে নিয়েছে।

কেন্দ্র সচিব ও শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্র ফি নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ৩২৫ টাকা নিয়েছি, অন্যান্য কলেজগুলোতে আরো বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ফিরোজ ফোরকান আহমেদ ও বার্থী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী আব্দুস সালাম প্রবেশত্র প্রদানকালে কেন্দ্র ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ ৫’শ টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাহ মোঃ আলমগীর জানান, ৩ মাস আগে ফরম পুরনের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেন্দ্র ফি নেয়া হয়েছে। ওই ফি বোর্ডের একাউন্টেও জমা হয়েছে। শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের মা-বাবাকে জিম্মি করে প্রবেশপত্র প্রদানের সময় কেন্দ্র ফি আদায়ের নামে স্রেফ চাঁদাবাজি করেছে। তিনি আরো জানান, এ ধরনের হয়রানি বন্ধের চেষ্টা চলছে। প্রবেশপত্রের জন্য পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে না হয়, সে জন্য পরীক্ষার রেজাল্টের ন্যায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রবেশপত্র প্রদানের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।