সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আবদুস সবুর এবার জোরপূর্বক বিল শিটে স্বাক্ষর করে বিল উত্তোলনের অপচেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে তিনি বিল উত্তোলনে বিল শিটের কাগজও ব্যাংকে জমা দিয়েছেন। এ কারনে মঙ্গলবার অধ্যক্ষের বরখাস্তের কপিসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বরিশাল নগরীর হেমায়েত উদ্দীন রোড শাখায় জমা দিয়েছেন। এর আগে গত শনিবার বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ ফিল্মী স্টাইলে সন্ত্রাসী কায়দায় ফয়রা ফাজিল মাদ্রাসায় হামলা করেছে। বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের সঙ্গে আসা আত্মীয় স্বজনদের মহড়ায় এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মাদ্রাসার শিক্ষকরা ছুটাছুটি শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তারা। এব্যাপারে নলছিটি থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর রাজ্জাক জানান বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়ার আগে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় এসে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তিনি মাদ্রাসায় এসে জোরপূর্বক শিক্ষকদের বিল শিটে স্বাক্ষর করে বিল উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে কাগজপত্র জমা দিয়েছে। এলাকাবাসীর সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোন মামলা নিস্পত্তি না হওয়া সত্বেও কি ভাবে মাদ্রসায় গিয়ে খাতায় স্বাক্ষর করলো।এটা সর্ম্পর্নরুপে অবৈধ। বহিস্কারকৃত অধ্যক্ষ কিভাবে বিল উত্তোলনের অপচেষ্টায় ব্যাংকে বিল শিট জমা দেয়। এজন্য তিনি অধ্যক্ষের কিরুদ্ধে বরখাস্তের কপি ও মামলার কপি ব্যাংকে জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের ফাজিল (ডিগ্রী) ও কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসাগুলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। ফয়রা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুস সবুরকে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়ের করা সরকারি গম আতœসাৎ মামলা, মাদ্রাসার অর্থ আতœসাৎ, অধ্যক্ষ হিসাবে অবৈধ নিয়োগ নিয়ে জজকোর্টে মামলা ,গভর্নিংবডির সিদ্ধান্তকে বারবার অগ্রাহ্য করা, মাদ্রাসায় যোগদানের পর ৬ বছর কোন হিসাব না দেয়া সহ সুনির্দিষ্ট বহু অভিযোগে ২০০৮ সালের ৮ অক্টোবর তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। ইবি‘র বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং এতে গভর্নিং বডির ৪জন এবং বিশ্বদ্যিালয়ের ১ জন প্রতিনিধি থাকবেন। বিধি মোতাবেক মাদ্রাসার গভনির্ং বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি চেয়ে ৩ বার চিঠি দেয়ার দেড় বছরের মাথায় তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মাদ্রাসায় পাঠানো হয়। প্রতিনিধি পাঠানোর ক্ষেত্রে সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ আগে থেকে প্রতিনিধিদলের ১ জন সদস্যের সাথে যোগাযোগ করেন। বিধি মোতাবেক ১ জন প্রতিনিধি পাঠানোর নিয়ম থাকা সত্বেও ৩ সদস্যের প্রতিনিধি মাদ্রাসা পরিদর্শনে যায়। তারা অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তের কারন সংক্রান্ত গভনিং বডির কাছে কিছু না জানতে চেয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আয়োজন করা দুপুরের খাবার খেয়ে কুষ্টিয়া চলে যান । অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান মোতাবেক গভনির্ংবডির ৪জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ১জন প্রতিনিধি মিলে বরখাস্তের বিষয়টি ন্যায় বিচারের স্বার্থে সুষ্ঠ তদন্ত করা প্রয়োজন ছিল। তা না করে বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী কুষ্টিয়া গিয়ে তদন্ত টিম দুই লাইনের একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তারা সভাপতিকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন। সুপারিশের আলোকে সভাপতিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এই অব্যাহতি আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করলে অব্যাহতি চিঠির কার্যকরিতা স্থগিত করে আদালত বিশ্বাবদ্যালয়ের ভিসির উপর রুলনিশি জারি করেন। সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ শিক্ষকদের হুমকি-দুমকি দিয়ে বলতে থাকেন এই তদন্ত রিপোর্ট করাতে তদন্তদলের ১ জনকে তার মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে। এখন তিনি তার আপন বেয়াই ঝালকাঠী মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে সভাপতি করে বানিয়ে নিয়ে আসবে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রুলের নিস্পত্তি না হবার আগেই সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের ইচ্ছা অনুযায়ি ৯ জুন বেয়াইকে সভাপতি করাতে সক্ষম হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নতুন সভাপতি নিয়োগের কোন চিঠি পায়নি।