দত্তক ব্যবসা – স্নেহ মমতা বা যত্ন নয় মুনাফাই যেখানে মুখ্য

সন্তানহীন দম্পতিদের অপরিমেয় চাহিদা এখন দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশু বেচাকেনার এক নির্মম বাজার সৃষ্টি হয়েছে। এ সম্পর্কে ব্রিটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত লরি পেনির লেখা প্রতিবেদনটি ভাষান্তর করেছেন নেয়ামুল হক।

নেপালের একটি গ্রামাঞ্চল থেকে পিতা-মাতাহারা ৬০০ শিশু উধাও হয়ে গেছে। ওই এলাকার স্বাস্থ্যবান প্রতিটি অনাথ শিশু ৫ হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। দালালরা এসে লেখাপড়া শেখানো ও রাজধানীতে উন্নততর জীবন নিশ্চিত করার লোভ দেখিয়ে এসব শিশুকে নিয়ে গেছে। তবে তাদের কেউই আর কোনো দিন ফিরে আসেনি বা হদিস মেলেনি।

২০০১ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাবা-মা জীবিত থাকা সত্ত্বেও কয়েকশ’ নেপালি শিশুকে অনাথ বা এতিম হিসেবে মিথ্যা তালিকাভুক্ত করা হয় এবং হাজার হাজার মাইল দূরের পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশের দম্পতিদের কাছে তাদের চড়া মূল্যে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শিশু স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান তেরে দাস হোমস জানিয়েছে, একজন বিধবা তার সাতটি সন্তানকে খাবার দিতে না পেরে শহরের একটি শিশুকেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। এদের মধ্যে তিনটি শিশুকে খুব দ্রুতই পশ্চিমা দেশের ধনী দম্পতিদের কাছে দত্তক হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তবে সেই বিধবা মায়ের মতামত ছাড়াই এই কাজটি করা হয়। সুনিতা নামে আরেক মহিলা জানিয়েছেন, শিশুকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ রুক্ষ্মস্বরে তাকে বলে দিয়েছে যে, তিনি আর কোনো দিনই তার সন্তানকে ফিরে পাবেন না। মহিলা পরে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, প্রতি বছর হাজার হাজার নবজাতক, শিশু ও কম বয়স্ক ছেলেমেয়ে বিশ্বের এক দেশ থেকে অন্য দেশে দত্তক হিসেবে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই প্রবণতা ২০০৪ সালের দিকে কিছুটা হ্রাস পেলেও ২০০৯ সালে এসে আবার বেড়ে যায়। ২০০৯ সাল পর্যন্তই এ সম্পর্কিত সর্বশেষ তথ্য পাওয়া গেছে। এ বছর দেখা গেছে, বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দত্তক গ্রহণকারী দেশ বিদেশ থেকে মোট ২৪ হাজার ৮৩৯টি শিশু দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একাই গ্রহণ করে প্রায় অর্ধেক বা ১২ হাজার ৭৫৩টি শিশু। ইতালিতে দত্তক হিসেবে গেছে ৩ হাজার ৯৬৪টি এবং স্পেন ও ফ্রান্স নিয়েছে ৩ হাজার করে। আর কানাডায় গিয়েছে ২ হাজার ১২২টি শিশু। তবে ব্রিটেনে বিদেশী শিশু দত্তক হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কিছু কড়াকড়ি থাকায় সে দেশে বিদেশ থেকে দত্তক শিশু যাওয়ার পরিমাণ খুবই কম।

নেপালে দত্তক প্রদান কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠীটি আসলে বৃহত্তর অর্থে শিশুপাচার চক্রেরই অংশ। পাচারকারী এই চক্রটি হুমলা ও জুমলা প্রদেশের গ্রামাঞ্চল থেকে অনাথ শিশু সংগ্রহ করে তাদের এনে সার্কাস দলের কাছে বিক্রি করে দেয়। তবে পাশ্চাত্যের সন্তানহীন স্বচ্ছল দম্পতিদের কাছে তাদের বিক্রি করা গেলে অর্থ অনেক বেশি পাওয়া যায় এবং পাচারকারীদের ঝোঁকও সেদিকেই বেশি থাকে। ২০০৭ সালের আগ পর্যন্ত দত্তক শিশু বিক্রি থেকে নেপালের রাজস্ব আয়ে বার্ষিক ২০ লাখ ডলার করে যোগ হতো। তবে ২০০৭ সালে বিষয়টি নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত শুরু হলে দত্তক শিশু বিক্রির প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়। তদন্তে দত্তক শিশু প্রেরণের নামে শিশু অপহরণ ও অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের বেশ কিছু ঘটনা ধরা পড়ে।

নেপালের মধ্যস্বত্বভোগী দুর্বৃত্তরা শিশু বেচাকেনাকে গরু-ছাগলের বেচাকেনার পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ফলে দেশটিতে আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার আইন মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এসব শিশুর প্রধান ক্রেতা হচ্ছে সুদূর পাশ্চাত্যের সন্তানহীন দম্পতিরা যারা একটি দত্তক শিশু পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। আর এ দত্তক বেচাকেনার প্রক্রিয়াটি খুবই সোজা। দত্তক শিশু পেতে আগ্রহী ইউরোপ কিংবা আমেরিকার স্বচ্ছল দম্পতিরা তাদের পছন্দসই কোনো দেশের সংশ্লিষ্ট দত্তক প্রদান সংস্থার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কিংবা নিজ দেশে সক্রিয় অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে প্রয়োজনীয় অর্থ জমা দেন। এর পরই দত্তক সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং যে শিশুটিকে দত্তক হিসেবে নিতে চান তার তথ্য সংবলিত কাগজপত্র তৈরি হয়ে যায়। তবে শিশুটি সম্পর্কিত ভুয়া কাগজপত্র খুব সহজেই তৈরি করা সম্ভব হয়। এ প্রক্রিয়ায় আরো কয়েক দফা অর্থ লেনদেন হয়ে যাওয়ার পর শিশুটি তার নতুন বাবা-মার সঙ্গে নতুন গন্তব্যে যাত্রা করে।

এসব দত্তক গ্রহণ কার্যক্রমের অধিকাংশই বৈধ এবং উপকারি। এর মাধ্যমে নতুন বাবা-মা সন্তান লাভের আনন্দ পায় এবং অনাথ একটি শিশুও খুঁজে পায় নতুন জীবনের দিশা। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার অন্য একটি দিকও আছে। এখানে দুর্নীতি এবং অন্যায় উপার্জনেরও ব্যাপক সুযোগ রয়ে গেছে। বিশেষত যেখানে আবেগের একটি আতিশয্য বিদ্যমান। একজন মানুষ কিংবা একটি দম্পতি যখন দত্তক হিসেবে একটি সন্তান পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তখন তারা সেটি পাওয়ার জন্য যে কোনো পরিমাণ অর্থ প্রদানে প্রস্ত্তত থাকেন। এমনই একটি মন্তব্য করেছেন চিল্ড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলিজ অ্যাক্রস বর্ডারসের এন্ডি এলভিন। টেরে ডেস হোমস জানিয়েছে, দত্তক প্রদান এবং গ্রহণকে ঘিরে যে কার্যক্রমটি প্রসার লাভ করেছে তার উদ্দেশ্য এখন যতটা না অনাথ শিশুদের স্বার্থ রক্ষা তার চেয়ে অনেক বেশি বাণিজ্যিক লাভালাভ। এ ব্যবসাটি এখন একটি বেচাবিক্রির বাজারে পরিণত হয়েছে। কারণ পাশ্চাত্য দেশগুলোতে দত্তক সন্তান গ্রহণে আগ্রহী যত পরিমাণ স্বচ্ছল দম্পতি রয়েছে সেই তুলনায় অনাথ শিশুর পরিমাণ অনেক কম। অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী দত্তক সন্তান পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি যুদ্ধ কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক শিশুই অসহায় এবং অনাথ হয়ে পড়া সত্ত্বেও সেসব শিশু চাহিদা মতো প্রয়োজনীয় দত্তক শিশুর সংখ্যা পূরণ করতে পারছে না। জাপানের সুনামির পর পশ্চিমা দেশগুলোর অনেকেই মুখিয়ে ছিল যে কবে এবং কী পরিমাণ পিতামাতাহীন সুনামি শিশু দত্তক হিসেবে গ্রহণ করার সুযোগ পাবে।

পাশ্চাত্যের দম্পতিরা নিজেদের দেশে অনেক অনাথ শিশু থাকা সত্ত্বেও বিদেশী শিশুদের দত্তক হিসেবে পেতেই বেশি আগ্রহী। এর অন্যতম কারণ হলো- নিজ দেশের লভ্য শিশুদের বয়স এবং পারিবারিক পরিচয় তাদের কাছে অনেক সময়ই পছন্দনীয় হয় না। তাছাড়া আইনগত কিছু কড়াকড়ি তো রয়েছেই। ইউক্রেনের একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে দত্তক শিশু নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত তেমন কড়াকড়ি নেই। তাছাড়া ইউক্রেনের শিশুরা পরিবার ও নতুন বাবা-মা সম্পর্কে খুবই সংবেদনশীল এবং সহানুভূতিসম্পন্ন হয়। তারা খুব সহজেই নতুন একটি পরিবারে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে। ওয়েবসাইটটির বক্তব্য পড়ে মনে হয়- এটি যেন নতুন এক ধরনের গৃহপালিত প্রাণী বিক্রির বিজ্ঞাপন।

চিল্ড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলিজ অ্যাক্রস বর্ডারসের এন্ডি এলভিন জানান, কম বয়স্ক শিশুকে দত্তক হিসেবে নেওয়ার চাহিদা মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গেছে। দম্পতিরা সাধারণত তিন বছরের কমবয়স্ক শিশুদেরই দত্তক নিতে বেশি আগ্রহী। তবে শিশুটি যদি এক বছরেরও কম বয়স্ক হয় তবে তো কথাই নেই। আর সেটিই হচ্ছে বড় একটি সমস্যা। আপনি যদি কোনো একটি অনাথকে দত্তক নিতে চান তো যুক্তরাষ্ট্রের অনাথ আশ্রমগুলোতে এখনো দত্তক নেওয়ার মতো ২৩ হাজার শিশু অপেক্ষা করছে। কিন্তু মুশকিল হলো এদের অধিকাংশেরই বয়স হচ্ছে ৫ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রে অত্যন্ত ধনী, শক্তিশালী ও সম্পদসম্পন্ন আন্তঃদেশীয় দত্তক গ্রহণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী একটি লবি সক্রিয় রয়েছে।

পৃথিবীতে দত্তক শিশু সরবরাহকারী দেশগুলোর শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটি ২০০৯ সালেই ৫ হাজার ৭৮টি শিশু দত্তক হিসেবে বিদেশে প্রেরণ করেছে। রাশিয়া পাঠিয়েছে ৪ হাজার ৩৯টি শিশু। একই সময়ে ইথিওপিয়া পাঠিয়েছে ৪ হাজার ৫৬৪টি শিশু। দেশটিতে দত্তক শিশু প্রেরণ আইনের তেমন কোনো কড়াকড়িই নেই। ভিয়েতনাম এবং গুয়াতেমালাও দত্তক হিসেবে বিদেশে শিশু প্রেরণ করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়েও ইথিওপিয়া দৈনিক ৫০টি করে অনাথ শিশু দত্তক হিসেবে বিদেশে প্রেরণ করেছে। তবে মার্চ থেকে এ ক্ষেত্রে একটি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কেউই বলতে পারছে না দত্তক শিশু সংগ্রাহক সংস্থা এবং দত্তক সন্তান পেতে মরিয়া হয়ে ওঠা দম্পতিরা অনাথ শিশু পাওয়ার জন্য এরপর কোন দেশটির দিকে নজর দেবে।

দত্তক গ্রহণকারী দম্পতিরা যতই বিশ্বস্ত এবং স্নেহপ্রবণ হোক না কেন এসব শিশুর মানবাধিকার রক্ষিত হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করার দায়িত্ব দত্তক প্রদান ও গ্রহণ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওপরই বর্তায়। যেসব শিশু ইতোমধ্যেই দত্তক হিসেবে গৃহীত হয়েছে তারাই যে কেবল ঝুঁকিতে আছে তা নয়, যেসব শিশু ভবিষ্যতে দত্তক হিসেবে গৃহীত হবে তাদের জন্যও ঝুঁকি অপেক্ষা করছে।

কোরীয় যুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিতভাবেই অনাকাঙ্ক্ষিত কোরিয়ান শিশুদের পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এটি বাবা-মাহীন কিংবা পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নামে চালু করা হয়েছিল। কোরিয়ার অধিকাংশ ‘‘এতিম’’ শিশু আসলে অবিবাহিত মা কিংবা অতিদরিদ্র মায়েদের সন্তান। এসব শিশু এখন নিজ দেশেই লালিত-পালিত হওয়ার ক্ষেত্রে কোরীয় সংস্কৃতি কোনো বাধা নয়। কিন্তু তারপরও অনাথ শিশুদের দত্তক হিসেবে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ থাকার কারণেই কেবল এরা দেশান্তরিত হচ্ছে। তাছাড়া এসব শিশু নিজ দেশে লালিত-পালিত হওয়ার পরিবেশ গড়ে ওঠার পথে দত্তক শিশু আদান-প্রদানের সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও বাধা সৃষ্টি করে থাকে। সরাসরি কেনাবেচার মাধ্যমে দত্তক শিশু আদান-প্রদান বন্ধে একটি আন্তর্জাতিক আইন থাকলেও তা খুব একটা কার্যকর নয়। আন্তঃরাষ্ট্রীয় দত্তক গ্রহণ সংক্রান্ত ১৯৯৩ সালের হেগ ঘোষণায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ৮১টি সদস্য রাষ্ট্রের স্বাক্ষর থাকা সত্ত্বেও শিশু নির্যাতন ও শিশুপাচার বন্ধ হয়নি।

ইউনিসেফ বলছে, হেগে প্রণীত আইনটির পদ্ধতিগত দুর্বলতার কারণেই শিশু বিক্রি, শিশু অপহরণ, জন্মদাতা বাবা-মায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ, শিশু সংক্রান্ত কাগজপত্রের জালিয়াতি এবং ঘুষ প্রদানের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। দুর্বলতার একটি দিক হলো- হেগ ঘোষণায় স্বাক্ষরদানকারী কোনো কোনো দেশ স্বাক্ষরদান করেনি এমন দেশ থেকে দত্তক শিশু সংগ্রহ করছে। এমনকি ঘোষণায় স্বাক্ষরদানকারী দেশগুলোতেও শিশু নির্যাতন ও শিশুপাচারের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে এবং এ ঘটনা বন্ধে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো সরাসরি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। যেই চীন এই ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে সেই চীনেও অনাথ শিশুদের অবস্থা খুব একটা ভালো নেই বলে জানা গেছে। হেগ ঘোষণা শিশু বেচাকেনার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জনও বন্ধ করতে পারেনি।

ইউনিসেফ, রেডক্রস, টেরে ডেসহোমস এবং সেভ দ্য চিল্ড্রেনের মতো সংস্থাগুলো বলছে, যেসব দেশ বিদেশ থেকে অনাথ শিশুদের দত্তক হিসেবে নিয়ে আসে, দত্তক হিসেবে আসা শিশুগুলোর স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করার দায়িত্বও সেসব দেশের ওপরই বর্তায়। বিশ্বব্যাপী বাবা-মাহীন হাজার হাজার শিশু পড়ে রয়েছে। তারা দত্তক হিসেবে গৃহীত হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের যদি কোনো সংবেদনশীল ও মায়া-মমতাপূর্ণ পরিসরে দত্তক হিসেবে রাখা যায় তো তাতে দোষের কিছুই নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, দত্তক শিশু লেনদেনের সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই কাজটিকে অবৈধ অর্থ উপার্জনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। সুতরাং এ সংক্রান্ত হেগ ঘোষণাকে শক্তিশালী করতে হবে যাতে দত্তক শিশু আদান-প্রদানের ব্যাপারটি দয়াপরবশ কোনো আদমপাচার কার্যক্রমে পর্যবসিত না হয়। [সাপ্তাহিক বুধবার থেকে]