গৌরনদীতে যৌতুকের দাবিতে দু’গৃহবধূকে নির্যাতন

এনায়েত হোসেন মুন্না, স্টাফ রিপোর্টার ॥  যৌতুকের দাবিতে পাষন্ড স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের অমানুষিক নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে বরিশালের গৌরনদী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দু’গৃহবধূ। এ ঘটনায় পৃথক ভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে মামলা উত্তোলনের জন্য আসামি ও তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ওই দু’গৃহবধূকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালের বেডে শষ্যাশয়ী উপজেলার দোনারকান্দি গ্রামের মৃত ভূবন মোহন দাসের কন্যা কেজি স্কুলের শিক্ষিকা শ্যামলা দাস অভিযোগ করেন, গত ১১ বছর পূর্বে একই গ্রামের মৃত সুশীল সরকারের পুত্র রমেন সরকারের সাথে সামাজিক ভাবে তার বিয়ে হয়। ওইসময় বর পক্ষের দাবিকৃত যৌতুক হিসেবে নগদ দুই লক্ষ টাকা, মটরসাইকেল, স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল পরিশোধ করা হয়। এরইমধ্যে তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করেন। বিয়ের পর তার (শ্যামলার) বড় বোনের কাছ থেকে রমেন সরকার ধার ও জমি ক্রয়ের কথা বলে বিভিন্ন সময় আরো ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো শ্যামলা দাসের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে আরো দুই লক্ষ টাকা যৌতুক আনার জন্য স্বামী রমেন সরকার ও শ্বাশুড়ি রেপতি সরকার তিন দফায় শ্যামলাকে শারিরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় শ্যামলা দাস বাদি হয়ে বরিশাল আদালতে মামলা দায়ের করায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত রবিবার রাতে শ্যামলার বাবার বাড়িতে এসে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।

অপরদিকে উপজেলার দক্ষিণ বিজয়পুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী ঘরামীর কন্যা রেহানা বেগম অভিযোগ করেন, গত দেড় বছর পূর্বে সামাজিক ভাবে তার বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট গ্রামের মজিদ বেপারীর পুত্র শহিদ বেপারীর সাথে। বিয়ের সময় বর পক্ষের দাবি অনুযায়ী যৌতুক হিসেবে নগদ ৭০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল পরিশোধ করা হয়। পরবর্তীতে বিদেশ যাওয়ার জন্য শহিদ বেপারী তার শ্বশুড় বাড়ি থেকে আরো ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি যৌতুকলোভী শহিদ। সর্বশেষ পূর্ণরায় দুই লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্বামী শহিদ বেপারী, শ্বশুড় মজিদ বেপারী ও শ্বাশুড়ি শাহিনুর বেগম গৃহবধূ রেহানাকে অমানুষিক নির্যাতন করে তার বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। অসহায় দু’গৃহবধূ যৌতুক বিহীন স্বামীর সংসারে ফিরে সুখের সংসার গড়তে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।