আমাকে বাঁশ দিলে আমিও বাঁশ দিমু, ক্ষতি কি!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রগকাটা শিবির বাহিনী প্রতিপক্ষের একজনকে হত্যা করল, বেশ ক’জনকে রগ কেটে অচল বানাল। এরও ক’দিন আগে অন্য এক দলের আধিপত্যবাদের বলি হয়ে ঢাবিতে প্রাণ হারাল নিরীহ একজন (জনৈক নেত্রীর ভাষায় মস্তিস্ক বিকৃত ছাড়া বাংলাদেশে কেউ নিরপেক্ষ তথা নিরীহ হতে পারেনা)। কথিত ছাত্র রাজনীতিতে এ ধরনের লাশ ও রক্ত বিনিময় আমাদের শিক্ষাংগনগুলোর জন্যে নতুন কোন বিনিময় নয়, এমনটা প্রায় ৩৯ বছর ধরেই চলে আসছে, আমাগী ১৩৯ বছর ধরে তা চলতে থাকবে তাতে বিশেষ কেউ সন্দেহ করছেনা।

অন্য কোন জেলার কথা বলতে পারবনা, তবে মেঘনা পাড়ের আমাদের জেলায় টুকু শব্দটার আলাদা একটা অর্থ আছে, যার সার্বজনীন অনুবাদ হতে পারে ছোট অথবা বামুন জাতীয় কিছু। এই টুকু নামের কেউ যখন ক্ষমতার সিড়ি ডিঙিয়ে মন্ত্রী পর্য্যন্ত বনে যায় ভাবতেও ভাল লাগে রং ও লিংগের মত নামের ডিসক্রিমিনেশন হতেও বেরিয়ে আসতে পারছি আমরা। গেল সরকার আমলেও টুকু নামের একজন মন্ত্রী ছিলেন, যার বিরুদ্বে আর যাই থাকুক চুরির অভিযোগটা একেবারে ’টুকু’ ছিলনা। বলা হয় ইকবাল হোসেন টুকু নামের ঐ মন্ত্রী বিদ্যুতের খাম্বা হতে শুরু করে তার, নাট-বলটু সবই ভক্ষন করেছেন। বর্তমান সরকারও টুকু নামের মন্ত্রী উপহার দিয়ে জাতিকে ধন্য করেছেন। চুরির খবর বলতে পারবনা, তবে এই টুকুর গলার আওয়াজটা যে বামুন জাতীয় আওয়াজ নয় তা সবাই স্বীকার করবেন। রাজশাহী বিবিদ্যালয়ের ঘটনার পর উনি বিশাল গলায় ঘোষনা দিলেন ছাত্র শিবির নামের রগকাটা বাহিনীকে উৎখাত ও নির্মূল করার। ঘোষনা দিয়ে নির্মূল করার হুমকি বাংলাদেশে এখন ডাল-ভাত। ৩০টাকা কেজি চালের বাজারে এ ধরনের হুমকি এখন আর খুব একটা ভাল বিকায়না। তবে সরকারের মন্ত্রী যখন কাউকে শারীরিকভাবে নির্মূল করার হুমকি দেন তা নিশ্চয় তা আর শ্রেফ হুমকি থাকেনা, এ হয়ে যায় সরকারী কর্মসূচীর অংশ, যার বাস্তবায়নের সাথে জড়িত হতে বাধ্য শাষনব্যবস্থার সবকটা যন্ত্র।

আমরা যতদূর জানি JMB’র মত শিবিরের ’রাজনীতি’কে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখনও নিষিদ্ব করা হয়নি, যেমনটা বৈধ করা হয়নি বিচার বহির্ভূত শারীরিক নির্মূলের আইনও। মন্ত্রীর উস্কানীমূলক বক্তব্যের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাঁশ বানিজ্যের ব্যাপক প্রসার লাভ করছে, সাথে লাশ বিনিময়ও সামিল হচ্ছে যত্রতত্র। ক্ষমতার উলটো সিড়ি ডিংগিয়ে মন্ত্রী টুকু যেদিন ম্যাংগো টুকু হয়ে যাবেন পারবেন কি আইনের লম্বা হাত হতে শারীরিক নির্মূলের অপরাধকে ঠেকিয়ে রাখতে? মন্ত্রীদের কাজ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা, উস্কানী দিয়ে দেশকে গৃহযুদ্বের দিকে ঠেলে দেয়া নয়। শেখ আবদুর রহমান আর বাংলা ভাইদের মত চিহ্নিত অপরাধীদেরও এই পথে শাস্তি দেয়া গেছে, রগকাটা শিবিরীয়দের কে্ন যাবেনা তার একটা গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা দিলে কে জানে হয়ত আমাদের বিচার ব্যবস্থা মেনে নেবে মন্ত্রী টুকুর এই জেহাদী উদ্যোগ। শিবির রগ কাটলে টুকু মন্ত্রীর সোনার ছেলেরাও রাগ কাটবে, এই যদি হয় আইনী শাষনের আওয়ামী চিত্র তাহলে প্রয়োজন কি হাতি-ঘোড়া বাঘ-ভাল্লুক সাজিয়ে নির্বাচন করার, বিদেশী ভিক্ষার টাকায় সাংসদ পালন করার, বিচারক ও বিচার ব্যবস্থা নামের কুমীর পালার? এটাই তো হতে পারে একবিংশ শতাব্দীর নয়া রাজনীতি, ‘আমাকে বাঁশ দিলে আমিও বাঁশ দিমু‘। শিবির নিশ্চয় যীশু খ্রীষ্টের দীক্ষায় দীক্ষিত নয় যে তাদেরকে বাঁশ দিলে তারা গোলাপ উপহার দিবে। তা হলে আমরা ম্যাংগো পিপলরা কি ধরে নেব বাঁশ রাজনীতিই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের স্থায়ী রাজনীতি?

Sorce : amibangladeshi