ঢাকা মহানগরীর রাস্তার সংস্কার ও হাঁটার উপযোগীর দাবিতে মানববন্ধন

মুহাম্মাদ রিয়াজ উদ্দিনঃ ঢাকা মহানগরীর অধিকাংশ রাস্তাই ভাঙ্গাচোরা খাল-খন্দ ও বেহাল অবস্থা এবং নানা অব্যবস্থাপনার কারণে বর্তমানে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। একইভাবে ফুটপাতগুলো সরু হওয়ায় এবং বিভিন্নভাবে দখল, ময়লা আবর্জনা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নাগারিক দুর্ভোগ লাঘবে অবিলম্বে মহানগরীর সকল ছোট বড় রাস্তার মানসম্মত সংস্কার এবং ফুটপাতগুলো পথচারীবান্ধব করে গড়ে তোলা জরুরি। গতকাল বুধবার সকাল ১১:০০ টায় নগর ভবনের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোল (পবা) এবং নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানবন্ধন থেকে উপরোক্ত দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন শেষে মেয়র বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। মেয়রের অনুপস্থিতিতে তার স্টাফ অফিসার স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

নাসফের সভাপতি ও পবার সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়নার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবিনা নাঈম, নাসফের সাধারণ সম্পাদক ইশরাত জাহান বেবী, সহ-সভাপতি সেলিনা মসির, হাজী মো: শাহজাহান লালু, উপদেষ্টা মেজর হুদা, সহ-সাধারণ সম্পাদক ২৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি আলহাজ্ব মো: কামাল উদ্দিন, সদস্য শেফালী আকন্দ, মো: সেলিম, রিক এর কোর্ডিনেটর এস এম এ মুয়িদ, মডার্ণ ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাত, সেইভ দ্যা হিউম্যানিটির ভাইস চেয়ারম্যান ক্যামেলিয়া চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পবার প্রোগ্রাম অফিসার আতিক মোর্শেদ। আবু নাসের খান বলেন জনদুর্ভোগ লাঘবে রাজধানীর রাস্তার সংস্কার ও স্বাচ্ছন্দে হেঁটে চলাচলের জন্য ফুটপাতগুলোর অতিসত্বর সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

বক্তারা বলেন ঢাকার রাস্তাগুলো বর্ষা মৌসুমে মেরামতের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া নগরের সেবাপ্রদানকারী বিভিন্ন স্ংস্থা যেমন ডিসিসি, ডেসা, ওয়াসা, টিএন্ডটির সারা বছরব্যাপী সমন্বয়হীন খোড়াখুড়ি নগরবাসীকে বিষিয়ে তুলে। এর উপর একটু বৃষ্টি হলেই স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা সচল না থাকায় রাস্তায় পানি জমে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যার কারণে কখনো কখনো গাড়িতে পানি ঢুকে বিকল হয়ে  পড়ে, গাড়ির ফিটনেস মেয়াদ কমে যায় এবং খাদে পড়ে রিক্সা, ভ্যান, ট্যাক্সি, সিএনজি উল্টে যাচ্ছে। শীতকালে এসব রাস্তায় আবার শুরু হয় ধুলার তান্ডব। রাস্তা ভাল না থাকায় গাড়ির গতি কমছে, এর বিপরীতে বাড়ছে জ্বালানি খরচ, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ ও ধুলা দূষণ। এতে শারীরিক ক্লেশের পাশাপাশি বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তাচাড়া রাজধানীতে প্রায় ১৬৩ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে, তার ১৫০ কিলোমিটার ফুটপাতই বেদখল হয়ে আছে বিভিন্ন দখলবাজদের কব্জায়। এমন কি আইল্যান্ডেও দোকানের পসরা বসতে দেখা যায়। ফুটপাতে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী রেখে ও ময়লা আর্বজনা ফেলে ফুটপাত বন্ধ করে ফেলা হচ্ছে। রাস্তায় পাশে যেসব বাণিজ্যিক দোকান রয়েছে অধিকাংশ দোকানের সামনের জায়গায় এমনভাবে কর্মকান্ড পরিচালনা করে যে, কোন পথচারী সে ফুটপাত ব্যবহার করতে স্বচ্ছন্দ ও নিরাপদ বোধ করে না। বিভিন্ন মেগাসপ ও স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে পার্কিং এর মহোৎসব দেখা যায়। এ সব ফুটপাত দিয়ে পথচারী যাতায়াতের কোন উপায় থাকে না। রাস্তায় যানজটের কারণে এখন ফুটপাত দিয়ে হোন্ডা সহ ছোট ছোট যান্ত্রিক যান চলাচল করে এবং অহরহ ছোট ছোট দূর্ঘটনার চিত্র বক্তারা তুলে ধরেন।