হাসানাত বনাম হিরন গ্রুপের অর্ন্তদ্বন্দে দিশেহারা পুলিশ

সেরনিয়াবাদের উপর মঈন তুষারের হামলা ও মামলার   ঘটনার ৪দিন পার হলেও পুলিশ অদ্যবদি কাউকে গ্রেফতার করেনি। অথচ পুলিশের চোখের সম্নুখেই চাদাবাজি মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে  অস্ত্রের  মহরা দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে হাসানাত বিরোধী বক্তব্য দিয়ে চলেছে। সার্বক্ষনিক কলেজ ক্যাম্পাসে সৃষ্টি করছে ত্রাসের রাজত্ব। তবে আদৌ এই মামলার কোন আসামি আটক হবে কিনা এ প্রশ্নের উত্তর খোদ পুলিশ প্রশাষনের ও জানা নেই।

ওদিকে বিএম কলেজ ছাত্রলীগের রফিক বনাম তুষার দ্বন্ডের নেপথ্যে যারা কলকব্জা নারছেন তাদের হুমকিতে প্রশাষনের উর্দ্ধতন কর্মকার্তারাও এখন চিন্তিত। ইতিপূর্বে পলিটেকনিক কলেজের আ’লীগের এই দুটি গ্রুপের কোন্দলের কারনে খেসারত গুনতে হয়েছে পুলিশের। সাসপেন্ড কারা হয়েছিল ৪পুলিশ কর্তাকে। তথ্যনুযায়ী, বরিশাল পলিটেকনিক কলেজে ছাত্রলীগের দু গ্র“পের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গত বছরের ৫মে সাসপেন্ডকৃত ৪ পুলিশ কর্তারা হচ্ছেন যথাক্রমে সাব ইন্সেপেক্টর মোঃ সিদ্দীক,নায়েক আবদুর রহমান,কনস্টেবল সোহেল আহমেদ ও স্বপন কুমার। রাজনৈতিক এই দুট গ্র“পের কাছে এখন খোদ পুলিশ প্রশাষনই জিম্নি হয়ে রয়েছে। আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ করতে পারছেনা পুলিশ প্রশাষন।

পুলিশের একটি সুত্র দুঃখ প্রকাশ করে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন এই দলটি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় পান থেকে চুন খসলেই পুলিশের ঘুম হারাম। যে কারনে মেয়র হিরন পন্থি মঈন তুষার কর্তৃক রফিক সেরনিয়াবাদকে মারামারির ঘটনায় রাজনৈতিক চাপে কোন রকম বাদ-বিচার না করেই মামলা নিতে বাধ্য হয়েছে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ। সূত্র আরও বলছে ২৯ এপ্রিল দুপুরে মামলা গ্রহনের জন্য তুষারের পক্ষে একদিকে মেয়র হিরনের নির্দেশ অন্যদিকে রফিক সেরনিয়াবাদের পক্ষে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র নির্দেশে শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থাছিল কোতয়ালি পুলিশের। নিজেদের আসন টিকিয়ে রাখতে ঘটনার দিন দুপুরে রফিক সেরনিয়াবাদের মামলা গ্রহন করার ৪ঘন্টা পর রাতেই তুষারের পক্ষে হাসান শাহ বাবুলের মামলা গ্রহন করা হয়। তবে সে সময় ওসি মামলা গ্রহনে অপারগতা প্রকাশ করলে ঠিক সেই মুহুর্তেই মেয়র শওকত হোসেন হিরনের ফোন আসলে তুষারের মামলাটি ভিত্তিহীন জেনেও তা গ্রহন করতে বাধ্য হয় পুলিশ। রফিক সেরনিয়াবাদের দায়েরকৃত মামলার আসামিরা হচ্ছেন তুষার,সাঈদী, হাবিবুর রহমান, উজ্জল ও সোভন সহ অজ্ঞাত ৮/১০জন। বিপরীতে মঈন তুষারের দায়েরকৃত মামলার আসামিরা হচ্ছেন রফিক সেরনিয়াবাদ, জুম্নান ও মামুন সহ অজ্ঞাত ৮/১০জন। বরিশাল আ’লীগে বিভাজমান এই দুট রাজনৈতিক গ্র“প এর কোন্দলের কারনে কেবল বরিশালের সাধারন জনগনই নয় খোদ পুলিশ প্রশাষনও বর্তমানে আতঙ্কে।

উল্লেখ্য যে, মে মাসের ৫তারিখের ঘটনায় পলিটেকনিক কলেজের রাজ্জাক বনাম মিজানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মেয়র হিরন পন্থি মিজানের পক্ষে নেপথ্যে গুটি নেরেছেন হিরনের আস্থা ভাজন মঈন তুষার ও রাজ্জাকের পক্ষে হাসানাত পন্থি তৌহিদুর রহমান ছাবিদ। যে কারনে পুলিশের ওই গোপন সুত্র দুঃখ করে আরও জানান, হিরন বনাম হাসানাত পন্থিদের যে কোন রাজনৈতিক সংঘর্ষে বরাবরই খেসারত দিতে হয়েছে কোতয়ালি পুলিশদের। ও দিকে দলীয় একটি সূত্রে জানিয়েছে প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে বরিশাল আ’লীগের রাজনৈতিক মাঠ এখন হিরন পন্থিদের দখলে। কারন প্রতিটি কলেজ সংগঠন নির্বাচনের দাবীতে মঈন তুষারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। হাসানাত অনুসারিদের ভয়ে তারা মুখ খুলেও খুলছেনা।

উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক চীপ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ নিজে হাত ধরে মেয়র হিরনকে আ’লীগে যোগদান করিয়েছেন। সময়ের পরিবর্তনে জাপা থেকে হাসানাতের হাত ধরে আসা সেই মেয়র হিরনই এখন গুরু মারা শিষ্য রুপান্তরিত হয়েছে। দলীয় এই গ্র“পিং এর বিষয়টি এতদিন চাপা থাকলেও নির্বাচনের দাবীতে রফিক-তুষারের মারামারির ঘটনার ১দিন পর ৩০এপ্রিল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্নেলনের মাধ্যমে মেয়র পন্থি তুষার হাসানাতকে সন্ত্রাসের জম্নদাতা আখ্যায়িত করে এবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে ভিতরে ভিতরে হাসানাত-হিরনের মধ্যে কোন দ্বন্ড নেই। নিজস্ব কোরাম ভারী করতে গিয়ে রাজনৈতিক খেলায় হাসানাত বনাম হিরন সমর্থিতরা দুটি গ্র“পে বিভক্ত হয়ে পরেছে। যা সৃষ্টি করেছেন মেয়র শওকত হোসেন হিরন মেয়রের আসন দখল করার পর থেকে। যদিও প্রচলন রয়েছে মেয়র হিরন এখনও আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সামনে নমনীয় শিরে দাড়িয়ে থাকে। কিন্তু মূলত রাজনীতির মাঠে  যার চিত্র পুরোটাই উল্টো। যার আরেকটি জলন্ত উদাহরন নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের হাসানাত বনাম হিরন সমর্থিতদের দ্বন্ডে আফতাব চেয়ারম্যানকে উৎখাত। যা বর্তমানে মেয়র গ্র“পের দখলে রয়েছে।

 ও দিকে মামলার আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আইনের উর্দ্ধে কেউ নয়। অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে। তুষার ও রফিরেক এই পাল্টাপাল্টি মামলাটি পুলিশ কোন্ট্রলার এসি ও ডিসিকে দায়িত্ব দিয়েছে। এ ব্যাপারে তারাই যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।

সহকারী পুলিশ কমিশনার সালেহ আহমেদ আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে জানান, মামলাটি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। তবে দোষী যেই হোক পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।