মুলাদীর নিহত সাংবাদিক মনিরের ভাই ও বোনকে হত্যার চেষ্টায় বাড়ীতে হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালঃ মুলাদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেনের পরিবারের আশংকা সত্য প্রমান করল হত্যাকারীরা ও তাদের রক্ষক উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মালেক রাড়ী। হত্যাকারী ও মালেক রাড়ীর নির্দেশে নিহত মনিরের পরিবারের উপর হামলা করেছে।

একদল সশস্থ সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে নিহত মনিরের ভাই ও বোনকে আহত করেছে। তারা হলেন- মনিরের ছোট ভাই ফিরোজ রাড়ী ও বোন পপি আক্তার। তারা মুলাদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে মনির হোসেনের স্ত্রী সেবিকা হামিদা বেগম জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেন্ডডেন্টের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। মামলা করার কথা বলেছেন হামিদা বেগম।

গত সোমবার বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক মাইনুল হাসান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে হামিদা বেগম আশংকা প্রকাশ করে অভিযোগ করেছিলেন,মালেক রাড়ী ও হত্যাকারী আলাউদ্দিন রাড়ী এবং অন্য আসামীরা  মনির হোসেনের পরিবারের সদস্যরকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দেয়া ছাড়াও বাড়ি থেকে হাত পা ভেঙ্গে তাড়িয়ে দিবে। এমনকি তাকে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে।

এই আশংকার ২৪ ঘন্টা পর হওয়ার পূর্বেই মঙ্গলবার সকালে হত্যাকারী আলাউদ্দিন রাড়ীর ভাগিনা রিয়াজ ও শহীদ বেপারীর নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি সশস্থ সন্ত্রাসীর দল মনিরের বাড়ীতে হামলা করে।

তাদের এলাপাতারী ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ফিরোজ ও পপি আহত হয়েছে। মনিরের পরিবারের ডাক চিৎকারে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে আহত দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুজ্জামান বলেন, মামলার বিসয়টি প্রক্রিয়াধীন। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে তথ্য পেলে আসামী করা হবে। তখন তার নাম প্রকাশ করা হবে।

গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে হামিদা বেগম লিখিত বক্তব্যর মাধ্যমে অভিযোগ করেন, আব্দুল মালেক রাড়ী দম্ভোক্তির সাথে বলেছে বরিশালের বিচারকদের ৫ হাজার টাকায়, সাংবাদিক ও পুলিশকে ৫শ’ টাকায় কেনা যায়। ৬ মাসের মধ্যে মামলার নথিরও হদিস থাকবে না। এই রকম ১০ মনির হত্যা করলেও তার কোন সমস্যা হবে না।

মনির হত্যা মামলার ১ ও নং আসামী মোতালেব রাড়ী ও রাড়ী আতœসমর্পনের ১৪ দিনের মাথায় জেল থেকে জামিনে বের হওয়ার পর এরকম দম্ভোক্তি করেছে বলে জানিয়েছেন হামিদা বেগম।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ তার কথায় উঠে বসে। সাংবাদিক, পুলিশ ও বিচারক তার পকেটে থাকে। এই মামলায় কোন কিছুই হবে না। তাই স্বামী মনির হোসেন হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিচারক, সাংবাদিক, পুলিশসহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন হামিদা বেগম।

মনির হোসেনের দুই সন্তান মিনহা জামান এশা ও হত্যার পর জন্ম নেয়া ছেলে মুসাব ইবনে মনিরকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে জানিয়ে হামিদা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দুই আসামীকে জামিনে মুক্ত করে হৈ-হুল্লোড় করে বাড়ীতে এসে মালেক রাড়ী এই হুমকি দেয়ার ঘটনায় থানায় সাধারন ডায়েরী (যার নং ১১০৬, মুলাদী থানা, তারিখ ৩০.১০.১১ ইং) করা হয়েছে বলেন হামিদা বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে মনির হোসেনের ছেলে ও কন্যাসহ বড় ভাই মহিউদ্দিন আহম্মেদ মোশারেফ রাড়ী, ছোট বাই জাকির হোসাইন, তার স্ত্রী রাশিদা বেগম, ভগ্নি পতি ইসমাইল মাষ্টার, মোঃ জিলাম মৃর্ধা ও বোন সামসুন্নাহার রুবি উপস্থিত ছিলো।

এদিকে,  এই হামলার ঘটনার পর উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ডা. আব্দুর রহিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেন্ডডেন্ট মোঃ মুজাহিদুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করা হয়। তারা তাৎক্ষনিক হামলাকারীদের ধরতে ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।