যুবদলের কমিটি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে তিন গ্রুপ

বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে যুবদলের তিন গ্রুপ। উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইউনুচ, যুগ্ম আহ্বায়ক হায়দার আলী ও সাবেক যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. রিটনের সমর্থকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, তিন পক্ষ তিন অবস্থান নিয়ে কমিটি পুনর্গঠনে মাঠে নেমেছেন। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক গ্রুপের দাবি সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হোক। আরেক পক্ষের ইচ্ছা মনোনীত কমিটি গঠন। আবার সাবেক কমিটির দাবী তাদেরকে পুনর্বহাল করা হোক। গত ২১ এপ্রিল বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির দু’গ্রপের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া হয়েছে। যুগ্ম আহ্বায়কের মধ্যে ৩ জনের নেতৃত্বে গঠিত গ্রুপ অগণতান্ত্রিক উপায়ে গঠন করা যুবদলের কোনো কমিটি তাঁরা মেনে নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে বিএনপিও।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁদের কাছে কোনো ‘পকেট কমিটি’ গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মিঠুন রবিবার জানিয়েছেন, আহ্বায়ক কমিটির ৩ মাসের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির চলমান দ্বন্ধ সংঘাত নিয়ে কোন পক্ষের লিখিত অভিযোগ এখনো তারা পাননি। তবে সাবেক কমিটির সদস্যরা তাদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করার দাবীর বিষয়টি তিনি অবগত রয়েছেন। তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর জেলা যুবদল নেতাদের সাথে পরামর্শ করেই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন। সম্মেলনের ব্যাপারে তিনি জানান, কবে সম্মেলন হবে এই মুহূর্তে তিনি বলতে পারছেন না।

বিএনপি ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ০৮/০২/২০১০ ইং মো. ইউনুচকে আহ্বায়ক করে ৫১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে ইতোমধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। বর্তমান কমিটির বালখিল্যতা দেখে এরই মধ্যেই নড়েছড়ে বসেছেন সাবেক কমিটির সদস্যরা। ২৩ ডিসেম্বর ১৯৯৮ ইং তারিখে জেলা যুবদল কর্তৃক অনুমোদন পাওয়া সাবেক কমিটির সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি পত্র সম্প্রতি বান্দরবান জেলা যুবদলের নিকট পাঠানো হয়েছে। সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. রিটন, সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন মেম্বার, আহাম্মদ হোসেন সও. সাংগঠনিক সম্পাদক ছেহের আলমসহ ২৩ জন নেতাকর্মীর স্বাক্ষরিত পত্রে দাবী করা হয়, আলীকদমে একসময় যুবদল স্বীয় ঐতিহ্য, খ্যাতি ও সাংগঠনিক শক্তিমত্তায় এতদাঞ্চলে আন্দোলন সংগ্রামের পুরোধা ছিল। ফলশ্রুতিতে এ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আলীকদমে ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃত্বে আসীন হন। কিন্তু বর্তমানে কতিপয় অপরিনামদর্শী ছেলেপেলেকে নিয়ে গঠিত বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ঘোষিত আহ্বায়ক দলীয় কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার পরিবর্তে সাইনবোর্ডকে পুঁজি করে নিজের বাণিজ্য প্রসারেই জড়িত। সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী দলের বিভিন্ন কর্মসূচী পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে এ কমিটি। কেন্দ্র ঘোষিত জেলা নেতৃবৃন্দের নির্ধারিত সাংগঠনিক সফরও বাতিল করতে হয়েছে। এ অবস্থায় আন্দোলন সংগ্রাম বেগবান করতে আলীকদমে প্রকৃত যুবশক্তিকে একত্রিত করে যুবদলের কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন তারা।

বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির অধিকাংশ নেতাকর্মী বলেন, ‘আমরা সম্মেলন চাই। সম্মেলনে গণতান্ত্রিক উপায়ে বের হয়ে আসা নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। টেবিলে বসে তৈরি করা কমিটিতে আস্থা নেই আমাদের। সম্মেলন ছাড়া কমিটি গঠন করা হলে তাঁরা এ কমিটি মেনে নেবেন না।‘ ইতোমধ্যে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ২২ জনের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ জেলা যুবদলের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

আলীকদম উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল হামিদ বলেন, যুবদলের মনোনীত কোনো কমিটি নয়, নির্বাচিত কমিটিই স্থানীয় বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। অন্যভাবে কমিটি গঠন করা হলে তা হবে অগণতান্ত্রিক উপায়ে গঠন করা অবৈধ কমিটি।