হয়ে উঠছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ ও বিরোধী দলের সহযোগী সংগঠন যুবদলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড। দলের মধ্যেই এ নিয়ে যেকোন সময় বড় ধরনের সংঘাতের আশংকা করছেন রাজনৈতিক বিষেজ্ঞরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে গৌরনদীতে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সক্রিয়ভাবে দলের প্রায় প্রত্যেকটি কর্মসূচী পালন করে আসছেন। এরইমধ্যে সরকারী গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা দীর্ঘদিন থেকেই স্থানীয় এমপিসহ দলের র্শীর্ষ নেতাদের কাছে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি করে আসছেন। ছাত্র নেতাদের দাবি বরাবরেই ব্যর্থ হওয়ায় তারা গত ১ জুন থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে লাগাতার কর্মসূচী ঘোষনা করেছেন। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গত বুধ ও গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক জুবায়েরুল ইসলাম সান্টু ভূইয়া বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই মেয়াদোর্ত্তীন কমিটি দিয়েই কলেজ ছাত্রলীগের সকল কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই সাধারন শিক্ষার্থীদের ভোটের মাধ্যমে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি করে আসছি। কলেজের অধ্যক্ষ ও দলের র্শীর্ষ নেতাদের কাছে নির্বাচনের দাবি করে বরাবরেই আমরা ব্যর্থ হয়েছি। কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি লুৎফর রহমান দ্বীপ বলেন, ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আমরা লাগাতার কর্মসূচী দিতে বাধ্য হয়েছি।
অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সহযোগী সংগঠন গৌরনদী উপজেলা ও পৌর যুবদলের পাল্টাপাল্টি কমিটির পাল্টাপাল্টি কার্যালয় ও কর্মসূচী পালন নিয়ে এখানে প্রতিনিয়ত চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ১ জুন বিকেলে বরিশাল-১ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী সংস্কারপন্থি নেতা এম.জহির উদ্দিন স্বপনের গৌরনদীতে আগমন উপলক্ষে এখানে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে মুখে কালো কাপর বেঁধে মানববন্ধন, জুতা ও ঝাঁড়– নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান গ্রুপের সমর্থক যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। একইদিন সন্ধ্যায় ওই গ্রুপের সমর্থক ও উপজেলা ছাত্রদল নেতা অসীম গাজীর নেতৃত্বে উপজেলার পিঙ্গলাকাঠী বাজারে বসে সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপনের গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে (স্বপনকে) লাঞ্চিত করা হয়। হামলায় দু’জন আহতও হয়। এ ঘটনার পর পরই স্বপন গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছাড়িয়ে পরে। এ নিয়ে যেকোন সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথেই বড় ধরনের সংঘাতের আশংকা করছেন রাজনৈতিক বিষেজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আকন কুদ্দুসুর রহমান-ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান ও সাবেক এমপি সংস্কারপন্থি নেতা জহির উদ্দিন স্বপনের তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে গৌরনদীতে বিএনপির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামীলীগ সমর্থিত মহাজোট সরকারের আড়াই বছর গৌরনদীবাসী রাজনৈতিক ঝক্কি ঝামেলা মুক্ত ভাবে বসবাস করলেও আগামি দিনে দলের মধ্যেই গ্রুপিং সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। তারা দলের মধ্যকার গ্রুপিং সংঘাত সৃষ্টির পূর্বেই প্রতিরোধের জন্য উভয়দলের র্শীর্ষ নেতাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।