শিক্ষকদের আরো গবেষণায় এগিয়ে আসতে হবে

গবেষণার জন্য আরো জোরদিতে হবে। দেশের নানা সমস্যা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। এমনটিই মতামত ব্যক্ত করলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও শিক্ষকদের ভূমিকা’  শীর্ষক সেমিনারের বক্তারা। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা বিভাগীয় প্রধান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এমেরিটাস ড. অরুণ কুমার বসাক। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. সালেহ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার ব্যাপারে আরো সচেষ্ট হতে হবে। প্রতিকূল পরিবেশ ও  সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজ্ঞানী জগদীস চন্দ্র বসু খুব কম সময় সুস্থ জীবন যাপন করেছেন। কিন্তু তিনি শারীরিক ও অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে গবেষণা করে বিজ্ঞানে বহু আবিষ্কার করেছেন। শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার গুরুত্ব দিয়ে থাকি। রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার বিকাশ হবে না।  মূল প্রবন্ধে প্রফেসর ড. অরুণ কুমার বসাক বলেন, যে দেশের শিক্ষাপদ্ধতি যত ভালো, সে দেশ তত উন্নত। শিক্ষাপদ্ধতির অর্থ শুধু পঠন-পাঠন এবং পরীক্ষা গ্রহণ নয়, শিক্ষক নিয়োগ ব্যবস্থা, ভালো লাইব্রেরী, ভালো গবেষণাগার, ভালো শিক্ষক-গবেষক এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গবেষণা দেশের উৎপাদন, গবেষণা সংশ্লিষ্ট পঠন-পাঠন, সর্বস্তরের শিক্ষাকার্যক্রম (সিলেবাস), দেশে বসবাসকারী মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণামুখী শিক্ষা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, ভাল-মন্দের বিচারবুদ্ধি ও সহনশীলতা বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো বলেন, এক সময় ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষাপদ্ধতি শ্রেষ্ঠ ছিল বলেই তাদের সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত যেত না। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগব্যবস্থা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হয়ে থাকে। পৃথিবীর ইবংঃ আধরষধনষব ঈধহফরফধঃব কে নিয়োগ প্রদান করে বর্তমানে বিশ্বেও যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াস উদ্দীন বিশ্বাস বলেন, প্রফেসর বসাক দীর্ঘ ৪৮ বছর যাবৎ শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। প্রবন্ধের আলোচনায় প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমাদের দেশে গবেষণায় অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তবুও আমাদেরকে গবেষণায় সম্পৃক্ত হতে হবে। গবেষণায় অনেক আনন্দ রয়েছে যাতে জীবনে প্রথম প্রেমের সাথে তুলনা করা চলে। সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে সে আনন্দের বিষয়টিই সুন্দরভাবে ফুটে ওঠেছে। ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক প্রফেসর  ড. মোহাম্মদ ইউনুছের সভাপতিত্বে ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. ইয়াসমীন হক, এ বিভাগের  প্রফেসর ড. সুশান্ত কুমার দাস এবং শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আব্দুল গণি। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রফেসর ড. অরুণ কুমার বসাককে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় এবং  ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেস ড. মোঃ সালেহ উদ্দিন  তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।