সেনা মোতায়েন চেয়ে বিএনপি প্রার্থীর আবেদন

ফলে এখানকার সাধারন ভোটার রা কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে কিনা তানিয়ে এখন সন্ধিহান ।

সরেজমিন মুলাদী পৌরসভার ভোটারদের সাথে আলাপকরে জানাগেছে, ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মনির রাড়ী হত্যা কান্ডের মধ্যদিয়ে এখান কার নির্বাচনী মাঠ অশান্ত হয়ে উঠছে । এরপর সরকার দলীয় মেয়র প্রার্থীর ক্যাডারদের হামলায় কলেজ শিক্ষক আহত ও সবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে মহাজেটের ( জাপা) প্রার্থী শুক্কুর আহম্মেদ খানের ক্যাডার বাহিনীর তান্ডব ও লুটপাটের ঘটনায় পুরোপুরি অশান্ত হয়ে রয়ে য়েছে মুলাদীর পৌর নির্বাচনী মাঠ ।

বিষেশ করে বিরোধী দলের প্রার্থীর সমর্থকরা হামলার আশংকায় ভোট চাইতে ভোটারটের বাড়ী যেতে এখন হিমশিম খাচ্ছে । সরকার দলীয় প্রার্থী উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকউজ্জামান রুবেল’র সমর্থক ও ক্যাডার রা এখন বেপরোয়া তারা কোন মতেই বিরোধী দলের প্রার্থীর লোকদের গন সংযোগ করতে দিতে নারাজ । একই অবস্থা মহাজোটের শরীক দল জাপা’র মনোনীত প্রার্থীর ক্যাডার দের । তারা বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানেও হানা দিচ্ছে । গত বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় জাপার মেয়র প্রার্থী শুক্কুর আহমোমদ খানের ক্যাডার খালেক খানের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী  নয়াভাংগুলী নদীর খেয়ার ইজারা দারের টোল আদায়ের ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালায় । লুট পাটে বাধা দিলে ইজারা দার ইব্রাহীম হাওলাদার ও তার ছেলে মনির (২৫) গুরুতর জখম হয় । তাদের দুজনকে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে । রাতেই ঐ ঘটনায় মুলাদী থানায় খালেকসহ অজ্ঞাত নামা ২০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে ।

সব মিলিয়ে এখন মুলাদী পৌর সভার নির্বাচনী মাঠ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে । আর এসবের কারন যে করেই হোক পৌর সভার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করা ।
মুলাদী পৌর সভার ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন মিয়া জানান, ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবো কিনা সে নিশ্চয়তা কে দেবে, তার পরতো ভোটের চিন্তা । হেলাল উদ্দিনের মতে প্রতিদিনই সরকার দলীয় প্রার্থীদের হুমকি ধামকি খেতে হচ্ছে । সাধারন একজন ভোটার হয়েও তাদের কথা সুনতে হচ্ছে ।

পৌর শহরের চাঁ দোকানী রহিম হাওলাদাররের মতে এখন পর্যন্ত ছোট খাট ঘটনা ছাড়া মোটা মুটি ভাল ভাবেই কাটছে ভোটের মাঠ । তার মনেও একই দুশ্চিন্তা ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তারা ভোট দিতে পারবেন কিনা ।
এদিকে নিজ সমর্থক কে মার ধর সহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে সেনা মোতায়েন চেয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত আবেদন করেছে এখান কার ৪ দলীয় জোট তথা বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাবেক মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার হারুন-অর-রশিদ খান । আবেদনে তিনি বলেন কেন্দ্র দখল করে ভোট পিটিয়ে নিয়ে যেতে পারে সরকার দলের প্রার্থীর ক্যাডার রা । তাছারা তার সমর্থক ও ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে ও ভোট প্রদান করতে নিশ্চয়তা চেয়ে নির্বাচন কমিশনে ঐ আবেদন করেন ।

হারুন অর রশিদ খান বলেন, যে ভাবে  তারা প্রভাব বিস্তার করছে তাতে আমার সমর্থক ও ভোটার রা কেন্দ্রে যেতে পারবে কি না তা নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় রয়েছি । কমিশন এখানে সেনা মোতায়েন করলে এই দুশ্চিন্তা থাকতোনা ।
তবে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শুক্কুর আহম্মেদ খান বলেন, সেনা মোতায়েন করলে ক্ষতি নেই বরং সুষ্ঠ নির্বাচনের নিশ্চয়তা থাকে ।

মহাজোট তথা আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকউজ্জামান রুবেল বলেন, সেনা মোতায়েনের মত পরিস্থিতি মুলাদীতে হয়নি । তিনিও সুষ্ঠ নির্বাচন কামনা করেছেন।
এদিকে মুলাদীতে ভোটযুদ্ধে মাঠে রয়েছেন মাত্র তিন মেয়র প্রার্থী। তবে থেমে নেই ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড ও তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ৩৫ কাউন্সিলর প্রার্থীও। দিনরাত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন। প্রার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো পৌর এলাকা। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পরথেকে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বৃদ্ধি পেয়েছে। আত্মীয় স্বজন ও সমর্থকসহ পোস্টার-লিফলেট নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। দ্বিতীয় বারের মত মূলাদী পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ ১০বছর পর পৌর মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচন করতে পৌরবাসীর মধ্যে নানান জল্পনা কল্পনা চলছে। কে হচ্ছে পৌর মেয়র? এ প্রশ্ন এখন ভোটারদের মুখে মুখে। মেয়র পদে তিনজনের মধ্যে দুই জনই নতুন প্রার্থী। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগের মনোনীত উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকউজ্জামান রুবেল, বিএনপি থেকে মনোনয় নিয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন দলে সদ্য যোগদানকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার হারুন-অর-রশিদ খান। আর নগত নির্বাচনে অংশনিয়ে পরাজিত প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা শুকুর আহম্দে খান।

মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে দুজন শক্ত অবস্তানে রয়েছে । এ ক্ষেত্রে মহাজোটের দুজন প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির প্রার্থীর অবস্থান অনেকটা ভাল  বলে জানিয়েছেন সাধারন ভোটার রা । ভোটার দের মতে এখানকার সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সদস্য ফলে সে মেয়র হিসেবে তার দলীয় প্রার্থী শুক্কুর আহম্মেদকে বিজয়ী দেখতে চাইছেন । অপর দিকে মহাজোটের মুল দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী দেখতে চাইছে আওয়ামী লীগের বরিশালের শীর্ষ নেতারা । মহা জোটের দু’প্রার্থীর রশি টানা টানির মাঝ খানে ৪ দলীয় জোট তথা বিএনপির একক প্রার্থী সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদ খান । এক্ষেত্রে সুষ্ঠ নির্বাচন হলে তার বিজয় নিশ্চিত অনেটাই এমন দাবী পৌর এলাকার ভোটার দের। বিষেশ করে এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে  বিএনপির প্রার্থী বর্তমান উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার খান বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন । তাই বিএনপি তার পুরোন ঐতিহ্য ধরে রাখতে মরন পন চেস্টা অব্যাহত রেখেছে । আর আওয়ামী লীগ ও মহাজোট চাইছে বিএনপির দুর্গে হানা দিয়ে পৌর সভার মেয়র পদটি বাগে নিতে এমনটিই দাবী মুলাদীর সচেতন ভোটার দের।