রাব্বানা আমি তোমায় যেন ভুলিনা। শ্রী মধু সুধন-বিপদ ও ভঞ্জন, ব্রজের বজ্রানন্দ তুমি নারায়ন-আমি ভুজিব তোমার রাঙ্গা চরন”। একসময় বাউল শিল্পীদের কন্ঠে এসব নানা ধরনের বন্ধনার মাঝে মুখরিত হয়ে উঠতো বাউল ও পালাগানের। কালের বির্বতনে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাউল ও পালাগান আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। একসময় শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার পর পরই অজপাড়া গ্রাম মুখরিত হয়ে উঠতো বাউল ও পালাগানে। সারারাত জেগে গ্রামের নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষ উপভোগ করতো বাউল ও পালাগান। বর্তমানে মর্ডান ব্যান্ডের যুগে পূর্বের সেই সব বাউল ও পালাগান আজ কেবলই স্মৃতি হয়ে রয়েছে। যে কারনে অসংখ্য বাউল শিল্পীরা আজ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তবে এখনো কোন কোন এলাকায় প্রয়াত সাধকদের সম্মরনে এখনো প্রচলিত রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাউল ও পালাগানের।
তৎকালীন অভিবক্ত বাংলার প্রখ্যাত বাউল শিল্পী বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বারপাইকা গ্রামের প্রয়াত খোরশেদ আলম বয়াতীর ৪৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত ৯ ফেব্র“য়ারি রাতে বারপাইকা দুশমী বাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাউল পালাগানের। খোরশেদ আলম বয়াতী স্মৃতি সংসদ ও বিশিষ্ট দানবীর কাজী নজরুল ইসলামের উদ্যোগে প্রয়াত শিল্পীর জন্মস্থানে অনুষ্ঠিত বাউল গানের সংগীত পরিবশেন করেন ঢাকার প্রখ্যাত বাউল শিল্পী বাবুল দেওয়ান ও গোপালগঞ্জের বিশিষ্ট বাউল শিল্পী পলাশ দেওয়ান। দীর্ঘদিন পরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে হারিয়ে যাওয়া এ বাউল গান উপভোগ করার জন্য আগৈলঝাড়াসহ পাশ্ববর্তী গৌরনদী, উজিরপুর, গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া, কালকিনিসহ পাশ্ববর্তী উপজেলার হাজার-হাজার নারী ও পুরুষ দর্শকের সমাগম ঘটে। পালাগানে বাউল শিল্পী বাবুল দেওয়ান-মুসলিম ধর্মের আর্বিভাব ও বাউল শিল্পী পলাশ দেওয়ান-হিন্দু ধর্মের আর্বিভাবের ওপরে গান পরিবেশন করেন। বাউল সংগীত অনুষ্ঠানের আয়োজক কাজী নজরুল ইসলামসহ আগত দর্শকরা সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে আবহমান বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী বাউল ও পালাগানকে উদ্জিবীত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।