অবশেষে ক্ষমা চাইলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হেরি কে টমাস

মতিউর রহমান লিটুঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত হেরি কে টমাস বর্তমানে ফিলিপিনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত আছেন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত 'শিশুদের প্রতি যৌন অত্যাচার রোধে করনীয়' বিষয় নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মার্কিন এই রাষ্ট্রদূত হেরি কে টমাস। আলোচনা সভায় বক্তারা যৌন অত্যাচারের হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন।

"পর্যটকদের শতকরা ৪০ ভাগ পুরুষ ফিলিপিনে আসেন তাদের যৌন কামনা মেটাতে", মার্কিন রাষ্ট্রদূত হেরি কে টমাস গত মাসে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে এমন মন্তব্য করায় প্রতিবাদের ঝর ওঠে সমগ্র ফিলিপিনে । সরকারীভাবে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন মার্কিন এই রাষ্ট্রদূত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত হেরি কে টমাস ফিলিপিনে আগত যে সকল বিদেশী পর্যটক শিশুদের যৌন নির্যাতন করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের কঠোর শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে ফিলিপিনো সরকারকে অনুরোধ করেন। শিশুদের যৌন অত্যাচার সকল দেশের আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কোন মার্কিন নাগরিকও যদি এমন ঘৃণ্য অপরাধে জড়িত থাকেন তাকেও শাস্তি পেতে হবে বলে জানান। তবে তিনি তাঁর বক্তব্যের এক পর্যায়ে কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়াই বলেন, ফিলিপিনে আগত বিদেশী পর্যটকদের শতকরা ৪০ ভাগ আসেন তাদের যৌন কামনা মেটাতে, আর তাই এই সকল পর্যটকদের দ্বারা শিশু নির্যাতন হয়ে থাকতে পারে বলে উল্লেখ করেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এমন মন্তব্যে সমগ্র ফিলিপিনব্যাপি তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়, প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝর বয়ে যায়। তাদের মতে ফিলিপিন একটি দ্রুত উন্নয়ন মুখী দেশ, পরিশ্রমী জনগণের অক্লান্ত চেষ্টায় দিনের পর দিন বদলে যাচ্ছে দেশটির চেহারা। ফিলিপিন সম্পর্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এমন মন্তব্য দেশটিকে পৃথিবীর বুকে যৌণস্বর্গ হিসেবে পরিচিতি দেবে যেটা জাতির জন্য অপমানজনক। তাই তারা এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন।

অবশেষে আজ ৮ই অক্টোবর রাষ্ট্রদূত হেরী কে টমাস তাঁর এমন বক্তব্যের জন্য ফিলিপিনো জনগণের কাছে গভীরভাবে দুখ প্রকাশ করেছেন। ম্যানিলায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে নিউইয়র্ক থেকে বার্তাসংস্থা পিবিসি জানিয়েছে।