বাকেরগঞ্জে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শাস্তি টিসি!

দানিসুর রহমান লিমন, বাকেরগঞ্জ ॥ বাকেরগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া জেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রী (১৩)কে একই স্কুলের দুই বখাটে ছাত্র ধর্ষন করেছে বলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষণের ৮ দিন অতিবাহিত হলেও বিচার পায়নি ধর্ষিতার পরিবার। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ২ ছাত্রকে স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কমিটি।

সূত্রমতে, প্রতিদিনের ন্যায় গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলার পূর্বে সকাল ৮টার সময় একই স্কুলের দশম শ্রেনীর ছাত্র শাহজাহানের বখাটে ছেলে শাহেন শাহ্ ও বিদ্যালয়ের নাইট গার্ড মোস্তফা কাজীর ছেলে রাজু কাজী ২জনে মিলে নবম শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে দশম শ্রেণীর একটি কক্ষে মুখ চেপে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলেও ক্ষমতাসীনদের চাপ এবং ধর্ষক শাহেন শাহর পিতা শাহজাহানের টাকার গরমে আইনের সাহায্য নিতে পারছে না ধর্ষিতার পিতা অসহায় শামীম হাওলাদার। মিমাংসার কথা বলে স্কুলের ম্যানিজিং কমিটি ও প্রভাবশালীরা কালক্ষেপন করতে থাকে। অবশেষে গত ২এপ্রিল স্কুল কমিটির সদস্যরা সালিশ-বৈঠক বসায়। এতে অভিযুক্ত ধর্ষক দুই ছাত্র শাহেন শাহ্ ও রাজুকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেয়া হয়। তবে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এলাকার প্রভাবশালীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক অভিভাবক জানায়, কৃষি কাজ করে তার মেয়েকে পড়াশুনা করতে ওই স্কুলে পাঠাচ্ছেন। কিন্তু এ ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকলে তার মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না বলে জানান।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, মেয়েটির বাবা ইভটিজিংয়ের লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। শুধুমাত্র ইভটিজিংয়ের জন্য ওই দু’ছাত্রকে টিসি দেয়া হয়েছে কেনো জানতে চাইলে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। ধর্ষিতার বাবা শামীম হাওলাদার জানান, লোকদেখানো বিচার করে অভিযুক্তদের বহিস্কার করা হয়েছে। তবে তিনি এতে সন্তুষ্ট নন। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হারুন-অর- রশিদ সিকদার জানান, তিনিও এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন। তবে অভিযুক্ত দুই ছাত্রকে টিসি দেওয়া হয়েছে বলে জানান। বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম পিপিএম জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তিনি অভিযুক্তদের এবং ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টার জন্য অভিভাবকদের বিরুদ্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।