বিশ্বকাপের টিকেট কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ

কর্তৃপক্ষ টিকিট সরবরাহ করায় কাংখিত ম্যাচের টিকিট পায়নি বরিশাল জেলার দর্শকরা। টিকিটের জন্য গভীর রাত থেকে ব্যাংকের সামনে লাইন দিলেও সহস্রাধীক দর্শক টিকিট না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এমন অবস্থায় গ্রাহকরা উত্তেজিত হলে তাদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা ধাক্কা ধাক্কির ঘটানা ঘটে। সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অনলাইন জটিলতার দোহাই দিলেও অধিকাংশ দর্শক কালোবাজারে টিকিট ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করেছেন।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর বাংলাদেশে হওয়ায় টিকিটের জন্য হুলুস্থুল পড়ে গেছে বরিশালের সর্বত্র। টিকিটের আশায় শনিবার গভীর রাত থেকে সদর রোডের সিটি ব্যাংকের সামনে তরুনরা ভীড় জমায়। কেউ কেউ আবার অন্য বিভাগ বা জেলা থেকে এসে টিকিটের অপেক্ষায় থাকে। গতকাল রবিবার সকাল ১০ টা থেকে টিকিট বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারনে তা শুরু হয় বেলা সোয়া ১১ টায়। এদিকে টিকিট না পেয়ে দর্শকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পুলিশের সঙ্গে সহস্রাধীক দর্শকের কয়েক দফা  হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকিট প্রার্থী সহস্রাধিক দর্শক সিটি ব্যাংকের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র সৌরভ মিত্র জানান, সে শনিবার রাতে টিকিটের জন্য বরিশালে এসে ব্যাংকের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু কাংখিত ম্যাচ বাংলাদেশ-ভারতের টিকিট না দিয়ে বাংলাদেশ-ওয়েষ্ট ইন্ডিজ ম্যাচের টিকিট ধরিয়ে দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, ধারনা করা হচ্ছে ব্যাংক কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ন টিকিট মোটা অংকের বিনিময়ে কালোবাজারে ছেড়ে দিয়েছে। স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী নিগার সুলতানা জানান, তিনি গতকাল রবিবার ভোর রাতে ব্যাংকের সামনে এসে লাইনে দাড়িয়েছেন। বরিশাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান নাসিম জানান, তিনি সকাল সাড়ে ৫টায় এসে লাইনে দাড়িয়ে ১৭০ নম্বর সিরিয়াল পেয়েছেন। বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তিনি টিকেট পাননি।  তিনি বলেন, কতিপয় ব্যক্তিকে দেখলাম আইনশৃংখলাবাহিনী কিংবা মিডিয়ার পরিচয় দিয়ে লাইন ভেঙ্গে টিকিট নিয়ে যাচ্ছে। বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজ ছাত্র মোঃ রিমন জানান, টিকিটের জন্য ঝালকাঠী ব্যাংকে গিয়েছিলেন। সেখানে না পেয়ে বাধ্য হয়ে কালো বাজারে উত্তর গ্যালারির ২ টি টিকিট ১২শ টাকায় ক্রয় করেছি।

সিটি ব্যাংক বরিশাল শাখা সুত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের দর্শকরা দৈনিক সর্বোচ্চ ৪৮০ টি টিকিট পাবে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী ম্যাচের টিকিট গতকাল রবিবার সরবরাহ না করা হলেও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আটটি ম্যাচের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। সুত্র জানায়, কাংখিত ম্যাচ বাংলাদেশ-ভারতের ১০৮টি টিকিট বরিশাল জেলার জন্য বরাদ্দ ছিল। তবে তার একটিও সাধারন গ্রাহকের জন্য সরবরাহ করা হয়নি। এ ব্যাপারে সিটি ব্যাংক ব্রাঞ্চ অপরেশন ম্যানেজার মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, অনলাইন জটিলতার কারনে ১১ টার পরে টিকিট সরবরাহ শুরু করায় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের টিকিট দেয়া যায়নি। তবে তিনি কালোবাজারে টিকিট বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন।

অপরদিকে ঝালকাঠীতে ব্যাংকের সম্মুখে পুলিশ মোতায়েন করে টিকেট বিক্রি করা হয়। টিকেট বিক্রি শেষ হওয়ায় পটুয়াখালীতে বিকেল সাড়ে চারটার মধ্যে ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পিরোজপুরের শত শত দর্শকরা টিকেট ক্রয় করতে না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এছাড়াও ভোলা ও বরগুনায় টিকেট ক্রয় করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ দর্শকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।