কলাপাড়ার আলোচিত বিয়ের বর ও বরের ফুফু সাময়িক বরখাস্ত

উম্মে রুম্মান, বরিশাল ॥ বিয়ের আসরে বরের যৌতুক দাবীর প্রেক্ষিতে কনের তালাকের ঘটনায়  বর কলাপাড়ার উত্তর চাকামইয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শওকত আলী হিরন ও তার ফুফু নীলগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানমকে চাকুরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের স্বাক্ষরিত ১৫ নবেম্বরের এক চিঠিতে বরখাস্তের আদেশ দেন। যার স্মারক নম্বর-জেপ্রাশিঅ/পটুয়া/২০১১/২৬০০। কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন শুক্রবার দুপুরে এই আদেশের কপি সাংবাদিকদের দেখান। এর কপি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বাড়িতে একই দিনে পৌছে দিয়েছেন বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ১৩ নবেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বিয়েতে যৌতুক দাবি করে আপনার (হিরনকে) ফুফু টিভি, ফ্রিজ ও মোটর সাইকেল দাবি করেন যাতে আপনার সমর্থন ছিল। পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তার চিঠিতে উল্লেখ করেন সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ১৯৮৫ এর ২ এর এফ বিধিমালা পরিপন্থী কার্যকলাপের জন্য আপনাদের সাময়িকভাবে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা হলো।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) শাহা জামাল সোমবার পটুয়াখালী জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা  আবদুল কাদেরকে দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিলে পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল কাদের সোমবার সকাল থেকে রাত অবধি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে কলাপাড়ায় তদন্ত  করেন। এসময় থানায় করা জিডি’র কপি, লিখিত বক্তব্য, ভিডিও ফুটেজ, স্থির চিত্রসহ বর-কনে উভয় পক্ষের লিখিত বক্তব্য সংগ্রহ করেন। একই দিনে ঘটক মোতালেবের লিখিত স্বাক্ষ্য নেয়া হয়।

উল্লেখ্য বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামের আব্দুল খলিলুর রহমানের মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিনের সঙ্গে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মাদ্রাসা সড়কের বাসিন্দা ডাঃ শাহআলম খানের ছেলে শওকত আলী হিরনের বিয়ে হয় ১১ নবেম্বর ১১ টা ১১ মিনিটে। একই দিন বিকালে কনের বাড়িতে বরযাত্রী যায় বর হিরনসহ তার স্বজনেরা। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনে বিদায়ের সময় যৌতুক যাওয়ার অভিযোগ এনে কনে বর হিরনকে তালাক দেয়। বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এদিকে বর হিরন বিষয়টি সাজানো নাটক এবং বানোয়াট দাবি করে ১৪ নবেম্বর রাতে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন তুচ্ছ ঘটনা নেইল পলিশ রিমুভার নিয়ে কনের দুলাভাইয়ের সঙ্গে তার ফুফুর ঝগড়া হয়। একই দাবিতে ১৫ নবেম্বর হিরনের স্বপক্ষে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। অপরদিকে আমতলী উপজেলায় কনে ফারজানা ইয়াসমিন নিপার স্বপক্ষে হিরন ও তার ফুফু তহমিনা খানমের শাস্তি দাবি জানিয়ে এনজিও সংস্থা এনএসএস এর উদ্যোগে ১৬ নবেম্বর মানববন্ধন করা হয়।

সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া  চিঠির ব্যাপারে  প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানম জানান, শুক্রবার বিকেলে  এ চিঠি পেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মিথ্যা অপবাদের কাছে হেরে গেছেন । প্রধান শিক্ষক শওকত আলী হিরন  জনান, তিনি ঢাকা থেকে কলাপাড়ায় ফিরতেছেন এখন পর্যন্ত চিঠি হাতে পাইনি।