মহাজোটের ২বছরের মুল্যায়ন-তোপের মুখে আ’লীগ

আবার আসবো। প্লিজ (দয়া করে) আমাকে দোয়া করুন’। এ রকম অনুনয়ের পর জবাবে ভোটারা আক্ষেপের সুরে বলে ‘আমরা আ’লীগ হয়ে নিরুপায় হয়ে গেছি। আপনি (আ’লীগ প্রার্থী) পরাজীত হলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল দূর্বল হয়ে পড়বে। যোগাযোগমন্ত্রীকে সাংসদ বানিয়েছি ৪বার ও আপনাদের একজনকেই পৌরসভার মেয়র বানিয়েছি ২বার কিন্তু কি পেয়েছি আমরা আপনি কি বলতে পারবেন? আ’লীগ সরকারে সময়ও আমরা সবচেয়ে অবহেলিত’।

এবার আ’লীগ প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হলে পৌরসভায় উন্নয়নের নানা ফিরিস্তি তুলে ধরে বিনয়ের সাথে ভোটারদের অভিমান ভাঙতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হচ্ছে আ’লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী খায়রুল আলম খোকন বেপারীকে। কোথায়ও আবার ভোটারদের আক্ষেপে বেকাদায় পড়তে হচ্ছে। মাদারীপুরের কালকিনি থেকে ৪বার নির্বাচিত সাংসদ যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বর্তমান সরকারের ২বছরে ও ২বার আ’লীগ প্রার্থী তৌফিকুজ্জামান শাহীন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরেও উন্নয়নে ব্যর্থ হওয়ায় এ রকম বিভ্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। ১৮ডিসেম্বরে মনোনায়নপত্র দাখিলের পর পৌর এলাকার শিকারমঙ্গল, পাঙ্গাশিয়া, রাজদী ও গোপালপুর গ্রামে ভোটারদের কাছে দোয়া চাইতে গেলে আ’লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এমন পরিস্থিতে পড়তে হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। পৌর নির্বাচনের মাধ্যমেই মহাজোট সরকারের মুল্যায়ন শুরু হবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।

জানা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকা ও ১৪টি ইউনিয়নের মানুষ আওয়ামীমনা। যে কোনো ধরনের নির্বাচনই হোক না কেন তাতে প্রার্থী নয় আ’লীগকেই ভোট বা সমর্থণ দিয়ে থাকে। ১৯৯২সালের পর থেকে প্রত্যেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ আবুল হোসেন নির্বাচিত হয়ে আসছেন। ১৯৯৬সালের নির্বাচনে আ’লীগ সরকার গঠন করলে তিনি প্রতিমন্ত্রী হলেও পাসপোর্ট কেলেঙ্গকারীতে জড়িয়ে পরলে তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদ হারিয়ে আশাহত করেন কালকিনিবাসীকে। তার পরেও স্বপ্ন ভঙ্গ হয়নি। পরের নির্বাচনে জয়ী হলেও সরকার গঠন করে বিএনপি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকারে উপজেলাবাসী থেকে যায় অবহেলিত। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো সৈয়দ আবুল হোসেন নির্বাচিত হলে মহাজোট সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রলায়ের দায়িত্ব পান। তাতেও ২বছর পার হলেও দূর্ভাগা উপজেলাবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন নি।

গত বছর পৌর এলাকার উন্নয়নে ২৫কোটি টাকার প্রতিশ্র“তি দিলেও বাস্তবায়ন তো দুরের কথা আজ তার কোনো হদিসই নেই। উন্নয়নের কোনো চিহ্নই চোখে পড়ছে না। যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দিন দিন আরো চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।  তবে শোনা যাচ্ছে  তার উদ্যোগে নেয়া উপজেলার উন্নয়নে বড় বড় প্রকল্প বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ফাইল বন্দি রয়েছে। মহাজোট সরকারের ২বছরের মুল্যায়নে নির্বাচনী এলাকা কালকিনিতে তিনি উন্নয়নে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন বলে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। এ দিকে ১৯৯৭সালে পৌরসভা গঠনের পর ৩বার পৌরসভা নির্বাচনে ২বারই আ’লীগ প্রার্থী জয়ী হলেও পৌরবাসীর নুন্যতম নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাই আ’লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে আর নির্বাচনী প্রচারণায় গা ভাসাতে চাইছে না ভোটাররা।  এবার তারা দলের চেয়ে প্রার্থীকেই বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে।