বিএনপি মেয়র প্রার্থীর পরাজয়ের কারন

পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নাসির উদ্দিন জোমাদ্দারের পরাজয়ের অন্যতম কারণ। পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অনেক ভোটের ব্যবধানে ভরাডুবির কারণ খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা মেয়র পদে পৌর বিএনপি সভাপতি মতিউর রহমান মোল্লাকে সমর্থন দেয় এবং মেয়র পদে তার নাম ঘোষণা করে। এমনকি তারা মতি মোল্লার প্রতীক আনারস মার্কার সমর্থনে মাঠ চষে বেড়ায়। এ বিষয়টি কোন মতেই মেনে নিতে পারেননি মতিউর রহমান মোল্লার বিরোধী শিবিরের নেতা সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান। তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করতে ওয়ার্ড বিএনপির নেতা-কর্মীদের মতামতকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারকে ভুল বুঝিয়ে গত পৌরসভা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী নাসির জোমাদ্দারকে মেয়র পদে মনোনয়ন পাইয়ে দেন। তিনি এতেই ক্ষান্ত হননি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে দিয়ে মতি মোল্লাকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে তার উপর চাপ প্রয়োগ করেন।

সর্বশেষ গত ৮ই জানুয়ারী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. নজরুল ইসলাম রাজন পৌর বিএনপির সভাপতি মতিউর রহমান মোল্লাকে বুঝিয়ে দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে বিএনপি সমর্থিত নাসির জোমাদ্দারকে সমর্থন জানান। এরপর মতি মোল্লা বিএনপি সমর্থিত নাসির জোমাদ্দারের পক্ষে মাঠে কাজ করেন। কিন্তু তার পরেও নাসির জোমাদ্দার আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নবাগত যুবলীগ সভাপতি লোকমান হোসেন ডাকুয়ার কাছে অনেক ভোটের ব্যাবধানে পরাজয় বরন করেন। নাসির জোমাদ্দারের পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিএনপি নেতা জানান, গত ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি সাধারন সম্পাদক পদে উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি খলিলুর রহমান সিকদারের সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে মাত্র ৪ ভোট পেয়ে পরাজয় বরণ করেন। পৌরসভায় নাসির জোমাদ্দারের নিজের কোন বাসা নেই। তার সাথে পৌর বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সহ বেশিরভাগ ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি-সম্পাদকের সম্পর্ক ভাল নয়। এরকম একজন নেতাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়াটা বিএনপি’র জন্য বড় ভুল ছিল।

তাছাড়া সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান এর বাড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড এবং নাসির জোমাদ্দারের নিজ এলাকা ৮নং ওয়ার্ডে সে ভোটের ব্যাবধানে তৃতীয় হয়েছেন। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীকে জয়ী করতে গোপনে এমপি পারভীন তালুকদারের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বিএনপি’র ড্যামি প্রার্থী হিসেবে নাসির জোমাদ্দারকে মনোনয়ন দেন। এছাড়াও বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবুল হোসেন খান এমপি পারভীন তালুকদারের নিকট থেকে মোটা  অংকের টাকা নিয়ে বিএনপি সমর্থিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম জহিরুল হক তুহিনের বিপক্ষে কাজ করেন। সব কিছু মিলিয়ে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে সাবেক এমপি আবুল হোসেন খানের একক সিদ্ধান্তই সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নাসির জোমাদ্দারের পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বোদ্ধা মহল।