ছাত্র/ছাত্রী তথা ৮০০ পরিবার বাঁচানোর আকুল আবেদন

বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজি সরকারের অযত্ন আর অবহেলায় আজ ধ্বংসের মুখে। আপনাদের কাছে আকুল আবেদন একরার হলেও লেখাটি পড়ুন এবং যার যার অবস্থান থেকে একে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসুন।

কলেজ পরিচিতিঃ
বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজী দেশের চামড়া বিষয়ক একমাত্র বিশেষায়িত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইস্ট বেঙ্গল ট্যানিং ইন্সটিটিউট নামে ১৯৪৭ সাল থেকে এটি যাত্রা শুরু করে এবং পরবর্তীতে ১৯৭৮ সাল থেকে এটি বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজী (বিসিএলটি) হিসাবে পরিচালিত হতে থাকে। কলেজটি ১৯৮০ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লেদার টেকনোলজী বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদী ডিগ্রী প্রদান করে আসছে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত লেদার টেকনোলজিষ্টগণ চামড়া ও চামড়াজাত পন্য উৎপাদনে গুনগত মান বজায় ও চামড়াজাত পন্য উৎপাদনে বহুমুখীকরণে গুর্বত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে, যার ফলে এ খাতের রপ্তানী আয় ও কর্মসংস্থান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। উল্লেখ্য দেশের বর্তমানে প্রায় ২৭০টি চামড়া ও চামড়াজাত পন্য শিল্প ইউনিট আছে (নন-মেকানাইজড ও কুটির শিল্প ব্যতিত) এবং এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ফিনিশড চামড়ার পাশাপাশি অধিকতর মূল্য সংযোজনকৃত পণ্য যেমন, ফুটওয়্যার ও চামড়াজাত পন্যের রপ্তানী দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুটওয়্যার ও চামড়াজাত পন্য রপ্তানীর সম্প্রসারনের প্রভূত সম্ভাবনার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে “ বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর ”সংস্কার, আধুনিকীকরণ ও পূনর্গঠন শীর্ষক প্রকল্প” এর আওতায় বি এসসি ইন লেদার টেকনোলজী কোর্সের পাশাপাশি ১৯৯৮-৯৯ শিৰা বর্ষ থেকে বি এস সি ইন ফুটওয়্যার টেকনোলজী ও বি এসসি ইন লেদার প্রোডাক্টস টেকনোলজী কোর্স চালু করা হয়েছে। বর্ণিত প্রকল্পের মাধ্যমে অত্র কলেজের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র ক্রয়, জনবল (শিৰক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী) নিয়োগ, ছাত্র/ছাত্রীদের কোর্স পরিচালনা করা ইত্যাদি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি জুলাই ১৯৯৭ সাল থেকে শুর্ব হয়ে জুন ২০০৫ সালে সমাপ্ত হয়। বর্তমানে কলেজ হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৪(চার) বছর মেয়াদী ৩(তিন) টি বিভাগে প্রতি সেশনে ৬০ জন করে মোট ১৮০ জন ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি ও স্নাতক ডিগ্রী প্রদান করা হয়। উলেৱখ্য, কলেজের সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যাবলী তথা জনবল নিয়োগ, বেতন ভাতাদি প্রদান ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে এবং ছাত্র/ছাত্রী ভর্তিসহ সকল প্রকার একাডেমিক কার্যাবলী নিয়ন্ত্রিত হয় সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাধ্যমে।

কলেজের সংৰিপ্ত অবস্থা নিম্নরুপঃ

ক) প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা : বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজী,
৪৪-৫০, হাজারীবাগ, ঢাকা-১২০৯
খ) পূর্ব নাম-
১৯৪৭ সাল : ইষ্ট বেঙ্গল ট্যানিং ইন্সটিটিউট।
১৯৫২ সাল : ইষ্ট পাকিস্তান ইন্সটিটিউট অব লেদার টেকনোলজী।
গ) তৎকালীন সময়ের কোর্সসমূহ :
১) আর্টিজেন
২) সার্টিফিকেট ইন লেদার
৩) ডিপ্লোমা
ঘ) নিজস্ব জমির পরিমাণ : ১৩.৭৪ একর।
ঙ) বর্তমান নামকরণ ও সাল : বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজী, ১৯৭৯ইং সাল।
চ) বর্তমান কোর্সসমূহ :
১) বি এসসি ইন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং
২) বি এসসি ইন ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং
৩) বি এসসি ইন লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়ারিং
ছ) ১৯৮০ সালে চালুকৃত কোর্সের নাম ও ডিগ্রী প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় : বি এসসি ইন লেদার টেকনোলজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
জ) ডিগ্রী কোর্সের তৎকালীন ছাত্র সংখ্যা : ২০ জন, প্রতি সেশনে।
ঝ) বর্তমান চালুকৃত কোর্স ও ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা :
ক্র: নং কোর্সের নাম চালুকৃত সাল ১৯৯৯ সালের ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা বর্তমানে ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা প্রতি সেশনে ১৮০ জন
ঞ) কালেজে অধ্যয়নরত মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা : ৮০০ জন (৫টি সেশনে)
ট) কলেজের শিক্ষক সংখ্যা :
রাজস্ব খাতে সমাপ্ত প্রকল্পে কর্মরত (বিশেষ অনুমতিতে থেকে বরাদ্দ থেকে ৩ মাস অন্তর অন্তর বেতন প্রাপ্ত)
ডিগ্রী প্রদানকারী ৩ টি বিভাগে : অধ্যাপক (টেক.) : ০০ জন সহযোগী অধ্যাপক (টেক.) : ০০ জন সহকারী অধ্যাপক (টেক.) : ০১ জন প্রভাষক (টেক) : ০০ জন ফোরম্যান : ০১ জন রিলেটেড বিষয়ে : (প্রেষনে নিয়োগ প্রাপ্ত) অধ্যাপক (নন-টেক.) : ০০ জন সহযোগী অধ্যাপক (নন-টেক.) : ০০ জন সহকারী অধ্যাপক (নন-টেক.) : ০১ জন প্রভাষক (নন-টেক) : ০৩ জন ডিগ্রী প্রদানকারী ৩ টি বিভাগে : অধ্যাপক (টেক.) : ০০ জন সহযোগী অধ্যাপক (টেক.) : ০০ জন সহকারী অধ্যাপক (টেক.) : ০০ জন প্রভাষক (টেক) : ০৪ জন ফোরম্যান : ০১ জন রিলেটেড বিষয়ে : অধ্যাপক (নন-টেক.) : ০০ জন সহযোগী অধ্যাপক (নন-টেক.) : ০০ জন সহকারী অধ্যাপক (নন-টেক.) : ০১ জন প্রভাষক (নন-টেক) : ০০ জন
মোট শিৰক (ফোরম্যানসহ) = ০৬ জন মোট শিৰক (ফোরম্যানসহ) = ০৬ জন
ঠ) কলেজের যন্ত্রপাতির মূল্য : প্রায় ৬০ (ষাট) কোটি টাকা।
ঢ) ষ্টাফ সংখ্যা : ৯৯ জন।
ণ) ভৌত অবকাঠামো : আনুমানিক ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) কোটি টাকার (তন্মধ্যে বর্ণিত প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২০ কোটি টাকার নতুন ভৌত অবকাঠামো)।

কলেজের একাডেমিক কার্যাবলী :
০১। তাত্ত্বিক ক্লাশ ০২। ব্যবহারিক ক্লাশ
০৩। সেশনাল পরীক্ষা
০৪। চুড়ান্ত পরীক্ষা
০৫। প্রজেক্ট ওয়ার্ক/থিসিস ০৬। রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট
০৭। প্রশিক্ষণ

লেদার সেক্টরে কলেজের ভূমিকাঃ

১৯৪৭- এর পর থেকেই মূলত হাজারীবাগে চামড়া শিল্প গড়ে উঠতে থাকে। তবে সুর্নিদিষ্টভাবে বলতে গেলে ’৪৭-এর আগেও হাজারীবাগে ছোট পরিসরে কিছু ট্যানারী ছিল। ৪৭-এর পর এ শিল্পের ব্যাপকতার পিছনে যেমন পাকিস্তানী উদ্যোক্তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ঠিক তেমনি শিল্পের গুণগতমান বৃদ্বিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে ’৪৯ সালে সথাপিত এ লেদার কলেজ। দেশে বর্তমানে প্রায় ২৭০ টির মত ট্যানারী রয়েছে যাদের দ্বারা উৎপাদিত চামড়া বিদেশে রপ্তানী হয়। রপ্তানী বৃদ্ধির পিছনে সরকার যে দুইটি বড় ভূমিকা রেখেছে তা হল ট্যানারীগুলোতে আধুনিক যন্রপাতি ক্রয়ে সাহায্য করা ও কলেজ অব লেদার টেকনোলজীকে আধুনিকীকরণ করা। বর্তমানে পাকা চামড়া রপ্তানীর পাশাপাশি অধিক মূল্য সংযোজিত পণ্য ফুটওয়্যার ও লেদার গুডস্ তৈরী ও রপ্তানীর দিক বিবেচনা করে সরকার বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীকে প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্কার ও আধুনিকীকরণ করেছে। এৰেত্রে শিল্প কারখানা যেমন দ্রুত বেড়ে চলছে তেমনি অসংখ্য কর্মসংসথানেরও ব্যবস্থা হচ্ছে এবং সর্বোপরি বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশের রপ্তানী আয়। এই শিল্পের ঊলেৱখযোগ্য দিক হল দেশীয় কাঁচামালের ব্যবহার। অথচ সর্বাধিক রপ্তানী আয়ের খাত পোশাক শিল্পের কাঁচামাল প্রায় পুরোটাই বিদেশ থেকে আমদানীকৃত। এসব লেদার ইন্ডাষ্ট্রিতে পূর্বে ঊলেৱখযোগ্য সংখ্যক বিদেশী প্রযুক্তিবিদ কাজ করলেও বর্তমানে অত্র কলেজ হতে পাশ করা প্রযুক্তিবিদরাই এসব কারখানায় কাজ করছে বিধায় বিদেশী প্রযুক্তিবিদদের সংখ্যা দ্র্বত হ্রাস পাচ্ছে। যেখানে বিদেশী প্রযুক্তিবিদদের তুলনায় অনেক কম বেতনে বাংলাদেশী প্রযুক্তিবিদেরা কাজ করে তাই দেশের টাকা দেশেই থেকে যাচ্ছে।

সর্বোপরি হাজারীবাগ হতে ট্যানারীগুলো সাভারে সথানান্তর করার কাজ দ্র্বত গতিতে এগিয়ে চলছে। সরকার ও উদ্যোক্তা কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রায় ৪৫০০ কোটি টাকার উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঐসব কারখানায় যেমন আরও অধিক প্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন হবে তেমনি প্রচুর জনবলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এবং সর্বোপরি দেশ অর্জন করবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।

বর্তমানে এই লেদার সেক্টর থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা রপ্তানী আয় অর্জিত হচ্ছে যার পিছনে রয়েছে এ কলেজ থেকে পাশকৃত টেকনোলজিষ্টদের ভূমিকা। শিৰক স্বল্পতার কারনে ২০০৬-২০০৭ এবং ২০১০-২০১১ শিৰাবর্ষে কলেজ ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করতে পারেনি। অতি দ্র্বত শিৰক সংকটের সমাধান না হলে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে এবং এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে লেদার সেক্টরে। এ সেক্টর থেকে প্রাপ্ত বৈদেশিক আয় দ্র্বত গতিতে হ্রাস পাওয়া সহ আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার হারাবে। ফলশ্র্বতিতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের অর্থনীতি।

প্রকল্প কর্তৃক উন্নয়নঃ
অধিকতর মূল্য সংযোজিত পণ্য ফুটওয়্যার ও লেদার প্রোডিক্টস রপ্তানী সম্প্রসারণে সম্ভাবনার বিষয় বিবেচনায় রেখে জুলাই ১৯৯৭ সালে ৭০.৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কলেজে একটি উন্নয়ন প্রকল্প চালু হয়। প্রকল্পটির নাম “বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর সংস্কার, আধুনিকীকরণ ও পূনর্গঠন”। ৮ (আট) বছর মেয়াদী উক্ত প্রকল্পটি জুন/২০০৫ -এ সমাপ্ত হয়। উক্ত সমাপ্ত প্রকল্পের আওতায় নিম্নলিখিত কার্যাবলি সম্পাদন করা হয়ঃ
০১। অত্যাধুনিক যন্তপাতি ক্রয় : প্রায় ৪২ কোটি টাকা।
০২। জনবল নিয়োগ : শিক্ষক – ২৮ জন
কর্মকর্তা – ০১ জন
কর্মচারী – ৪৫ জন
০৩। জনবল প্রশিক্ষণ : ১.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭জন শিক্ষককে বিদেশী প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং দেশেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
০৪। দুইটি নতুন কোর্স চালু করা :
ক) বি এস সি ইন ফুটওয়্যার টেকনোলজী
খ) বি এস সি ইন লেদার প্রোডাক্টস টেকনোলজী
০৫। ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি করা : প্রতি পর্বের লেদার টেকনোলজী-এর ৩০টি আসন সংখ্যাকে বর্তমানে তিনটি কোর্সে (৬০ক্ম৩)=১৮০ জন -এ উন্নীত করা হয়। বর্তমানে সেশনজট ভূক্ত ২টি ব্যাচসহ সর্বোমোট ৬টি ব্যাচে অধ্যয়নরত ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০০ জন।
০৬। নতুন সিলেবাস প্রণয়ন ও আধুনিকীকরণ করা হয়।
০৭। লাইব্রেরীতে নতুন নতুন বইয়ের সংযোজন ও সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।
০৮। প্রায় ২০ কোটি টাকার ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়।
০৯। ১টি কার, ১টি মাইক্রোবাস, ১টি পিকআপ ভ্যান ও ১টি মিনিবাস ক্রয় করা হয়।

কোর্সের আধুনিকীকরণঃ

২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কোর্স তিনটি আধুনিকায়ন করে বি এসসি ইন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং, বি এসসি ইন ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বি এসসি ইন লেদার প্রোডাক্টস ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়।

বর্তমান অবস্থা ও সমস্যাঃ

প্রকল্পটির মেয়াদ জুন/২০০৫-এ সমাপ্ত হওয়ায় এবং প্রকল্পের আওতায় নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মরত জনবলের (শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকুরী এ পর্যন্ত রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না হওয়ায় বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর একাডেমিক কার্যক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রকল্পটি সমাপ্ত হওয়ার ৬ বছর পরেও প্রকল্পটিকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা হয়নি। উলেৱখ্য যে, প্রকল্প সমাপ্তের ১৭ মাস পরে প্রকল্পের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ কাজ করার অনুমতি তথা বকেয়া বেতন ভাতাদি ও চাকুরী রাজস্বখাতে স্থানান্তরের দাবীতে কর্ম বিরতি আরম্ভ করলে কলেজটির একাডেমিক কার্যাবলি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রকল্পের নিয়োজিত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বহাল রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য নির্দেশ দেন এবং অর্থ মন্ত্রণালয় রাজস্ব বাজেটের বরাদ্দ থেকে বকেয়া বেতন ভাতাদিসহ প্রকল্পের কর্মরত জনবলকে মে/২০০৮ইং তারিখ পর্যন্ত বেতন ভাতাদি প্রদানে সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যাটির স্থায়ী সমাধান না হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তা চাকুরী ছেড়ে অন্যত্র চলে যান । যেখানে ১৯৯৯ সালের প্রকল্পের অধীনে ২৮ জন শিক্ষক কর্মরত ছিল, সেখানে বর্তমানে রয়েছে মাত্র ৫ জন শিক্ষক ।

কলেজে বিদ্যমান সমস্যাসমূহঃ

ক) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিগ্রী প্রদানকারী বিভাগে ন্যুনতম ২৮ জন করে তিন বিভাগের জন্য (২৮ক্ম৩)=৮৪ জন শিক্ষক থাকা প্রয়োজন। কলেজটির ডিগ্রী প্রদানকারী তিনটি বিভাগের প্রতিটিতে চামড়া বিষয়ক কোর্স সমূহ ছাড়াও ৪বছরের কোর্সে শিক্ষার্থীদের আরও কয়েকটি বিষয় যেমন-ভৌত রসায়ন, জৈব রসায়ন, অজৈব রসায়ন, এনালাইটিক্যাল কেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলোজি, পদার্থ বিজ্ঞান,গণিত, ইংরেজি, ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফলিত রসায়ন, বাংলাদেশ স্টাডিজ, পরিসংখ্যান, ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং, প্রোডাকশন পৱ্যানিং এন্ড কন্ট্রল ইত্যাদি বিষয় পড়তে হয়। কিন্তু জৈব রসায়ন, অজৈব রসায়ন, ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, পদার্থ বিজ্ঞান ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের শিক্ষক প্রতিষ্ঠানটিতে নেই।

খ) কলেজটির ডিগ্রী প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রীর মান সমুন্নত রাখার লক্ষে তিনটি ডিগ্রী প্রদানকারী বিভাগসহ মোট ১১টি বিভাগে ন্যূনতম ৮০ জন শিক্ষক থাকা প্রয়োজন মর্মে বার বার তাগাদা প্রদান করে আসছে। অথচ বর্ণিত সমাপ্ত প্রকল্পের মাত্র ৫জন শিক্ষক, ১জন ফোরম্যান কর্মরত থেকে কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ৬ জন ফোর ম্যান/শিক্ষকের উপর কাজের চাপ অত্যন্ত বেশী এবং অমানবিক। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে কোন কোন শিক্ষক সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০টি পর্যন্ত ক্লাশ নিয়ে থাকেন। যা বাস্তব সম্মত নয়।

প্রসংগত উলেৱখ্য যে, টেক এবং নন টেক এ অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে আজও পর্যন্ত কোন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি ।

গ) সমাপ্ত প্রকল্পের আওতায় ২৮জন শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও প্রকল্প শেষে চাকুরী রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না হওয়ায় ২২ জন শিক্ষক (২১ জন শিক্ষক ও ১ জন ফোরম্যান) বেতন ও চাকুরীরর অনিশ্চয়তায় অন্যত্র চলে যায় এবং শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারণ করে। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শিক্ষর মান যেমন ব্যহত হচ্চে তেমনি সৃষ্টি হচ্ছে সেশন জটের। বর্তমানে কলেজটিতে ৪ বছর কোর্সে ৫টি ব্যাচ রয়েছে। উলেৱখ্য শিক্ষক স্বল্পতার কারণে ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীৰার ফরম বিতরন ও পরীৰার তারিখ (১৪ই জুন) প্রদান সত্ত্বেও পরীৰার মাত্র ১০দিন পূর্বে ভর্তি কার্যক্রম বাতিল করা হয়।

খন্ডকালীন শিক্ষক দ্বারা সৃষ্ট সমস্যাঃ
১। খন্ডকালীন শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ী না হওয়ায় তারা যেকোন সময় চলে যান যার ফলে একটি বর্ষ শেষ করতে একটি বিষয়ের সিলেবাস শেষ করার জন্য ৪ থেকে ৫ জন শিক্ষককে ক্লাস নিতে হয়।
২। ক্লাস নেন একজন শিক্ষক কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করছেন অন্য শিক্ষক। এর ফলে ছাত্রদের পরীক্ষা দিতে সমস্যা হয়।
৩। খন্ডকালীন শিক্ষকরা কোন কোন ক্ষেত্রে যোগ্যতা সম্পন্ন নন।
৪। খন্ডকালীন নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষক পাওয়া যায়না, খন্ডকালীন শিক্ষকরা একাডেমিক বিভিন্ন কাজ করতে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হন। খন্ডকালীন শিক্ষকরা-ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্ন করতে পারেন না।

ঘ) বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি ও বর্তমান অবস্থাঃ

২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীরা ৭ বছর ধরেএখনও শেষ বর্ষে পড়ছে।
২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীরা ৬ বছর ধরে এখনও শেষ বর্ষে পড়ছে।
২০০৭ সনে ভর্তি নেয়া হয়নি।
২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীরা ৩ বছর ধরে এখনও ২য় বর্ষে পড়ছে।
২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীরা ২ বছর ধরে এখনও ১ম বর্ষে পড়ছে।
২০১০-১১ সনে ভর্তি নেয়া হয়নি।

উল্লেখ্য যে, ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত ছাত্র/ছাত্রীরা গত জুলাই/১০ মাসে পরীক্ষা শুরু করলেও দীর্ঘ ৯ মাসে তাদের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ।

ঙ) শিক্ষক স্বল্পতার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত কলেজের (২০০৬-০৭) শিক্ষাবর্ষে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির অনুমোদন না দেয়ায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বন্ধ ছিল। শিক্ষক সমস্যা দূর করা হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এর্বপ আশ্বাসের প্রেৰিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপৰ ছাত্রী-ছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম অনুমোদন করেছিল এবং ২০০৭-২০০৯, ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে চললেও চলতি শিক্ষাবর্ষে পুনরায় ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। অথচ শিক্ষক সংকট সমাধানে নিমিত্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সুপারিশকৃত সমাপ্ত প্রকল্পের জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তর এর কোন অগ্রগতি এখন পর্যন্ত হয়নি।

চ) প্রকট শিক্ষক সংকট এর কারণে সৃষ্ট সমস্যাবলিঃ
১) গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদানে বিঘ্ন
২) যন্ত্রপাতি সংরক্ষনে সমস্যা
৩) সেশনজট বৃদ্ধি পাওয়া
৪) নিয়মিত ক্লাস গ্রহণে সমস্যা
৫) মান সম্পন্ন থিসিস ও প্রজেক্ট ওয়ার্ক সম্পন্ন না করা
৬) কার্যকারী ভাবে ব্যবহারিক ক্লাশ গ্রহণে সমস্যা
৭) রিচার্স & ডেভেলপমেন্ট কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হওয়া

সমস্যা সমাধানে গৃহীত পদক্ষেপ সমূহঃ

প্রকল্পের কর্মরত জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের প্রস্তাবঃ

শিক্ষক সংকট নিরসন কল্পে “বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর সংস্কার, আধূনিকীকরণ ও পূনগর্ঠন শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্পের আওতায় কর্মরত জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য অধ্যক্ষ মহোদয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বহুবার আবেদন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারিশঃ

অত্র কলেজের ডিগ্রী প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কর্তৃক গঠিত বিশেষ কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে পেশকৃত রিপোর্টে কলেজের শিক্ষক সংকট নিরসনের লক্ষে প্রকল্পে কর্মরত শিক্ষকদের সরাসরি রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের জন্য সুপারিশ করেন।

লেদার সেক্টরের প্রস্তাবঃ

বাংলাদেশ চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্যের সেক্টরকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে বাংলাদেশ ফিনিসড লেদার ও লেদার গুডস এন্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও সমাপ্ত প্রকল্পের কর্মরত জনবল রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটির সুপারিশঃ

লেদার টেকনোলজী কলেজের বিদ্যমান শিক্ষক সংকট নিরসনের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হলে কমিটি অত্র কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে প্রকল্পের জনবল সরাসরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের সুপারিশ করেন।

লেদার সার্ভিস সেন্টার কর্তৃক সুপারিশঃ

বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ লেদার সার্ভিস সেন্টার কলেজের সমাপ্ত প্রকল্পের কর্মরত জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরের জন্য সুপারিশ সহকারে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি পত্র প্রদান করেন।

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশনাঃ

বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর সার্বিক দিক বিবেচনা পূর্বক কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে “ বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর সংস্কার আধুনিকীকরণ ও পুনর্গঠন” শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্পে কর্মরত জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরের বিষয়টি ত্বরান্বিত করার জন্য তৎকালীন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড.ফখর্বদ্দীন আহমেদ এর নির্দেশনার আলোকে ১৩ই আগষ্ট, ২০০৭ইং তারিখে পত্রের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় “ বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর সংস্কার, আধুনিকীকরণ ও পুনর্গঠন শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্পের জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরের সংস্থাপণ ও অর্থ মন্ত্রনালয়ের মতামত গ্রহণ পূর্বক বিশেষ এসআরও জারির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে। উলেৱখ্য যে, কোন পদৰেপই আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

সর্বশেষ পদক্ষেপঃ

কলেজের সংকট নিরসন কল্পে বিগত ৩১ জনুয়ারি ২০১১ ইং তারিখে ঢাকা -১২ আসনের সাংসদ ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস (এম.পি) এর পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সচিব (শিৰা মন্ত্রণালয়), মাননীয় উপাচার্য (ঢা.বি), মাননীয় ডিন (ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজী অনুষদ ঢা.বি), উপাচার্য (বিএসএমএমইউ), মহাপরিচালক (কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর) ও অত্র কলেজের অধ্যৰ এর নেতৃত্বাধীন শিক্ষক মন্ডলী বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৭মার্চ ২০১১ তারিখের মধ্যে ন্যূনতম ৫০% অর্থাৎ ৪০জন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয় কারিগরী শিক্ষা অধিদপ্তরের উপর অন্যথায় শিক্ষার্থীদের জোরালো দাবীর প্রেৰিতে অত্র কলেজটিকে শুধু একাডেমিক কার্যক্রমই নয়, প্রশাসনিক কার্যকমেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। পরবর্তী অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য ০৮মার্চ ২০১১ ইং তারিখে বৈঠক আহ্বান করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ০৮মার্চের মিটিং স্থগিত করা হয় এবং আজ পর্যন্ত কোন স্কথায়ী শিক্ষক নিয়োগ হয় নি। উপরন্তু আরো ২ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক অন্যত্র চলে গেছেন ।
এমতাবস্থায় অত্র কলেজের প্রায় ১০০০ শিৰার্থীর তথা ১০০০ পরিবার আজ ধ্বংসের পথে।
সর্বশেষ সংকট উত্তরণের একটাই পথ-
“একক প্রশাসন তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ”

সরকারি বিধি বিধানঃ

বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীর উন্নয়ন প্রকল্পটি জুলাই/১৯৯৭ইং তারিখে শুরু হয়ে জুন/২০০৩ তারিখে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়ে তা সমাপ্ত হয় জুন/২০০৫ ইং সালে। প্রকল্পটিতে ১৯৯৯ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে তিন ধাপে নিয়োগ প্রদান করে ২০০৩ইং সালে শেষ হয়। জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র সমূহে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিযোগীতা মূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

০১। পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের পরিকল্পনা বিভাগের ২৮/০৬/২০০০ইং তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী প্রকল্পের শিক্ষক, চিকিৎসা ও টেকনিক্যাল পদের মধ্যে যে সকল পদ প্রকল্প সমাপ্তির পর রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত হওয়ার যোগ্য সেই সকল পদকে একনেক হইতে অনুমোদন সাপেৰে স্কেল ভিত্তিক করার জন্য বলা হয়। বাস্তবে লেদার টেকনোলজী কলেজের যে শিক্ষক গণ উন্নয়ন প্রকল্পের পদগুলোতে প্রথমে সাকুল্য বেতনে যোগদান করেছিলেন সেই পদগুলো উপরোক্ত সিদ্ধান্তের প্রেৰিতে একনেক এর অনুমোদনক্রমে স্কেল ভিত্তিক করা হয়। পরবর্তীতে যে সকল শিক্ষক গণকে নিয়োগ প্রদান করা হয় তাদেরকে স্কেল ভিত্তিক নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। উক্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষক পদগুলো রাজস্বখাতে স্থানান্তর যোগ্য।

০২। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ০৭/০৫/২০০২ইং তারিখের সার-সংৰেপ অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা, প্রশিৰণ, নতুন ধরনের প্রযুক্তি ও বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মসূচী বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রকল্পের লোকবল দ্বারাই চালু করা হয়। ঐ সমস্ত সমাপ্ত প্রকল্পের কার্যক্রম রাজস্বখাতে অব্যহত না রাখলে প্রকল্প গ্রহনের মূল উদ্দেশ্যই ব্যহত হয়। কাজেই এ ধরনের প্রকল্পের লোকবল রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তবে অপ্রয়োজনীয় বা প্রয়োজনের অতিরিক্ত লোকবল যাতে প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা না হয় তাও একই সাথে নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আরও উলেৱখ থাকে যে, প্রকল্পের মাধ্যমে চালু কর্মসূচী/সৃষ্ট স'াপনাকে টিকিয়ে রাখার লৰ্যে প্রকল্প সমাপ্তির পর কি ধরনের লোকবল প্রয়োজন হবে তা পর্যলোচনা ও নির্ধারনের প্রক্রিয়া প্রকল্প শেষ হাবার ৬ মাস পূর্বে থেকে শুর্ব হওয়ার বিদ্যমান পদ্ধতি পরিবর্তন করতে ১২ মাস পূর্ব থেকে শুর্ব করতে হবে এবং প্রকল্প শেষ হবার ৬ মাস পূর্বেই চূড়ান্ত করতে হবে। কিন' বাস্তবে উলেৱখিত প্রকল্পের ৰেত্রে এর্বপ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

০৩। এসআরও নং ১৮২, ২০শে জুন/০৫ইং তারিখের অনুযায়ী শুধুমাত্র ৩০ শে জুন/১৯৯৭ইং তারিখের পূর্বে শুরু হওয়া প্রকল্পের স্কেল ভিত্তিক নিযুক্ত এবং রাজস্ব বাজেটের কোন পদে সাময়িক ভাবে পদস' কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তররে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

০৪। এসআরও নং ১৮৩, ২০শে জুন/০৫ ইং তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১লা জুলাই ৯৭ইং তারিখ হইতে শুর্ব হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পের কোন পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হইয়া উক্ত প্রকল্পের সমাপ্তির তারিখ পর্যন্ত সাকুল্য বেতনে চাকুরীরত ছিলেন এরুপ কর্মকর্তা বা কর্মচারীরর জন্য প্রকল্পের সৃজনকৃত পদে নতুন নিয়োগে বয়স শিথিলকরণ করা হইবে। উক্ত সিদ্ধান্তমতে স্কেল ভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর অনেকেই (যাদের বয়াস অতিক্রান্ত) আবেদনই করতে পারবে না সৃজিত পদে।

০৫। ২৪শে মার্চ,২৯৯৭ ইং তারিখের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকারী চাকুরীতে সরাসরি নিয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরনের কোটা আছে; যথা-মেধা কোটা ৪৫%, জেলা কোটা ৩০%, মহিলা কোটা ১০%, উপজাতীয় কোটা ৫% ইত্যাদি কোটা।

সুতরাং উপরিউক্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক কলেজের সমাপ্ত প্রকল্পের অধিকাংশ অভিজ্ঞ ও মেধাবী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরই সরাসরি নিয়োগে বাদ পড়বে কিন্তু স্থানান্তর হলে এর্বপ কোন সমস্যার উদ্ভব হবে না।

০৬। প্রথম ধাপের নিয়োগের ৰেত্রে আবেদন পত্রের কোথাও লিখিত ছিল না যে উক্ত পত্রই অব্যহতি পত্র। ইহা কেবলমাত্র চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের ৰেত্রে প্রযোজ্য যখানে চুক্তির শেষ দিনটি উলেৱখ থাকে এবং নিয়েগ পত্রেও উলেৱখ রেখে নিয়োগ করা হয়। সুতরাং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ন্যায় উলেৱখিত প্রকল্পের জনবলে নিয়োগপত্র অব্যহতি পত্র হিসাবে গণ্য হতে পারে না।

০৭। প্রকল্প বাস্তবায়নের পিপি (প্রজেক্ট ফর্মা) অনুযায়ী সমাপ্ত প্রকল্পের কর্মরত জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তর যোগ্য।

সমস্যা সমাধানে উপায়ঃ

বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীতে বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে একটি এবং শুধুমাত্র একটি পদৰেপ নেওয়াই যথেষ্ট। আর তা হল বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীকে কারিগরী অধিদপ্তরের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একক প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করা।

ঢাবির অনুষদ করার স্বপক্ষে যুক্তিঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ করার জন্য এখানে যেসব সুবিধা রয়েছে-
১। চারটি আইএষও/আইইসি-১৭০২৫ এক্রিডেটেড ল্যাব যা বাংলাদেশের অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই।
২।পৃথক তিনটি বিভাগ।
৩। প্রত্যেক বিভাগের ওয়াকসপ গুলোতে উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জামাদি এবং অভিজ্ঞ ও দৰ সহকারীবৃন্দ।
৪। বিভিন্ন বিষয়ের জন্য পর্যাপ্ত উন্নত যন্ত্রপাতিসহ পৃথক পৃথক ল্যাব.
৫। একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী এবং গবেষণার জন্য আলাদা একটি লাইব্রেরী।
৬। দুটি সাইবারক্যাফে ও একটি কম্যাপিউটার ল্যব যাতে আছে ইন্টারনেট সুবিধাসহ প্রায় ৮০টির মত কম্পিউটার।
৭।ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য মানসম্মত, আবাসন ব্যবস্থা।
৮। পর্যাপ্ত অবকাঠামো।

উপরিউক্ত সুযোগ-সুবিধা বিবেচনাধীন বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীকে দ্বৈত শাসনের হাত থেকে মুক্ত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ করা আশু প্রয়োজন।
স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পারে শিক্ষক সমস্যার দ্র্বত এবং স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব যা কারিগরী শিৰা অধিদপ্তরের আমলা তান্ত্রিক জটিলতার কারণে নতুন পদ সৃষ্টি করে শিৰক সমস্যার দ্র্বত সমাধান অসম্ভব।
বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজীকে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার চেয়ে একে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদ করা সহজতর প্রক্রিয়া।

পোশাক শিল্পের উন্নতির জন্য টেক্সটাইল কলেজকে কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের অভিশাপ থেকে মুক্ত করে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা হয়েছে তেমনি চামড়া শিল্পের উন্নয়নের জন্য লেদার কলেজকে দ্র্বত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদ করা আশু প্রয়োজন।

বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজী এর ঠিকানাঃ
৪৪-৫০, হাজারীবাগ
ঢাকা – ১২০৯

যোগাযোগঃ
সবুর আহমেদ
সহকারী অধ্যাপক
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজী।
মোবঃ ০১৭১৪২৪১৮৪