বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে মেয়র হিরন সমর্থকদের হামলা

মহানগর আ’লীগের আহবায়ক শওকত হোসেন হিরন সমর্থকরা তান্ডব চালিয়েছে। বেদম মারধর করেছে জাতীয় শ্রমিকলীগের বরিশাল শিক্ষাবোর্ড শাখার সভাপতি আবদুল জলিলকে(৩৫)। এসময় বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয়। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জানা গেছে, বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে আগে শ্রমিক সংঘ নামে একটি কমিটি ছিল। যখন যে দল ক্ষমতায় আসত সেই দলের সমর্থকরা শ্রমিক সংঘ নিয়ন্ত্রন করত। আ’লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার আসীনের পর শ্রমিক সংঘের কার্যক্রম নিস্ক্রীয় হয়ে পড়ে। সেখানে আ’লীগ সমর্থক কর্মচারীরা দু’গ্র“পে বিভক্ত হয়ে পড়ে। গড়ে তোলা হয় জাতীয় শ্রমিকলীগের শাখা কমিটি। সাবেক চীফ হুইফ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মহানগর শ্রমিকলীগের আহবায়ক আফতাব হোসেন বোর্ডে সভাপতি পদে আবদুল জলিলকে আসীন করেন। এরপর অপর গ্র“প জলিলের কমিটিকে বিলুপ্ত করে দিতে জেলা শাখা শ্রমিকলীগের আর্শিবাদ নিয়ে পাল্টা আরেকটি কমিটি গঠন করে। পাল্টা কমিটির সভাপতি হন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একে আজাদ ফারুক। তিনি হলেন বিসিসি মেয়র হিরন সমর্থিত। এরইধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আফতাবের ঘোর বিরোধী বরিশাল মাহেন্দ্র শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেন সরদার ওরফে ফাঁসি কামালের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন ক্যাডার সন্ত্রাসী স্টাইলে শিক্ষাবোর্ডের অভ্যন্তরে ঢুকে। তারা আফতাব সমর্থিত শ্রমিক নেতা জলিলকে মারধর করে। মারধর শেষে তাকে হুমকী প্রর্দশন করে জানান দেয় এখানে আফতাব সমর্থিত কোন শ্রমিক সংগঠন থাকবে না। আফতাব বরিশালের একজন বিতর্কিত ব্যাক্তি। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। সুতরাং একে আজাদের কমিটিই বহাল থাকবে।এছাড়া বলা হয় হামলার ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাকে হত্যা করে লাশ ঘুম করে ফেলবে।

শিক্ষাবোর্ডের শ্রমিকলীগের সভাপতি আবদুল জলিল জানান হামলার বিষয়টি তিনি বোর্ড চেয়ারম্যানসহ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করেছেন। তিনি বলেন একে আজাদ কর্মকর্তা হয়েও শ্রমিকলীগের কর্তৃত্ব করতে চাচ্ছেন। ধান্ধাবাজ এই কর্মকর্তাকে কোন কর্মচারীই ভাল জানেন না। জলিল এখন জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন বলে মন্তব্য করেন।

শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ মজুমদার বলেন জলিলকে লাঞ্চিতের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে এটা শ্রমিক সংগঠনের ব্যাপার। শ্রমিক নেতা কামাল হোসেন সরদার বলেন আফতাব হোসেন নগরীর একজন বড় ক্রাইমার। তার অনুমোদিত কমিটি শিক্ষাবোর্ডে থাকবে এটা কোন লোকেরই মেনে নেয়ার কথা নয়। আর এ কারনেই তিনি আফতাবের কমিটি প্রসঙ্গে আলাপ করতে শিক্ষাবোর্ডের সচিবের নিকট গেছেন বলে দাবী করেন। তিনি কাউকে মারধর করেন নি বলে জানান। এদিকে একে আজাদের ব্যাক্তিগত সেল ফোনে একাধিব বার ডায়াল করা হলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত দীর্ঘ দিন ধরে বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরন ও মহানগর শ্রকিলীগের আহবায়ক আফতাব হোসেনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছে। আফতাব বরিশাল জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নেরও সভাপতি। নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল আফতাবের নিয়ন্ত্রনে ছিল। বেশ কয়েক দিন আগে হিরন সমর্থিতরা কৌশলে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল দখলে নিয়ে নেয়।