হরতালের আগেই বরিশালে পুলিশের ভূমিকা বিতর্কিত-যুগ্ম আহবায়ক

বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন গ্রেফতার আতংকে ভুগছে। অনেকেই রাতে নিজ বাসা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছে। সূত্র জানায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণ করার অভিযোগে শনিবার রাত ১১টার দিকে দ্রুত বিচার আইনে চিহ্নিত ৩০ জনসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা দেয়ায় উপ-পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ বাদী হয়ে ৩০ জন চিহ্নিতসহ ১৫০/২৫০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হরতালের সমর্থনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নগরীতে বের হয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সদর রোড ও তার আশপাশের অলি-গলি দখল করে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা প্রদান করে হামলা চালিয়েছে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা গেছে, শনিবার সকাল পৌনে এগারোটার দিকে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করার প্রস্তুতি নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে পৃথক পৃথকভাবে সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছিল। ওই সময়ে পুলিশ তাদেরকে ঢুকতে বাধা প্রদান করে লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। পুরো সদর রোড ও তার আশপাশের এলাকায় আতংক নেমে আসে। পথচারীরা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে থাকে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এ সময় মিছিল থেকে টেনে হেঁচড়ে আটক করা হয়। পুলিশি লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপে বিএনপি, যুবদল ছাত্রদলের কমপক্ষে ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশের হাতে আটক হয়েছে ২০ নেতা-কর্মী। এ সময় পুলিশের সঙ্গে লাঠি সোঁটা নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর তাণ্ডব চালাতে যোগ দেয় সরকারি বরিশাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ক্যাডার চঞ্চল দাস পাপ্পা, ক্যাডার অন্তু, আনোয়ার, ছাত্রলীগ ক্যাডার ইমরান হোসেন মিশু, ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী রোকন, ক্যাডার অন্তুর, সহযোগী কালিবাড়ি রোডের মাদক ব্যবসায়ী রিয়াজুল। বাকেরগঞ্জের সাবেক এমপি আবুল হোসেন খানের নেতৃত্বে একটি মিছিল দলীয় কার্যালয়ের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।


আটককৃতদের মধ্যে কয়েক জনকে ছেড়েও দিয়েছে পুলিশ। বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমপি মজিবর রহমান সরোয়ার কাউনিয়ায় নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ও শাসকদলের ক্যাডারদের তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা জানান। মামলা দায়েরের খবরে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড. আলী হায়দার বাবুল বলেন, পুলিশের ভূমিকা বিতর্কিত। পুলিশ নিজের নিয়মে চলছে না। আমাদের ওপর হামলাও চালালো আবার মামলাও করল। জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাফিজ আহমেদ বাবলু জানান, পুলিশি গ্রেফতার আতংকে বাসা ছেড়ে নিরাপদে অবস্থান করছি।