ইচ্ছামাফিক দরে ওষুধ বিক্রি ॥ প্রতারিত হচ্ছে জনতা

শাহীন হাসান, বরিশালঃ নগরীতে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকানে সয়লাব হয়ে গেছে। ব্যাঙের ছাতার মত উঠছে নিত্য নতুন অবৈধ ফার্মেসী, এরই অন্তরালে বিকিকিনি করছে ওরা উঠতি বয়সী যুবকদের কাছে বিভিন্ন ধরনের মাদক মরফিন, প্যাথেডিন সহ নেশা জাতীয়ও কাশির সিরাপ ও ঘুমের ট্যাবলেট। এই মাদক সেবন করে সেবনকরে ছিনতাই, রাহাজানি, চুরি, ডাকাতি, ইভটিজিং সহ নানা ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে এক শ্রেনীর সিন্ডিকেট। একদিকে যেমন এদের কারণে যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে অমনিভাবে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। নগরীর একাধিক এলাকার বেশ কিছু ওষুধের দোকানে ড্রাগ লাইসেন্স নেই। ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন দোকানের মধ্যে অধিক সংখ্যক নগরীর সাগরদী, রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এবং শেবাচিম হাসপাতালের সামনে সহ নগরীর ছোট্ট গলিগুলোতে। এদের মধ্যে বেশ কিছু আছে বগুড়া রোড, হাসপাতাল রোড, চৌমাথা বাজার, কাটপট্টি, বালুর মাঠ বস্তি এলাকায়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা শুধু রাজস্বই সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে তাই নয়; সাথে সাথে ওরা মেতে উঠেছে নিম্নমানের কোম্পানীর ওষুধ বিক্রিতে। সুচতুর এসব ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে ডেট এক্সপেয়ার ওষুধ। বিক্রিতেও দ্বিধা করে না। এ কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা বলতে রোগী মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত। এই অসাধু ব্যবসায়ীরা বিশেষ করে গরিব অশিক্ষিত রোগী পেলেই মহাখুশি হয়। কারণ এদেরকে ধরিয়ে দেয় মেয়াদোত্তীর্ণ এবং নিম্ন মানের ওষুধ। রোগীরা ফার্মেসীতে ওষুধ কিনতে গেলেই এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এক ধরনের প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে। কখনোবা ডাক্তার সাজতে গিয়ে এই হাতুড়ে ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায় প্রাণ হারানোর রেকর্ড রয়েছে বরিশালে। ফার্মাসিটাল নামক ওষুধ কোম্পানীটিকে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও ফার্মাসিটাল এর ওষুধ বিক্রি হচ্ছে হরহামেশাই। অভিযোগ রয়েছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা ফার্মেসীতে বসে থাকে রোগীদের ঠকানেরার ধান্ধায়। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আসা রোগীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, এমন ওষুধ ব্যবসায়ী আছে তাদের ফার্মেসীতে গেলে ডাক্তারের লেখা ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ দেয় না। লাভের আশায় পাল্টে যেসব ওষুধ দেয় তার সাথে ব্যবস্থাপত্রের মিল থাকে না। আবার কোন কোন ফার্মেসী ব্যবসায়ীরা রোগীদের ধরিয়ে দেয় ভারত থেকে আসা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। এসবের মধ্যে রয়েছে, সিপ্রোফোক্সসিন এমোক্সাসিলিন ও টিটেনাস ইনজেকশন। এগুলো সাধারণত হাতে কেটে বিক্রি করে। রোগীদের ভারতীয় মেয়াদোত্তীর্ণ নিম্নমানের টিটেনাস ইনজেকশন পুশ করে একশত টাকা থেকে একশত বিশ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। এতে করে ফার্মেসী ওয়ালাদের একশ টাকার অধিক ব্যবসা থাকে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। ওরা ইনজেকশন পুশ করার সাথে সাথে এ্যাম্পুলটি তড়িঘড়ি করে ফেলে দেয়, কেউ দেখার আগে। জীবন নিয়ে খেলা এসব অনিয়মের বিষয়ে ওষুধ প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন নগরীর সচেতন মহল। আর কালবিলম্ব নয়, এখন থেকেই পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবি জানান অসাধু লাইসেন্স বিহীন এসব ওষুধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।