শ্রমিকলীগের আহবায়ক আফতাবকে খুঁজছে পুলিশ

মোবাইল কোর্ট পরিচালনা নিয়ে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রনক্ষেত্রের ঘটনার মদদদাতা মহানগর শ্রমিকলীগের আহবায়ক আফতাব হোসেনকে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। এ জন্য বরিশাল মেট্রোপলিটনের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। র‌্যাব-৮’র সদস্যরাও টহল অব্যাহত রেখেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। একটি সূত্রে জানা গেছে, সংর্ঘষের পর পরই আফতাফ হোসেন গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। তার ব্যাক্তিগত সেল ফোনটিও রয়েছে বন্ধ। অপরদিকে শহরতলীর কাশিপুরের সাধারন জনগন শ্রমিক নেতা আফতাবকে গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। আফতাবের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছেন, আফতাবের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিসিসি মেয়রের সমর্থকেরা প্রশাসনকে উস্কানি দেয়ার জন্য নাটকীয় ভাবে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছেন।  

সূত্র মতে, রাত সাড়ে আটটায় একটি মিছিলটি কাশিপুর বাজার থেকে বের করে নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ২২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ, সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম রাজ, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। বরিশাল বিমান বন্দর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবুল খায়ের বলেন, নতুল্লাবাদ বাসষ্ট্যান্ডে ঘটে যাওয়া অপ্রতিকর ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য তাদের বিশেষ অভিযান চলছে। এদিকে নতুল্লাবাদ বাসটার্মিনালে শ্রমিক-পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের ঘটনার পর পরই কথা উঠে পুলিশের ওপর হামলা চালাতে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আফতাব হোসেন প্রকাশ্য ইন্ধন দিয়েছেন। তিনি  শ্রমিকদের লেলিয়ে দেয়ায়ই রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এ কারনে তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে বলে সূত্রটি জানিয়েছেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ডাঃ আব্দুর রহিম জানান, বাস টার্মিনাল ও তার আশপাশে অতিরিক্ত  পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পর পরই গ্রেফতার আতংকে বাসটার্মিনালের সংঘর্ষের ঘটনার সাথে জড়িত ও অন্যান্য শ্রমিকেরা আত্মগোপন করেছেন। 

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে নির্বার্হী ম্যাজিষ্টেট কামরুজ্জামান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী পরিচালক জহিরুল ইসলাম নতুল্ল­াবাদ বাস টার্মিনালে ফিটনেসবিহীন ও অবৈধ যানবাহন আটকিয়ে জরিমানা আদায় করতে ছিল। এ সময় জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক শাহ আলম ফকির জরিমানা কম করার জন্য অনুরোধ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশে পুলিশ শ্রমিক নেতা শাহ আলমকে বেদম মারধর করে। এ ঘটনায় শ্রমিক-পুলিশ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় হামলা পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষে তিনজন পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক, শ্রমিকসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। আহতদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য রফিকুজ্জামান টুক, মিজানুর রহমান ও নান্নু মিয়াকে আশংকাজনক অবস্থায় বিশেষ হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।