কোটিপতি সান্টুর দেশ ত্যাগ

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ বার বার হেরে যাওয়া ওয়ান ইলেভেন সরকারের দোষড় বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য বরিশালের আলোচিত কোটিপতি এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু দীর্ঘ দিন ধরে দলের নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করে অল্পের ব্যাবধানে নিকটতম পরাজিত প্রতিদ্বন্দি হন সান্টু। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগদান করে  বিএনপির টিকিটে বরিশাল-২(উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও হেরে যান তিনি।

জনপ্রতিনিধিত্বের বাসনা পুরনে  একের পর এক ধকল খেতে হয়েছে তাকে । যে কারনে রাজনীতিতে এসে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি আলোচিত সান্টু। তাছাড়া বরিশাল বিএনপির কোন পদ পদবীও বাগিয়ে নিতে পুরো পুরি ব্যার্থ হয়েছেন তিনি। স্বভাবতই বারবার হোচট খেয়ে প্রচন্ড মনক্ষুব্দ হয়েই দেশ ত্যাগ করেছেন আলোচিত সান্টু। তবে বরিশাল বাসী তাকে এখনও শ্রদ্ধাভরে স্নরন করে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে তার মনগলানো উক্তি মনে করে। কিন্তু তার সেই প্রবাদটি কেবল নির্বাচনের পূর্বে মসজিদ ও কয়েকটি মন্দির নিমার্নের মধ্যেই আটকা পরে রয়েছে। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তিনি বরিশালবাসীকে অদ্যবদি কিছুই উপহার দেননি। ফলে অনেকেরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে তবে সব কিছুর পেছনে কি শুধু নির্বাচনই মূখ্য কারন? মেয়র নির্বাচন চলাকালীন সময় তার স্টিকাট সম্নলিত প্রবাটি ছিল  “কাফনেরতো কোন পকেট নেই, যে আমি টাক-পয়সা নিয়ে যাব” বরিশাল বাসী তার সে প্রবাদটিকে সরল বিশ্বাষে গ্রহন করে তাকে বিপুল পরিমান ভোট দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেন সান্টু নির্বাচনে মেয়রও নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু সে সময়কার আ’লীগের মনোনীত মেয়র  প্রার্থী ছল-ছাতুরি বা ভোট কারচুপির মাধ্যমে তার বিজয়ীর মুকুট কেরে নিয়েছেন। অবশ্য এ কারনে সান্টু একটি মামলাও করেছেন।

সর্ব শেষে বরিশাল জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার মনবাসনা নিয়ে কেন্দ্রে বিপুল অর্থ ব্যায় করেও কোন ফল আসেনি তার পক্ষে । জেলা সভাপতি হন আহসান হাবিব কামাল ও সাধারন সম্পাদক হন বিলকিস আক্তার শিরিন । এসব ব্যার্থতা মাথায় নিয়েই সরফুদ্দিন সান্টু ফের ফিরে গেছেন তার পুরোনো ব্যাবসা গোছাতে দেশের বাইরে এমনটিই বলছেন সান্টুর বেশ কয়েক ঘনিষ্ট জন । তাদের মতে রাজনীতির পথে হাটা তার জন্য সমিচিন হয়নি এটা বুঝতে পেরেই সটকে পরেছেন সান্টু । দুঃখে আর বেদনা নিয়ে বেশ কয়েক মাস আগ থেকে বরিশালে আসাও বন্ধ করে দেন তিনি । একই সঙ্গে নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন রাখেন। তার ব্যাক্তিগত সেল ফোনের নাম্বারও রয়েছে বন্ধ। রাজনৈতিক কর্মকান্ডও রয়েছে নিরব। সরফুদ্দীন সান্টু দেশের বাইরে থাকলে কবে দেশে ফিরবেন এরকম প্রশ্ন করলে তার ব্যাক্তিগত সহকারী সেলিম জানান, ভাই বিদেশে রয়েছেন। কোথায় আছেন নিশ্চিত করে সান্টুর একান্ত সহকারী বলেননি। তিনি কবে ফিরবেন তাও বলতে নারাজ সেলিম। যদিও সর্বশেষ একান্ত সহকারীকে জানিয়েছিল যে সে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সরফুদ্দিন সান্টুর ছোট ভাই নিপু জানান, ভাই অনেক দিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। আগামী ঈদুল আযহায় (কোরবানী) দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

একটি সূত্র বলছে সান্টুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েক কোটি টাকার কর ফাকির বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। এ কারনে তিনি দেশে ফিরছেন না। কর বিষয়ে জটিলতা শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছে সূত্রটি।