দুটি ইরি-বোরো ব্লক বন্ধ করে দেয়ায় দিশেহারা কৃষক

চর দিয়াশুর ও চররমজানপুর এলাকার ২টি ইরি-বোরো ব্লক বন্ধ করে দিয়েছে। ব্লক ২টির কয়েকশ একর জমি অনাবাদী থাকার আশংকায় ওই এলাকার দু’শতাধিক কৃষক পরিবার এখন দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তাদের সবার চোখে মুখে এখন আতংকের ছাঁপ। নিরুপায় হয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, সাবেক চীফ হুইপ, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

চরদিয়াশুর ইরি ব্লকের ম্যানেজার নুরুল ইসলাম প্যাদা (৪০) অভিযোগ করেন, গত ৮ জানুয়ারি সকালে কালকিনি উপজেলার চরপালরদী গ্রামের সিরাজ ঘরামী, সাইলু মোল্লা ও লিটন মোল্লার নেতৃত্বে তাদের ভাড়াটিয়া প্রায় দু’শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ট্রালারযোগে এসে তার ইরি-বোরো ব্লকের প্রায় দেড়’শ ফুট ড্রেন ভেঙ্গে ফেলে। এছাড়াও তারা ঘন্টাকালব্যাপী সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ব্লক বন্ধের জন্য হুমকি ধামকিসহ এলাকায় আতংকের সৃষ্টি করে। ব্লকের নির্মানাধীন ড্রেন ভেঙ্গে ফেলা ও প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে তার ব্লকের দেড়’শ বিঘা জমি অনাবাদী থাকাবে বলে নুরুল ইসলাম উল্লেখ করেন। চররমজানপুর ব্লকের ম্যানেজার জামাল প্যাদা (৩৫) জানান, ১২ জানুয়ারি সকালে একই গ্রুপের লোকজন তার ব্লকের বজ্রলাল মন্ডলের বাড়ী সংলগ্ন ড্রেন ভেঙ্গে ফেলে। ওই ব্লকে প্রায় ১’শ বিঘা জমি অনাবাদী থাকার আশংকায় ব্লকের কৃষকেরা এখন দিশেহারা হয়ে পরেছে।

চাষী শাহজাহান প্যাদা (৬০) ক্ষোভের সাথে বলেন, মোরাতো চাষী, চাকুরিজীবি নই। ব্লকে মোগো চাইর ভাইর দুই কানি (৩২০ শতক) জমি আছে। ওইয়া চাষাবাদ কইরাই মোগো বারো মাসের খাওন জোগাড় করতে হয়। ব্লক না হইলে মোরা কি খাইয়া বাঁচমু। গতকাল শনিবার সকালে কথা হয় ওই এলাকার চাষি কালাম প্যাদা, হাকিম হাওলাদার, হারুন-অর রশিদ, মোসেলম প্যাদাসহ একাধিক চাষীদের সাথে। তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, এতোদিন ইরি-বোরো ধান রোপন করা শেষ হয়ে যেতো। প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে ব্লক বন্ধ থাকায় বীজ তলার বীজগুলো এখন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় থানা প্রশাসন থেকে শুরু করে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়েও কোন সুফল পাননি।

সূত্রমতে, গৌরনদী ও কালকিনি উপজেলার মধ্যবর্তী পালরদী নদীর তীরে জেগে ওঠা চরের জমির মালিক হচ্ছেন চরদিয়াশুর ও চররমজানপুর গ্রামবাসী। র্দীঘদিন থেকে তারা ওই জমি ভোগ দখল করেও আসছেন। এরইমধ্যে কালকিনি উপজেলার চরপালরদী গ্রামের প্রভাবশালী সিরাজ ঘরামী, সাইলু মোল্লা ও লিটন মোল্লা ওই চরের জমির মালিকানা দাবি করে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় জমি দখল করে।

এ ব্যাপারে গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে। তবে ব্লকের ড্রেন ভাঙ্গা অন্যায়। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা মামলা দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।